কুস্তিতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী বিল্লালের আক্ষেপ

বিল্লাল হোসেন২০ বছর বয়সে প্রথমবার কুস্তির সঙ্গে পরিচয় বিল্লাল হোসেনের, সেটা ১৯৯৮ সালের কথা। জাতীয় মঞ্চে প্রথমবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নামেন ২০০৪ সালে। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এই কুস্তিগীরকে। এখন তার বয়স ৪০, এই বয়সেও ম্যাটে তিনি ধরে রেখেছেন শ্রেষ্ঠত্ব। সবচেয়ে বড় কথা এখন পর্যন্ত জাতীয় কোনও ইভেন্টে হার নেই তার।

মঙ্গলবার জাতীয় কুস্তির ৩৪তম আসরেও প্রথম ম্যাচে জিতলেন দাপট দেখিয়ে। অপ্রতিদ্বন্দ্বী এই কুস্তিগীরের অর্জনের ঝুলিতে আছে ১০টি স্বর্ণপদক। এবার ১১তম স্বর্ণপদক তার গলায় ঝোলার প্রত্যাশা থাকাই স্বাভাবিক।

৮৪, ১২০ ও ৯৭ কেজি ওজন শ্রেণিতে মূলত খেলেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের এই কুস্তিগীর। বর্তমানে খেলছেন ৯৭ কেজিতে। শুধু যে ঘরোয়া আসরে পদক জিতেছেন, তা নয়। আন্তর্জাতিক মঞ্চেও আছে তার পদক। ২০০৬ সালে কলম্বোয় এসএ গেমসে প্রথমবার ব্রোঞ্জ জেতেন, পরের দুটি আসরেও ওই সাফল্য ধরে রাখেন। এছাড়া পাকিস্তানের কায়েদে আযম ট্রফি ও এশিয়ান রেসলিংয়েও সাফল্য পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় শীর্ষ সাফল্য না পাওয়ার কারণ! বাংলা ট্রিবিউনকে বিল্লাল বলেন, ‘উন্নত প্রশিক্ষণের অভাবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে স্বর্ণ জিততে পারিনি।’

দেশের বাইরে কুস্তিতে সাফল্য পেতে হলে বর্তমান প্রজন্মের কুস্তিগীরদের আরও একাগ্রতা দরকার বলেন তিনি। ক্যারিয়ারের শেষ দিকে এসে আক্ষেপ ঝরলো বিল্লালের কণ্ঠে, ‘যখন খেলা সামনে আসে, তখন মেডেলের জন্য সবাই পাগল হয়ে যায়। এভাবে আসলে উন্নতি করা সম্ভব না। আমাদের নানা সমস্যা লেগেই আছে। যে কারণে দেশের বাইরে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসছে না। উন্নতমানের সুবিধা কিংবা বিদেশি কোচ তো নেই-ই।’

ক্যারিয়ারের শুরুতে কুস্তিকে যেই অবস্থানে দেখেছিলেন, সেটা এখন আর নেই বলেন এই কুস্তিগীর, ‘আমার ক্যারিয়ারের শুরুতে কুস্তিতে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ভারত ও পাকিস্তানের পরে। এখন শ্রীলঙ্কারও নিচে নেমে গেছি। কুস্তি এখন অনেক আধুনিক হয়ে গেছে। আর বাংলাদেশের কুস্তি পিছিয়ে গেছে। খেলোয়াড় নেই তেমন। এর কোনও ভবিষ্যৎ নেই। সার্ভিসেস দল না থাকলে খেলোয়াড়ই খুঁজে পাওয়া যেত না।’

আর কখনও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ম্যাটে দেখা যাবে না বিল্লালকে। তবে দেশের কুস্তিতে লড়াই করে যাবেন তিনি আরও কয়েক বছর। আন্তর্জাতিক মঞ্চকে বিদায়ের ঘোষণা দিলেন তিনি, ‘আমি আর জাতীয় দলে খেলব না, কারণটা বলতে চাইছি না। তবে ইচ্ছা আছে ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় আরও এক-দুই বছর খেলব।’