বয়স তার কাছে ‘শুধুই সংখ্যা’, ৫৬ বছর বয়সেও কী দাপট!

এই বয়সে তার থাকার কথা কোচ কিংবা সংগঠক হিসেবে। কিন্তু ৫৬ বছর বয়স জাকির হোসেনের কাছে ‘শুধুই সংখ্যা’। এই বয়সেও তরুণদের সঙ্গে সমানতালে লড়ে যাচ্ছেন। এমনকি চলমান বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমসে তায়কোয়ান্দো পুমসে ইভেন্টে জিতেছেন ব্রোঞ্জ পদকও! বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখানো জাকির চান আমৃত্যু খেলা চালিয়ে যেতে।

দিনাজপুরের সদরে বাড়ি জাকির হোসেনের। পেশায় শিক্ষক। ২০০১ সালে সেখানে তায়কোয়ান্দো ক্লাব গঠনের পর খেলাটির প্রতি আগ্রহ বাড়ে। একপর্যায়ে নিজেই যোগাযোগ করেন। আস্তে আস্তে রপ্ত করে নেন খেলাটির কলাকৌশল। তারপর ২০১১ সালে প্রথম জাতীয় তায়কোয়ান্দো চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেন। আর এবার খেলেছেন বাংলাদেশ গেমসে। নেমেই জিতেছেন ব্রোঞ্জ পদক।

তবে এই সাফল্য সামনের দিকেও ধরে রাখতে চান জাকির, ‘এই বয়সে খেলার পেছনে সবার সহযোগিতা পাচ্ছি। যতদিন বাঁচবো খেলার মধ্যেই থাকতে চাই। বয়স আমার কাছে আসলে কিছু না। যতদিন সুস্থ থাকবো, ততদিন খেলা চালিয়ে যাব। না খেলতে পারলে ভালো থাকতে পারবো না।’

অনুপ্রেরণা হিসেবে নিচ্ছেন বিদেশি এক বর্ষীয়ান জিমন্যাস্টের। যদিও তার নাম মনে করতে পারেননি তিনি, ‘অনেকদিন আগে একটা ভিডিও দেখেছিলাম। ৯০-এর ওপরে বয়স হবে সেই মহিলা জিমন্যাস্টের। দেখেছি তাকে জিমন্যাস্টিকসের ওপর কলাকৌশল প্রদর্শন করতে। তা দেখে আরও বেশি অনুপ্রাণিত হয়েছি। তিনি যদি পারেন, তাহলে আমি কেন পারবো না। আসলে বয়সটা কোনও বাধা নয়। মনের জোরের সঙ্গে শরীর সুস্থ থাকলে বয়স কোনও বাধা নয়।’

তায়কোয়ান্দো খেলে ৫৬ বছর বয়সী ক্রীড়াবিদ অনেক উপকৃত হয়েছে। সেটা কীভাবে? জানালেন, ‘তায়কোয়ান্দো খেলে সুস্থ, সবল ও নিরোগ আছি। নিয়মিত অনুশীলন করছি। মাঝে অনুশীলন না করার কারণে ওজন ৬৬ থেকে ৮২ কেজিতে এসেছিল। তবে দুই বছর ধরে নিয়মিত অনুশীলন করে আবারও ৬৬ কেজিতে নামিয়ে এনেছি ওজন।’

অধিক বয়সে খেলার কারণে অবশ্য অন্যদের কাছ থেকে প্রশংসাও কুড়াচ্ছেন তিনি। স্কুলের ছাত্র থেকে শুরু করে পরিচিত সবাই তাকে বাহবা দিচ্ছেন। আলাদাভাবে সম্মানও করছেন। তাকে দেখেই অনেক ছাত্র তায়কোয়ান্দোতে আসছেন।