দেশের ক্রীড়াঙ্গনে যে দুরবস্থা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন আর্চার রোমান সানা। পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এবার দেশে আর্চারি খেলে কোনও চাকরি না পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে থিতু হয়েছেন আরেক আর্চার অসীম কুমার দাস! গ্রিনকার্ড পেয়ে সেখানেই ভাগ্যের কাছে নিজেকে সঁপে দিয়েছেন তিনি।
অথচ নেপালে এসএ গেমসে সোনা জিতেছিলেন এই আর্চার। এই পদক জিতে দেশের সুনাম বয়ে আনলেও ভাগ্য বিড়ম্বিতই থাকলেন। কম্পাউন্ডে বিভাগেও রয়েছে আরও পদক। সেই অসীম দেশে হন্যে হয়ে চাকরি না পেয়ে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
নিউইয়র্কে কুরিয়ার সার্ভিসে চাকরি করছেন অসীম। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক আর্চার খেলাটা ছেড়েই দিয়েছেন। তাই আর্চারি নিয়ে আফসোস আছে তার হৃদয়ে, ‘কী করবো আমি তো খেলতে চেয়েছিলাম। হন্যে হয়ে চাকরি খুঁজেও পাইনি। জীবন তো আগে চালাতে হবে। পরিবারকে দেখতে হবে। আর্চারি খেলে তো জীবনধারণ করা বেশ কঠিন। এক রোমান সানার দিকে দেখুন। তার কী অবস্থা।’
কুড়িগ্রামের অস্বচ্ছল কৃষক পরিবার থেকে উঠে আসা খেলোয়াড় অসীম ২০২১ সালের নভেম্বরে বিশ্ব আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। ওই সুবাদে তার পাসপোর্টে ৫ বছরের ভিসা ছিল। পরবর্তীতে সেখানে যাওয়ার সুযোগটাও মিলে যায়।
তবে সামনের দিকে সুযোগ পেলে আর্চারি নিয়ে কাজ করার আগ্রহটা জানিয়ে রেখেছেন অসীম, ‘নিউইয়র্কে আর্চারি নিয়ে কাজ করার সুযোগ কম। অন্য প্রদেশে আছে। যদি সুযোগ পাই তাহলে আর্চারি নিয়ে কাজ করবো। সেটা খেলোয়াড় কিংবা কোচ হয়ে। আর্চারি আমার রক্তে মিশে আছে। সেটা ভুলি কী করে।’
এরপরই আর্জি জানিয়ে রেখেছেন এভাবে, ‘দেশের অবহেলিত খেলোয়াড়দের দিকে আসলে দৃষ্টি দেওয়া উচিত। যারা দেশের হয়ে আন্তর্জাতিকভাবে পদক নিয়ে আসছে। তাদের আলাদা করে মূল্যায়ন করা উচিত। যেন তারা দেশে ঠিকভাবে খেলে জীবন-সংসার চালাতে পারে। তাদের কাউকে যেন আমার মতো বিদেশ বিভূ্ঁইয়ে যেতে না হয়।’