বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন

আরও সময় চায় মোবাইলফোন অপারেটরগুলো, সিদ্ধান্ত শনিবার

সিম পুনঃনিবন্ধনবায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ) পদ্ধতিতে মোবাইলফোনের সিম নিবন্ধনের জন্য সরকারের কাছে আরও সময় চায় মোবাইলফোন অপারেটরগুলো। এ লক্ষ্যে অপারেটরগুলো সময় বাড়ানোর আবেদনও করেছে। এদিকে, ৩০ এপ্রিলের পর সময় বাড়ছে কিনা, সে বিষয়ে আগামী শনিবার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হতে পারে। এই বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হলে,  ওইদিন ঘোষণাও আসবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম জানিয়েছিলেন, তিনি সিম নিবন্ধনের জন্য ৩০ এপ্রিলের পরে আর সময় বাড়াতে চান না। ওই সময়ের মধ্যে যারা সিম নিবন্ধন করতে না পারবেন, তাদের সিম মে মাসের এক তারিখে ৩ ঘণ্টা, পরের দিন একই পরিমাণ সময়—এভাবে আরও কিছু সময়ের জন্য সিম বন্ধ রাখা হবে। যা হবে মোবাইলফোন ব্যবহারকারীদের জন্য সতর্কবার্তা। এরপরও যারা সিম নিবন্ধন করবেন না, তাদের সিম একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও তারা হালিম জানিয়েছিলেন।
আরও পড়তে পারেন: রাজধানীতে ৫৭ লাখ টাকার জাল নোট জব্দ, গ্রেফতার ৭

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তারানা হালিম সাংবাদিকদের বলেন, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল সিম নিবন্ধনের সময় সীমা শেষ হচ্ছে ৩০ এপ্রিল। তবে, এদিন  রাত ১০টা পর্যন্ত সিম নিবন্ধন করা যাবে। এই সময় পর্যন্ত খুচরা সিম বিক্রেতাদের (সিম নিন্ধনকারী) প্রতিষ্ঠান এবং ৫১৪টি আঞ্চলিক এনআইডি অফিস খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি মে মাসের ১ তারিখ থেকে তিন ঘণ্টা করে সিম বন্ধ রাখার কথা বললেও ঠিক কোন সময়ে বন্ধ রাখা হবে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি। তবে, তিনি জানান, এরই মধ্যে ৭ কোটি ৭৯ লাখ সিমের নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১ কোটি ২১ সিমের নিবন্ধন করতে পারেননি ব্যবহারকারীরা। যারা এই সিম নিবন্ধন করতে পারেননি, তাদের আঙুলের ছাপ এনআইডি ডাটাবেজের সঙ্গে মেলেনি বলে জানা গেছে। তাদের ব্যাপারে তারানা হালিম বলেন, আমরা ধরে নিয়েছি, তারা জেনুইন। আসলেই তারা সিম নিবন্ধন করতে এসেছিলেন। তাদের ব্যাপারে কিছু করার এখনও সুযোগ রয়েছে আমাদের।

অন্যদিকে, মোবাইলফোন অপারেটরগুলো সরকারের কাছে সিম নিবন্ধনের সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অপারেটরগুলোর সংগঠন অ্যামটবের মহাসচিব টিআইএম নুরুল কবির বলেন, মোবাইলফোন ব্যবহারকারীরা সরকারের ঘোষণায় সাড়া দিয়ে উৎসাহ, উদ্দীপনার সঙ্গে সিম নিবন্ধন করতে এসেছেন। আমাদের আশঙ্কা ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে সিম নিবন্ধন শেষ হবে না। মোবাইল গ্রাহকের নিরাপত্তা ও আইডেন্টিটি নিশ্চিত করতে সিম নিবন্ধনের সময় বৃদ্ধির জন্য সরকারের উদ্যোগ নেওয়া উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

আরও পড়তে পারেন: ‘অনিবন্ধিত সিম ১ মে ৩ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে’

এক প্রশ্নের জবাবে নুরুল কবির বলেন, আমরা (অপারেটররা) সরকারের কাছে কোনও নির্দিষ্ট সময় চাইনি। আমরা সরকারের কাছে যৌক্তিক ও সঙ্গত সময় বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছি। এখন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে এবং বিটিআরসি আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করবে ৩০ এপ্রিলের পরে কী হবে।

দেশে বর্তমানে মোবাইলফোনের ব্যবহারকারী রয়েছেন ১৩ কোটি ৯ লাখ। গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন শুরু হয়েছে। সারাদেশে ১ লাখ ডিভাইসের মাধ্যমে এই নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এর আগে সচিবালয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি টেলিটকের একটি নতুন সিম কিনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সেটি নিবন্ধন করেন। এরপর থেকে নতুন সিম কিনতেও বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে কিনতে হয়। পুরনো সিম নতুন করে নিবন্ধন (ভেরিফিকেশন) করিয়ে নিতে হচ্ছে এর ব্যবহারকারীদের।

/এমএনএইচ/