অনলাইনে কেন নয়

হিটলার এ. হালিম

দেশে অনলাইন গণমাধ্যম চালু হলে তা আমাকে বেশ আকর্ষণ করেছিল, মুগ্ধও। গণমাধ্যমের নতুন যাত্রায় একাধিকবার যোগ দিতে গিয়েও পিছিয়ে গিয়েছিলাম, প্রিন্ট ছেড়ে অনলাইনে যাব? শুরুতে মন ঠিক সায় দেয়নি। সকালে ঘুম থেকে উঠে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে ছাপার অক্ষরে নিজের নাম দেখব, এ ধারণাতেই বুঁদ ছিলাম।

মাথার ভেতর একটা বিষয় বারবার ঘুরপাক খেত, দেশে যে কোটি কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী, আগামীদিনে আরও বাড়বে এ সংখ্যা, তাহলে অনলাইনে কেন নয়? তবে যেসব অফার ওই সময় পাচ্ছিলাম, তা ঠিক মনমতো হচ্ছিল না।

একদিন ডাক পেলাম বাংলা ট্রিবিউন থেকে। খোঁজ নিয়ে জানলাম হাউজ ভালো, হাউজের ব্যাকগ্রাউন্ড ভালো। রাসেল ভাইয়ের (জুলফিকার রাসেল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক) সঙ্গে কথা হলো। সোজা সাপটা কথার মানুষ। সরাসরি কথা বললেন। জানিয়ে দিলেন কী চান। ফলে সিদ্ধান্ত নেওয়াটাও সহজ হলো। দ্বিতীয়বার না ভেবেই যোগ দিলাম বাংলা ট্রিবিউনে।

বাংলা ট্রিবিউন নতুন অনলাইন, আমিও অনলাইনে নতুন। সামনে তখন নতুন চ্যালেঞ্জ, পারব তো! ভরসা ছিল প্রিন্ট মিডিয়ায় এক যুগ কাজের অভিজ্ঞতা। অনলাইনে কাজ করতে গিয়ে কিছু সমস্যার মুখোমুখি যে হতে হয়নি তা নয়, সে সবকে ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে নিয়ে কাজ শুরু করলাম। কবে যে দু’বছর পেরিয়ে গেছে বুঝিনি।

টেক-টক

তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ খাত নিয়ে কাজ করার সুবাদে আগে থেকেই সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে পরিচয়, যোগাযোগ ছিল। ফলে কাজ করতে গিয়ে কোনও সমস্যা হয়নি। সবার সহযোগিতা পেয়েছি, সাড়াও পেয়েছি। সংবাদকর্মী হিসেবে এক যুগের অভিজ্ঞতা হলো, ছাপা পত্রিকায় কোনও সংবাদ প্রকাশিত হলে যে প্রতিক্রিয়া পেয়েছি, তার চেয়ে বেশি প্রতিক্রিয়া পেয়েছি, পাচ্ছি বাংলা ট্রিবিউনে সংবাদ প্রকাশের পর। 

গত বছরের একটা ঘটনা। বংলা ট্রিবিউনের টেক অ্যান্ড গ্যাজেটস’র ‘টেকটক’ বিভাগের ইন্টারভিউ বেশ জনপ্রিয়। তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ও উদ্যোক্তাদের একের পর এক ইন্টারভিউ প্রকাশিত হচ্ছে। একদিন মোবাইলফোনে কল এলো, ‘হিটলার, আমি কি তোমার বিভাগে ইন্টারভিউ দেওয়ার এখনও যোগ্যতা অর্জন করিনি?’ দেশের নামকরা একজন তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তা, তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠনের নেতাও ছিলেন তিনি। পরবর্তী সময়ে তার ইন্টারভিউ প্রকাশিত হলে তিনি বলেছিলেন, আমি অপেক্ষায় ছিলাম কবে আমার দিন আসবে।

১০ মে, সকালের ঘটনা। ফোন করলেন আমাদের গ্রাম প্রকল্পের পরিচালক রেজা সেলিম ভাই। বলেন, বাংলা ট্রিবিউনের তো বিশাল ক্ষমতা। একটা লেখা প্রকাশ হতেই দেখি আমার সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেল। তিনি বললেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার দুটি ল্যান্ডফোন নষ্ট ছিল। কোথাও যোগাযোগ করে সমাধান পাচ্ছিলাম না। ৯ তারিখ রাতে লেখাটা (টেলিখাতে এই অবস্থা কেন?) প্রকাশিত হলো। সকালেই দেখি ল্যান্ডফোন দুটি ঠিক হয়ে গেছে। টেলিটক ও গ্রামীণফোন থেকে ফোন করে বিরাজমান সমস্যার সমাধান করা হবে বলে দুঃখ প্রকাশও করলেন তারা।

এক লেখাতেই এতকিছু!

/এইচএএইচ/

অারও পড়তে পারেন: অনলাইন গণমাধ্যমের পরিধি ব্যাপক