জন্মান্ধতা ঠেকাতে অনলাইনে জনসচেতনতামূলক উদ্যোগ

চোখের ভেতরটা এমনইজন্মান্ধতাকে অনেকে কপালের লিখন ধরে নিলেও এই সমস্যা জন্মের পরপরই সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে সারিয়ে তোলা সম্ভব। জন্মের সময় রেটিনোপ্যাথি অব প্রিম্যাচুওরিটিতে আক্রান্ত হওয়ায় (আরওপি) অনেকেই স্থায়ীভাবে তাদের দৃষ্টিশক্তি হারান। যারা পরবর্তীতে জন্মান্ধ হিসেবে পরিচিতি পান। তবে দ্রুততম সময়ে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
মূলত নির্দিষ্ট সময়ের আগে যেসব শিশু জন্ম নেয় তাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিশেষ করে ৩৫ সপ্তাহের আগেই যারা জন্ম নেয় অথবা ওজন ২ কেজির কম কিংবা যাদের এ দু’টি সমস্যাই থাকে তাদের আরওপিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। ফলে কোনও শিশুর ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা হলে তাকে দ্রুত ডাক্তার দেখাতে হবে। অন্যথায় আজীবনের জন্য সে দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারে।
আরওপি হলো রেটিনার গঠনগত অপরিপক্বতা। যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে মারাত্মক একটি অসুখ হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। এই রোগে আক্রান্ত শিশুকে ৩০ দিনের মধ্যে চিকিৎসা না করালে সে সারা জীবনের জন্য অন্ধ হয়ে যায়। অবশ্য নির্দিষ্ট সময়ের আগে জন্মালে কিংবা ওজন কম হলেই যে শিশুর এমন রোগ হবে, তা নয়। তবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ উপযুক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া এই রোগ নির্ণয় করা সম্ভব নয়।
এতো ভয়াবহ একটি রোগ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে আরওপির বিষয়ে তেমন সচেতনতা দেখা যায় না। তাই বিষয়টির ওপর গুরত্ব দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাদের পরামর্শ, বর্তমানে বিশাল সংখ্যক মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। এদেরকে অনলাইনের বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থাৎ ডিজিটাল উপায়ে সচেতন করার চেষ্টা করাই হবে কার্যকর একটি পদ্ধতি।
বিষয়টি সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী বলেন, সবাইকে রোগটি সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে। বিশেষ করে ডাক্তারদের এদিকটাতে আরও বেশি নজর দেওয়া প্রয়োজন। আমি কয়েকদিন আগে ডক্টোরোলা ডট কম আয়োজিত ফেসবুকে লাইভ অনুষ্ঠানে আরওপি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এভাবে চিকিৎসকরা যদি নিজ নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসেন এবং গণমাধ্যমকর্মীরা আমাদের সহযোগিতা করেন, তাহলে দেশে এই সংখ্যা কমে আসবে।