গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত আইএসপি অ্যাসোসিয়েশনের

‘ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস  অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ’ (আইএসপিএবি) মূল্য সংযোজন কর সংক্রান্ত নতুন সরকারি বিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের মূল্য হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, এর মাধ্যমে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হলেও সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে গ্রহক পর্যায়ে  ইন্টারনেটের মূল্য কমানো হবে। আইএসপিগুলোর আর্থিক ক্ষতির বিষয়টি সরকারের নজরে আনা হয়েছে। আইএসপিএবি আশা করে, মূসক বিধি সংশোধন করে সরকার তাদের ব্যবসায়িক সুবিধা নিশ্চিতে ভূমিকা রাখবে।ispablogosm20171026202749

১৮ জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ইন্টারনেট খাতের জন্য প্রযোজ্য মূল্য সংযোজন কর কাঠামো সংশোধন করে প্রজ্ঞাপন (এস,আর,ও নং-২০৪-আইন/২০১৮/৮০৭-মূসক) জারি করে। সংশোধিত নিয়মে ব্রডব্যান্ড ক্রয়ে ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশ এবং গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবায় ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর আরোপের বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু ইন্টারনেট ট্রান্সমিশন (এনটিটিএন) চার্জের ক্ষেত্রে আগের মতো ১৫ শতাংশ মূসকই বহাল রাখা হয়। এ পরিবর্তনের ফলে আইএসপিগুলো আগে ব্যান্ডউইডথ কেনা এবং ট্রান্সমিশন চার্জে যে ১৫ শতাংশ হারে মূসক রেয়াত পেত তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে অকার্যকর হয়ে যায়। তারপরও আইএসপিএবি মনে করে, স্বল্পমূল্যে সবার কাছে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়ার সরকারি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সমর্থন প্রদান করাই বর্তমান পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি জরুরি। তাই সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী গ্রাহক পর্যায়ে সংশোধিত হারে মূসক আরোপের মাধ্যমে তুলনামূলক কম মূল্যে গ্রাহকদের ইন্টারনেট সেবা প্রদান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে তারা। সংস্থাটির পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, খুব শীঘ্রই ইন্টারনেট সেবা গ্রহীতারা তাদের মাসিক ইন্টারনেট বিলে হ্রাসকৃত হারে আরোপিত মূসকের সুফল লক্ষ্য করতে পারবেন।

গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যয় কমানোর উদ্দেশ্য নিয়ে সরকার কর্তৃক মূসকের হার হ্রাসের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে আইএসপিএবি বলেছে, ‘সংশোধিত মূসক বিধির সাথে সামঞ্জস্য রেখে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের মূল্য কমানোর ক্ষেত্রে আইএসপিগুলো সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। মূলত ব্যান্ডউইডথ ট্রান্সমিশনে (এনটিটিএন) আগের মতো ১৫ শতাংশ হারে মূসক বজায় থাকায় এবং রেয়াতের বিধান অকার্যকর হয়ে যাওয়ায় ব্যান্ডউইডথ ট্রান্সমিশন ব্যয় আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণত একটি আইএসপির মোট পরিচালন ব্যয়ের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশই যায় ব্যান্ডউইডথ ট্রান্সমিশনে। ফলে ট্রান্সমিশন চার্জের এই ব্যয় বৃদ্ধির প্রভাবে মোট পরিচালন ব্যয়ও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাচ্ছে। এই একটি মাত্র কারণে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের মূল্য হ্রাস, এমন কি বর্তমান মূল্য বজায় রাখাও আইএসপিগুলোর জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান অবস্থায়, শুধুমাত্র আর্থিক ক্ষতি স্বীকার করে নিলেই একটি আইএসপির পক্ষে গ্রাহকদের আগের চেয়ে চেয়ে কম মূল্য বা আগের মূল্যের সমান মূল্যে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা সম্ভব।’

সংস্থার পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তারা তাদের আপত্তির বিষয়টি তুলে ধরে বোর্ডের পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা কামনা করেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তাদেরকে এ সংক্রান্ত মূসক বিধি পুনর্বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছে। প্রত্যাশিত সংশোধন কার্যকরের বিষয়টি এখনও আশ্বাসের বিষয় হয়ে থাকলেও আইএসপিএবি সব সদস্য আইএসপিকে হ্রাসকৃত মূসক অনুযায়ী গ্রাহকদের বিল প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে অনুরোধ জানিয়েছে।