উইকিমিডিয়ায় উন্মুক্ত হলো নেলসন ম্যান্ডেলার ডায়েরি

নেলসন ম্যান্ডেলা (ছবি-ইন্টারনেট থেকে)

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়াত সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার হাতের লেখা ১৯৬২ সালের একটি ডায়েরি এবার যুক্ত হলো উইকিমিডিয়া কমন্সে। উন্মুক্ত লাইসেন্সে যুক্ত হওয়ার ফলে এখন থেকে যে কেউ চাইলে ম্যান্ডেলার হাতে লেখা এ ডায়েরির চিঠিগুলো কপিরাইট মুক্ত হিসেবে সহজে পড়তে ও ব্যবহার করতে পারবেন। দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে অনুষ্ঠিত উন্মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ার বার্ষিক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন ২১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। যৌথভাবে এ ঘোষণা দেয় চলতি বছরের উইকিম্যানিয়ার আয়োজক উইকিমিডিয়া দক্ষিণ আফ্রিকা ও নেলসন ম্যান্ডেলা ফাউন্ডেশন। ৮৭ পৃষ্ঠার হাতে লেখা ম্যান্ডেলার নানা বিষয় রয়েছে ডায়েরিতে। ১৮ জুলাই ম্যান্ডেলার ১০০তম জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া সম্মেলনের প্রথম দিনে গুরুত্বপূর্ণ নানা সেশনের পাশাপাশি বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় উইকিপিডিয়া এশিয়ান দেশগুলোর উইকিপিডিয়া সম্পাদকদের বিশেষ আলোচনা। এতে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী এশিয়ার বিভিন্ন দেশের উইকিপিডিয়া সম্পাদকরা যোগ দেন। সভায় ২০২০ সালে বাংলাদেশে উইকিমিডিয়া দক্ষিণ এশিয়া সম্মেলন আয়োজনের ব্যাপারে আলোচনা হয়।

উইকিম্যানিয়ায় অংশ নেওয়া বাংলাদেশের উইকিপিডিয়া সম্পাদকেরা

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে উইকিমিডিয়া গবেষণা নিয়ে বিশেষ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার উইকিপিডিয়ার নানা বিষয় তুলে ধরা হয়। এছাড়া উইকি উইমেন, ইন্টেলেকচ্যুয়াল প্রপার্টি এবং জিএলএএম বিষয়ে একাধিক সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। চলতি বছর উইকিম্যানিয়ায় অফলাইনে কীভাবে উইকিপিডিয়া ব্যবহার করা যায় সে বিষয়ে একটি চুক্তি অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এবং অফলাইনে নানা ধরনের কনটেন্ট ব্যবহারের সুবিধা প্রদানকারী কিউইক্সের সঙ্গে এ চুক্তির ফলে ইন্টারনেট ছাড়াও উইকিপিডিয়া ব্যবহার করা যাবে।

এছাড়া উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালনা পর্ষদ সদস্য এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক উদ্যোগ উইকিমিডিয়া ম্যাড প্রকল্পের অন্যতম সদস্য ডা. জেমস বাংলাদেশকে সহজে ইন্টারনেট ছাড়া উইকিপিডিয়া ব্যবহারের জন্য নিজের তৈরি ‘ইন্টারনেট ইন এ বক্স’ উপহার দিয়েছেন। এ যন্ত্রের সাহায্যে ইন্টারনেট ছাড়াই উইকিপিডিয়া ব্যবহার করা যাবে।

বাংলা উইকিপিডিয়ায় কাজ করা বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সদস্যরা

বিভিন্ন ধরনের লাইব্রেরির সঙ্গে সহজে উইকিপিডিয়া যুক্ত করার বিষয় নিয়েও অনুষ্ঠিত হয়েছে একাধিক সেশন। উইকিপিডিয়া লাইব্রেরির গ্লোবাল সমন্বয়ক ফেলিক্স নিউট্রি বলেন, উইকিপিডিয়ানদের সহযোগিতা করতে সারাবিশ্বের নানা লাইব্রেরির সঙ্গে কাজ করছি আমরা। বাংলাদেশে উইকিপিডিয়া লাইব্রেরি প্রকল্প চালুর বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার কথাও জানান তিনি।

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বিকেলে উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিন মাহের ‘উইকিমিডিয়া অ্যান্ড দ্য স্পিরিট অব উবুন্টু: দ্য পাওয়ার অব ইউনিটি এন অ্যাকশন’ শীর্ষক বিশেষ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এছাড়া বাংলা উইকিপিডিয়ায় কাজ করা বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের উইকিপিডিয়া সম্পাদকদেরও বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২২ জুলাই সম্মেলনের শেষ দিনে নানা ধরনের সেশনের পাশাপাশি উইকিপিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা জিমি ওয়েলসের বিশেষ উপস্থাপনার পাশাপাশি চলতি বছরের উইকিমিডিয়ান অব দ্য ইয়ার ঘোষণা করা হবে।