কলড্রপের বিষয়ে মোবাইল অপারেটরগুলোর কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে বিটিআরসি





মোবাইলে ভয়েস কল

সম্প্রতি মোবাইল ফোনে কলড্রপের (কথা বলার সময় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া) হার বাড়ার জেরে গ্রাহক অসন্তুষ্টির বিষয়টি আমলে নিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। সোমবার (২২ অক্টোবর) কমিশন দেশের সব মোবাইল ফোন অপারেটরের কাছে চিঠি পাঠিয়ে কলড্রপের বিদ্যমান অবস্থা এবং এ-সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তার ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছে। মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর প্রধান নির্বাহীদের আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে এ ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গ্রামীণফোনের কলড্রপ নিয়ে গতকাল রবিবার (২১ অক্টোবর) জাতীয় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। সংসদের পয়েন্ট অব অর্ডারে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘এটা হতে পারে না, এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। একবার কথা বলতে চার/পাঁচ বার কল করতে হয়।’ এই কলড্রপের ঘটনা যাতে না ঘটে, বাণিজ্যমন্ত্রী সেজন্য টেলিযোগাযোগমন্ত্রীকে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘ইদানীং লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, আমরা যারা গ্রামীণফোন ব্যবহার করি, প্রত্যেকটি কলে কলড্রপ হয়। একেকটি কলে তিন-চার-পাঁচ বার ড্রপ হয়। এজন্য বার বার কল করতে হয়। এ ব্যাপারে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষের কাছে আমি অনুরোধও করেছি। এটা কেমন ধরনের কথা! আমরা গুরুত্বপূর্ণ একটি কল করছি, হঠাৎ কলটি ড্রপ করলো। বিদেশে কল করছি তা ড্রপ করলো। আমাদের রোমিং টেলিফোন আছে। দেশের বাইরে যাই। সেখানে যদি একটি কল ড্রপ করে আবারও কল করতে হয়।’
গ্রাহকের কলড্রপের অভিযোগ অনেক পুরনো। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ফোর-জি চালু হওয়ার পর থেকে তা আরও বেড়েছে। সরকার, নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে বার বার বলার পরও এর কোনও উন্নতি হয়নি।
তবে অপারেটরগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের কলড্রপের হার দুই শতাংশের নিচে, যা আইটিইউয়ের (ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন) স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ঠিক আছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী সংসদে ক্ষোভ প্রকাশের পরদিনই বিটিআরসি বিষয়টি নিয়ে অপারেটরগুলোকে চিঠি দিলো।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিক সময়ে মোবাইল অপারেটরদের কলড্রপ সংক্রান্ত অভিযোগ অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে চলমান জাতীয় সংসদেও আলোচনা হয়েছে। দিন দিন টেলিযোগাযোগ সেবার মান নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সেবার মান নিয়ন্ত্রণ বর্তমানে বিটিআরসির একটি অগ্রাধিকারযোগ্য কার্যক্রম। বিটিআরসি ইতোমধ্যে ড্রাইভ টেস্টের মাধ্যমে বিভিন্ন অপারেটরের সেবার মান নিয়মিত পরিমাপ করছে। গ্রাহক স্বার্থের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কলড্রপের পরিমাণ বিটিআরসি কর্তৃক নির্ধারিত সীমার (দুই শতাংশ) মধ্যে থাকা আবশ্যক। অপারেটরদের দাখিল করা মাসিক রিপোর্টে তাদের কলড্রপ নির্ধারিত সীমার মধ্যেই আছে দাবি করলেও সম্প্রতি এ বিষয়ে গ্রাহক পর্যায়ে অনেক অভিযোগ আছে। এছাড়া কোনও কোনও অপারেটরের নেটওয়ার্কে একটি কলে চার থেকে পাঁচ বার কল ড্রপ হয় বলে অভিযোগ রয়েছে, যা বাস্তবসম্মত নয়।’