আফ্রিকায় যে ফোনের কাছে হার মেনেছে আইফোন

ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় একটি টেকনো মোবাইলের দোকানচীনের অন্যতম শীর্ষ স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেকনো আফ্রিকা মাতাচ্ছে। অ্যাপলের আইফোনকেও পেছনে ফেলেছে। বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে, আফ্রিকার সবচেয়ে জনপ্রিয় স্মার্টফোন টেকনো। এটা মূলত ট্রানশানের ফ্ল্যাগশিপ ব্র্যান্ড।
আফ্রিকার লাগোস, নাইরোবি, আদ্দিস আবাবাসহ বিভিন্ন শহরের ব্যস্ত রাস্তার পাশে শুধু একটি ছবিই দেখা যায়। এটা হলো নীল রঙয়ের টেকনো ফোনের চিহ্ন সম্বলিত স্টোর। চীনে টেকনোর একটি স্টোরও নেই। এর হেডকোয়ার্টার দেশটির শেনজেনে। যদিও অন্যান্য বিখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের অফিসের কারণে টেকনোর অফিস খুব বেশি নজরে আসে না।
সফলতা পাওয়ার জন্য হুয়াওয়ে ও শাওমির চেয়ে ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছে এই স্মার্টফোন ব্র্যান্ডটি। মূলত সেই কৌশলের অংশই হলো আফ্রিকার বাজার দখল করা। এখনও পর্যন্ত চীনে ব্যবসা করার কোনও পরিকল্পনাই নেই প্রতিষ্ঠানটির।
ট্রানশানের প্রতিষ্ঠাতা জর্জ জু প্রায় এক দশক ধরে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ ঘুরেছেন অন্য একটি মোবাইল কোম্পানির সেলস হেড হিসেবে। তখন তিনি বুঝতে পারেন, উন্নত দেশে যে ফোন বিক্রি করা হয় সেগুলো আফ্রিকার জন্য উপযুক্ত নয়।
২০০০ সালের শুরুতে চীন সরকার ‘গোয়িং আউট’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নেয়। এতে দেশের বাইরে বিশেষ করে আফ্রিকায় ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য চীনাদের সহায়তা প্রদান করা হয়। ওই সুযোগ নিয়েই টেকনো চালু করেন জু।

২০০৬ সালে নাইজেরিয়ায় টেকনো উন্মুক্ত করেন জু। এটা আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল দেশ। এ কারণেই এই দেশকে প্রাথমিক লক্ষ্য হিসেবে ধরা হয়। প্রথমে টেকনোর স্লোগান ছিল, ‘থিঙ্ক গ্লোবাল, অ্যাক্ট লোকাল’। এর মানে হলো আফ্রিকানদের চাহিদামতো পণ্য সরবরাহ করা।

আফ্রিকার বাইরে অন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও ব্যবসা সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে টেকনো। এর মধ্যে রয়েছে ভারত, বাংলাদেশ এবং ইন্দোনেশিয়ার বাজার। ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) তথ্য বলছে, ২০১৭ সালে ভারতে টেকনো যাত্রা শুরুর পর বর্তমানে মোট বাজারের ৫ শতাংশ দখল করেছে ব্র্যান্ডটি। এছাড়া বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়াতেও বাজার বড় হচ্ছে।