প্রতিবন্ধীদের জন্য সফটওয়্যার তৈরি করছে সরকার

মোস্তাফা জব্বার (ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত)ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ভিন্নভাবে সক্ষম মানুষদের প্রতিবন্ধীত্ব দূরীকরণে বাংলা ভাষাভিত্তিক তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সেবা নিশ্চিত করতে সফটওয়্যার তৈরি করছে সরকার। এই সফট্‌ওয়্যারের মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক কিন্তু বলতে বা শুনতে অসমর্থ এমন ব্যক্তিরা উপকার পাবেন।
মন্ত্রী (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর কাওরান বাজারের জনতা টাওয়ার সফটওয়ার টেকনোলজি পার্কের সভাকক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পের আওতায় প্রতিবন্ধীদের জন্য সফটওয়্যার উন্নয়ন বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে কর্মশালায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব  জুয়েনা আজিজ, গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ শীর্ষক প্রকল্পের পরিচালক মো: জিয়া উদ্দিন বক্তব্য রাখেন।
মন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর প্রায় ৩৫ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। আমাদের জাতীয় ভাষা বাংলা। আমরা বাংলা ভাষার নেতৃত্ব দিচ্ছি। তাই আমাদেরকে বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের উপযোগী সফট্ওয়্যার তৈরি করতে হবে। তিনি কর্মশালায়
অংশীজনদের প্রাপ্ত মতামতের ভিত্তিতে ভিন্নভাবে সক্ষম মানুষের ব্যবহারের উপযোগী সফট্‌ওয়্যার তৈরি করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য, সাইন ল্যাংগুয়েজ, মুখভঙ্গি বা জেসচারকে ইউনিকোড টেক্সটে রূপান্তর এবং তা থেকে অটোমেটিক স্পিচ জেনারেট করা। এর মাধ্যমে প্রতিবন্ধীরা একটি মোবাইল ফোনের ক্যামেরার সামনে বাংলা সাইন ল্যাংগুয়েজ প্রদর্শন করবে অর্থাৎ তার হাত, হাতের আঙুল, মুখমণ্ডলের নড়াচড়ার মাধ্যমে সাইন ল্যাংগুয়েজ প্রদর্শন করবে, মোবাইলের অ্যাপ এই সাইনকে রিকগনাইজ করবে এবং তাকে বাংলা ইউনিকোড টেক্সট হিসেবে প্রদর্শন করবে, একই সঙ্গে এই টেক্সট থেকে বাংলা স্পিচ জেনারেট হবে। এর নাম হবে ‘অটোমেটিক রিয়েল টাইম বাংলা সাইন-জেসচার ডিটেকশন অ্যান্ড টেক্সট-স্পিচ জেনারেশন সিস্টেম। এই সিস্টেমটি নির্দিষ্ট কোনও ডিভাইস নির্ভর হবে না। সাধারণ অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল বা সমতুল্য ডিভাইস দিয়ে এই কাজ করা যাবে। এই সিস্টেম মোশন ইমেজ প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে তৈরি করা হবে। যাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষ করে মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।

এছাড়া সাধারণত একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির দৈনন্দিন ও প্রাতিষ্ঠানিক কাজে যতগুলো পরিস্থিতি (সেটিংস) তৈরি হয়, প্রায় সবগুলোই এর আওতাভুক্ত থাকবে। যেমন, চিকিৎসকের সঙ্গে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ ও রোগ বর্ণনা, পুলিশের কাছে আইনি সহায়তা ও পরিস্থিতি বর্ণনা, ক্লাসরুম, রেস্টুরেন্ট, দোকান, এয়ারপোর্ট, বিনোদন স্থান, পারিবারিক আলাপচারিতা, কুশল জিজ্ঞাসা প্রভৃতি সেটিংস-এর সময় সাইন টু টেক্সট অ্যান্ড স্পিচ জেনারেট করতে সক্ষম হবে।

কর্মশালায় বুয়েট, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ জাতীয় প্রতিবন্ধী সংস্থা ও সিডিডির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।