ইন্টারনেটের সব স্তরে ভ্যাট ৫ শতাংশ হচ্ছে

ইন্টারনেটের ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) নিয়ে সব ধরনের জটিলতার অবসান হতে যাচ্ছে। এই লক্ষ্যে ইন্টারনেটের সব স্তরে ভ্যাট ৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি কার্যকর হবে  ১ ডিসেম্বর থেকে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বাংলা ট্রিবিউনকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘ইন্টারনেটের বিভিন্ন স্তরে যেমন আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) পর্যায়ে ৫ শতাংশ এবং এনটিটিএন (ন্যাশনাল নেশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক) পর্যায়ে যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ছিল, তা কমিয়ে ৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গ্রাহকপর্যায়ে ৫ শতাংশ আগে থেকেই ছিল।’ তিনি আরও জানান, ‘নতুন এই সিদ্ধান্তের কারণে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর (আইএসপি) খরচ কম হবে। ফলে গ্রাহকের ইন্টারনেটসেবা পাওয়ার খরচও কমবে। এতে রাজস্ব আয়ও বাড়বে।’

প্রসঙ্গত, এ বছর সংসদে বাজেট পাসের দিন ইন্টারনেটের ওপর আরোপিত ভ্যাট ১৫ থেকে ৫ শতাংশ করা হয়, যা ১ জুলাই থেকে কার্যকরও হয়েছে। এই সংবাদে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা আশান্বিত হলেও দুঃসংবাদ শোনান ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (আইএসপি) ও মোবাইলফোন অপারেটররা। ইন্টারনেট ব্যবসায়ীরা বলেন, গ্রাহকের ভ্যাট ৫ শতাংশ করা হলেও আইএসপিগুলোর ওপর এনটিটিএন সেবার ১৫ শতাংশ এবং আইআইজির ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) আরোপ করা হয়।

জানা যায়, এনটিটিএন (ভূগর্ভস্থ ক্যাবল সেবা) প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট ধার্য আগে থেকেই ছিল। আর আইআইজির (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) সেবার ওপর ছিল ১৫ শতাংশ ভ্যাট। এই দু’টি ভ্যাটই ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ‘রিবেট’ পেতো। এবারের বাজেটে ‘রিবেট’ সুবিধা বাতিল করে এনটিটিএন সেবার ওপর ১৫ শতাংশ এবং আইআইজির ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট ধার্য করা হয়েছে। ফলে ইন্টারনেট সেবাদাতাদের কাঁচামাল (ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ) ক্রয় ও পরিবহনের খরচ বেড়ে যায়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ নভেম্বর অর্থমন্ত্রী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, আইএসপিএবির প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে ইন্টারনেটের সবস্তরে ভ্যাট ৫ শতাংশ করতে অর্থমন্ত্রী নির্দেশনা দেন।

জানতে চাইলে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এসআরও জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা এ বিষয়ে আশাবাদী হতে পারছি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভ্যাট সব স্তরে ৫ শতাংশ করা হলেও আমাদের কস্ট অব প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস কিছুটা হলেও কমবে। এতে পক্ষান্তরে গ্রাহকও উপকৃত হবেন।’ ইন্টারনেট ব্যবহার খরচ আরও কমানো সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।