কুমিল্লার দুই শিক্ষার্থীর উদ্ভাবন

কমান্ড শুনেই কাজ করতে পারে ‘মিয়া-ওয়ান’




মিয়া-ওয়ান রোবটকুমিল্লার বেসরকারি ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী ওপেনসোর্স হিউম্যানয়েড রোবট তৈরি করেছেন। রোবটটির নাম দেওয়া হয়েছে MIA-1 (মিয়া-ওয়ান)। মাত্র ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে তৈরি করা অত্যাধুনিক এ রোবটটি ব্যবহারকারীর কমান্ড শুনেই প্রতিউত্তর করার পাশাপাশি বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সাহায্য করতে পারবে। মাত্র আড়াই মাসে এ রোবটটি তৈরি করা হয়েছে।

রোবটটি তৈরি করেছেন ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী আশরাফুর রহমান মিনহাজ এবং তৃতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী মাহমুদা আফরিন। টিমটি লিড করেন মিনহাজ। তাদের মেন্টর ছিলেন ওই বিভাগের প্রভাষক মাসুম বকাউল। এটি বাংলাদেশের প্রথম ওপেনসোর্স হিউম্যানয়েড রোবট বলে দাবি করেছেন তারা।

টিম লিডার মিনহাজ বলেন, রোবটের বুকে ৭ ইঞ্চি টাচস্ক্রিন এলসিডি মনিটর রয়েছে। এর মাধ্যমে একজন ইউজার সহজে রোবটটিকে কমান্ড করে তার কাছ থেকে তথ্য জেনে নিতে পারবে। রোবট মিয়া-ওয়ান মুখে কথা বলার পাশাপাশি তার এলসিডিতে সংশ্লিষ্ট ছবিও প্রদর্শন করে। রোবটটির চোখে অত্যাধুনিক ক্যামেরা সংযুক্ত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে এটি দেখতে পারবে।

টিচিং এবং রিসিপশনের কাজে মিয়া-ওয়ানকে ব্যবহার করা যাবে বলে জানান তিনি।

ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক মাসুম বকাউলের তত্ত্বাবধানে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. তোফায়েল আহমেদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক সহযোগিতায় রোবটটি বানানো সম্ভব হয়েছে বলে জানান মিনহাজ। বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবেই রোবটটি তৈরি করা হয়েছে।

মিয়া-ওয়ান রোবট ও টিমের সদস্যরামিনহাজ আরও বলেন, আমরা রোবট মিয়া-ওয়ানকে ওপেনসোর্স করে দিয়েছি। অর্থাৎ রোবটটির প্রোগ্রাম, ডিজাইন, পার্টস লিস্ট ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। আমরা প্রযুক্তিতে পিছিয়ে আছি। কারণ, সবাই নিজের কাজকে লুকিয়ে রাখেন, কিন্তু আমরা ওপেন করে দিয়েছি। আমাদের দেখে যেন অন্যরা আরও ভালো কিছু করতে পারেন।

ভবিষ্যতে আরও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মিয়া-টু রোবট তৈরির কথা জানান মিনহাজ।

মিয়া-ওয়ান টিমের অপর সদস্য মাহমুদা আফরিন বলেন, রোবটটি মুখে কথা বলার পাশাপাশি তার এলসিডিতে সংশ্লিষ্ট ছবি প্রদর্শন করতে পারে। রোবটটির চোখে অত্যাধুনিক ক্যামেরা সংযুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি কম্পিউটার ভিশন টেকনোলজি ব্যবহার করে অবজেক্ট ডিটেকশন অ্যান্ড রিকগনিশন ও মোশন সেন্স করতে পারে। তাছাড়া, রোবটটি ইন্টারনেট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ইউজারকে সরবরাহ করতে পারবে।

মিনহাজ কুমিল্লা নগরীর শাকতলার হেফজুর রহমানের ছেলে। ছোট থেকেই তিনি প্রযুক্তি বিষয়ক কাজ করছেন। তার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে রয়েছে রোবটের বিভিন্ন কার্যক্রম। রোবট নিয়ে তিনি আরও ভালো কিছু করতে চান।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে কুমিল্লাকে পথিকৃত বলা হয়। কুমিল্লার ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তিতে ভূমিকা রেখে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নেবে বলে আমার বিশ্বাস।