গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা

‘ডিজিটাল বিজ্ঞাপনে স্থানীয় ও বিদেশি কোম্পানির ভ্যাট কাঠামো আলাদা হওয়া উচিত’

গোলটেবিল বৈঠকদেশে ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের বাজার আকার ২ হাজার কোটি টাকার। অথচ ফেসবুক মনে করে এই বাজার ৬০০ কোটি টাকার। তথ্যের ঘাটতির কারণেই দেশে ফেসবুক অফিস খুলছে না বা প্রতিনিধি নিয়োগ করছে না বলে জানালেন আলোচকরা।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ডেইলি স্টার সেন্টারে ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া বায়িং কম্লায়েন্স অ্যালায়েন্স ইনিশিয়েটিভ আয়োজিত বিদেশি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন: মিডিয়া ও কনটেন্ট শিল্পের প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব তথ্য জানান।

বক্তারা আরও বলেন,দেশের কোনও প্রতিষ্ঠান যখন ফেসবুক গুগলে বিজ্ঞাপন দেয় তখন কর ও মূসক বাবদ অনেক টাকা কাটা হয়। এ কারণে অনেকে নন-কমপ্লায়েন্স প্রতিষ্ঠানের দিকে চলে যাচ্ছে। উদাহরণ দিয়ে তারা বলেন, কোনও প্রতিষ্ঠান যখন ১০০ টাকা মূল্যের বিজ্ঞাপন ফেসবুক গুগলে প্রকাশ করে তখন তাকে ব্যাংকে ১৪৩ দশমিক ৭৫ টাকা পরিশোধ করতে হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিজ্ঞাপন দাতার কাছ থেকে কর ও ভ্যাট বাবদ ৪৩.৭৫ টাকা কেটে রাখে। এটা কমপ্লায়েন্স প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যায়। নন-কমপ্লায়েন্স প্রতিষ্ঠান যদি ২০ টাকা কমেও এই সেবা দিতে পারে (অবৈধভাবে) তাহলে বিজ্ঞাপনের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসবের সহযোগিতা নেবে। দেশে গুগল ফেসবুকের অফিস না থাকায় এই সুবিধা নিচ্ছে। এ বিষয়ের সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বক্তারা।

বক্তারা বলেন, স্থানীয় ও বিদেশি কোম্পানির ভ্যাট কাঠামো আলাদা হওয়া উচিত। এসব থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সাপোর্ট দিতে হবে, নিয়মিত কর্মশালার আয়োজন করে তাদের পরিষ্কার ধারণা দিতে হবে এবং ভ্যাট প্রক্রিয়া সহজ ও অনলাইনে করতে হবে।

গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আজকেরডিল ডট কমের প্রধান নির্বাহী ফাহিম মাশরুর। আলোচনায় অংশ নেন মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, এসএসএল কমার্স ও এসএসএল ওয়্যারলেসের প্রধান নির্বাহী আশীষ চক্রবর্তী, প্রিয়শপের প্রধান নির্বাহী আশিকুল আলম খান, পিকাবু ডট কমের প্রধান নির্বাহী মরিন হোসেন তালুকদার, ডেলিগ্রামের প্রধান নির্বাহী ওয়াইজ রহিম, প্রথম আলো ডিজিটালের হেড অব ডিজিটাল বিজনেস এ বি এম জাবেদ সুলতান, অ্যানালাইজেন বাংলাদেশের মো. রেসালত সিদ্দিকী, আই অ্যাম ডিজিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নেয়ামত উল্লাহ মহান, গিকি সোশ্যালের কো-ফাউন্ডার মেহেদী হাসান সাগর প্রমুখ।

বক্তারা বলেন,ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ফেসবুক-গুগলে বিজ্ঞাপনের মূল্য পরিশোধে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রেই মানি লন্ডারিং হচ্ছে। অপরদিকে আইনি জটিলতা ও নীতিগত সীমাবদ্ধতার সুযোগ নিয়ে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো আইন ভঙ্গ করছে এছাড়া বৈষম্যের শিকার হয়ে অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়ছে দেশীয় ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে দ্রুত ডিজিটাল ব্যবসা ক্ষেত্রে দেশি শিল্প সুরক্ষার নীতিমালা করে বিদেশি কোম্পানির জন্য ভিন্ন কর নীতি করার দাবি জানান খাত সংশ্লিষ্টরা। তাদের দাবি, বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ বিজ্ঞাপন দেশীয় অনলাইন প্ল্যাটফর্মে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা তৈরি করা হোক।