আরও একহাজার কোটি টাকা জমা দিলো গ্রামীণফোন

বিটিআরসির চেয়ারম্যানের কাছে পেঅর্ডার হস্তান্তর করছেন গ্রামীণফোনের কর্মকর্তারাআরও একহাজার কোটি টাকা জমা দিলো গ্রামীণফোন। মঙ্গলবার (১৯ মে) গ্রামীণফোনের একটি প্রতিনিধি দল টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিতে উপস্থিত হয়ে সংস্থার চেয়ারম্যান জহুরুল হকের হাতে সমমূল্যের পে-অর্ডার তুলে দেন। এ নিয়ে গ্রামীণফোন দুই হাজার কোটি টাকা বিটিআরসিতে জমা দিলো।

প্রসঙ্গত, অডিট আপত্তির ফলে গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসির পাওনা ছিল ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। এরমধ্যে আপিল বিভাগের নির্দেশে (৩ মাসের মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা) গত ২৩ ফেব্রুয়ারি গ্রামীণফোন বিটিআরসিকে এক হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করে।

টাকা জমা হওয়ার পরে অনলাইনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিটিআরসিতে  চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন,  ‘আজ (মঙ্গলবার) গ্রামীণফোন একহাজার কোটি টাকা জমা দিয়েছে। যদিও এই টাকা ৩০ মের মধ্যে জমা দেওয়ার কথা কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ের আগেই টাকা জমা দেওয়ায় গ্রামীণফোনকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই টাকা পাবলিক ডিমান্ড। রাষ্ট্রীয় টাকা। এই টাকা না দেওয়ার কোনও উপায় নেই। দেশে এখন ক্রান্তকাল চলছে। গ্রামীণফোনের পরিশোধ করা এই টাকা সরকারের অনেক কাজে লাগবে।’

সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, ‘আমরা নির্ধারিত সময়ের আগেই টাকাটা জমা দিতে পেরেছি। দেশের এই দুর্যোগে টাকাটা কাজে লাগবে জেনে আমরা আন্দিত।’

তিনি উল্লেখ করেন, ‘প্রথম কিস্তির টাকা জমা দেওয়ার পর থেকেই গ্রামীণফোন বিটিআরসি থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পেয়েছে। এখন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণের জন্য ইকুইপমেন্ট (নেটওয়ার্ক যন্ত্রাংশ) খুবই প্রয়োজন। কিছু চলে এসেছে। কিছু আসার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। আমরা সামনে আরও ভালো সেবা দিতে পারবো।’

সংবাদ সম্মেলনে সংযুক্ত ছিলেন বিটিআরসির মহাপরিচালক (সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোস্তফা কামাল প্রমুখ।

অবশিষ্ট বকেয়া আদায় বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসি চেয়ারম্যান ও গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী যৌথভাবে বলেন, ‘করোনা সংকট কেটে গেলে আমরা উভয়পক্ষ বসবো। একটা সমাধানে পৌঁছাবো। এজন্য আমাদের সহযোগিতা করছে ফিন্যান্স ডিভিশন। তারা হিসাব করে আমাদের জানাবে। কম বেশি যাই হোক আমরা মেনে নেবো।’

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, গ্রামীণফোন ও রবির অডিট সম্পন্ন হয়েছে। অন্যান্য অপারেটরের অডিটও করা হবে।

প্রসঙ্গত, বিআরসি’র দাবিকৃত সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা প্রদানের জন্য গত বছরের ২ এপ্রিল জিপিকে চিঠি দেয় বিটিআরসি। ওই চিঠির বিরুদ্ধে ঢাকার নিম্ন আদালতে মামলা করে টাকা প্রদানের ওপর নিষেধাজ্ঞা চায় জিপি। গত ২৮ আগস্ট আদালত মামলা খারিজ করে দেন। পরে ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করে জিপি। শুনানি নিয়ে বিটিআরসির চিঠি স্থগিত করে দেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যায় বিটিআরসি। পরে আপলি বিভাগ গ্রামীণফোনকে দুই হাজার কোটি টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেন।