বাংলাদেশের কাছে ব্যান্ডউইথ চায় সৌদি, চুক্তি স্বাক্ষরের অপেক্ষায় ভুটান

ব্যান্ডউইথ নেটওয়ার্কবাংলাদেশের কাছে সৌদি আরব সরকার ৬০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ চেয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) রাতে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সৌদি আরব বাংলাদেশের কাছে ব্যান্ডউইথ নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাদের অংশের প্রস্তুতি এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। দেশটি কি প্রক্রিয়ায়, কোথা থেকে ব্যান্ডউইথ নেবে তা পরে বিস্তারিত বলা যাবে। আমাদের ব্যান্ডউইথ রফতানির সক্ষমতা আছে।
মন্ত্রী জানান, ভুটানে ব্যান্ডউইথ রফতানির জন্য প্রস্তুত হয়ে বসে আছি আমরা। যেকোনও সময় ভুটানের সঙ্গে এমওইউ (সমঝোতা স্মারক) স্বাক্ষর হয়ে যাবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, নেপালও এই পথে হাঁটবে। কারণ তাদের সাবমেরিন ক্যাবলে সংযুক্ত হওয়ার কোনও সুযোগ নেই। ভুটানে ব্যান্ডউইথ রফতানি করা গেলে নেপালও আগ্রহী হবে।
জানা গেছে, তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে (সি-মি-উই-সিক্স) সংযুক্ত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তৃতীয় সাবমেরিনের ক্যাপাসিটি হবে ১২ টিবিপিএস টেরাবাইটস পার সেকেন্ড)। ৬ টিবিপিএস সিঙ্গাপুর প্রান্তে, অবশিষ্ট ৬ টিবিপিএস ফ্রান্স প্রান্তে থাকবে। ফলে দেশে কোনও ব্যান্ডউইথের ঘাটতি থাকবে না। উদ্বৃত্ত ব্যান্ডউইথ বিভিন্ন দেশে রফতানির সুযোগ থাকবে।
টেলিযোগাযোগ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ১০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ রফতানি করছে। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে আরও ব্যান্ডউইথ রফতানির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে ভুটানের আগ্রহের কারণে। কারণ হিসেবে জানা গেছে, ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো পাহাড়ি হওয়ায় এলাকাগুলো দুর্গম। ফলে সেখানে ব্যান্ডউইথ পরিবহন বেশ ব্যয়বহুল ভারতের জন্য, বিশেষ করে মুম্বাই বা চেন্নাই থেকে। এজন্য রাজ্যগুলো বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ নিতে চায়। ফলে ওই এলাকাগুলোতে আরও ব্যান্ডউইথ রফতানির সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী উল্লেখ করেন। মন্ত্রী বলেন, আমরা যদি আরও ব্যান্ডউইথ রফতানি করতে চাই তাহলে আমাদের নতুন করে কোনও একসেস পয়েন্ট তৈরি করতে হবে না। কুয়াকাটা থেকে আমরা ভুটান ও নেপালে এবং কক্সবাজার থেকে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে ব্যান্ডউইথ দিতে পারবো।
মন্ত্রী জানান, মিয়ানমারও বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ নিতে চায়। কিন্তু কূটনৈতিক সম্পর্কের কারণে ওখানে ব্যান্ডউইথ দেওয়া যাচ্ছে না।
জানা গেছে, এর আগে বাংলাদেশ থেকে ১০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ নিতে মিয়ানমার, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। এজন্য একটি লিংক তৈরির কাজও শুরু হয়। ওই তিনটি দেশ সি-মি-উই-ফোর সাবমেরিন ক্যাবল থেকে সরাসরি ব্যান্ডউইথ নিতে আগ্রহী ছিল। এক্ষেত্রে প্রধান লিংক গ্রহণকারী দেশ হতে চেয়েছিল মিয়ানমার। বাংলাদেশের আগ্রহ ছিল এই লিংক ধরে সিঙ্গাপুর পর্যন্ত যাওয়ার। পরবর্তীকালে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কারণে বাংলাদেশ আর আগ্রহী হয়নি।