বাংলাদেশকে তথ্য দিতে শুরু করেছে ফেসবুক

সরকার খুঁজছিল এমন ৩ ব্যক্তির তথ্য দিয়েছে ফেসবুক

ফেসবুক লোগো

বাংলাদেশ সরকার কোনও ফেসবুক ব্যবহারকারীর (ফেসবুক আইডির) তথ্য চাইলে বরাবরই নেতিবাচক জবাব দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। তবে অতি সম্প্রতি ফেসবুক বাংলাদেশ বিষয়ে তার সিদ্ধান্ত বদলাতে শুরু করেছে। সরকারের চাওয়া (বিভিন্ন ফেসবুক আইডির বিপরীতে) বিভিন্ন তথ্য দিতে শুরু করেছে ফেসবুক। এরই মধ্যে অন্তত ৩টি আইডির (ফেসবুক ব্যবহকারীর) তথ্য ফেসবুক বাংলাদেশ সরকারকে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

ফলে এখন থেকে ফেসবুকে কোনও ধরনের অনিষ্ট হলে এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানো হলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সরকার চাইলেই তারা তথ্য পাঠাবে এবং সরকার ওই তথ্যর ওপর ভিত্তি করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আইনের আওতায় নিতে পারবে।

রবিবার সচিবালয়ে তিনি জানান, গত ১২ জানুয়ারি আমি সিঙ্গাপুরে ফেসবুকের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান কার্যালয়ে ফেসবুক কর্তৃপেক্ষর সঙ্গে বৈঠক করি। সেখানে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, বিভন্ন উপায়ে তারা আমাদের সহযোগিতা করবেন। সিঙ্গাপুর সফর করে আমি মালয়েশিয়া হয়ে ঢাকায় ফিরেছি গত রাতে। আজ  অফিসে (সচিবালয়ে) এসে শুনি ফেসবুকের কাছে চাওয়া তিনটি আইডির তথ্য তারা বাংলাদেশ সরকারকে দিয়েছে। এর মধ্যে একজন নারীর নামে তৈরি ফেক (ভুয়া) আইডিও ছিল। তিনি জানান, এ থেকে আমরা মনে করি ফেসবুক আমাদের সহযোগিতা করতে শুরু করেছে।   

প্রসঙ্গত, প্রতি ৬ মাস পরপর ফেসবুক 'গভর্মেন্ট রিকোয়েস্ট রিপোর্ট' প্রকাশ করে থাকে। এতে বিভিন্ন দেশের সরকারের ফেসবুকের কাছে ব্যবহারকারীর তথ্য চাওয়া এবং ফেসবুক কতগুলো তথ্য সরবরাহ করেছে তার উল্লেখ থাকে।

জানা যায়, ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ২ বছরে বাংলাদেশ ৩ বারে ৩৪টি আইডির তথ্য চেয়ে অনুরোধ জানায় ফেসবুকের কাছে। ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত ১টা আবেদনে ১২ জন, (একই বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ৩টি আইডির কনটেন্ট রেসট্রিক্ট করতে বলে), ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত ৭টি পৃথক  আবেদনে ১৭ জন এবং একই বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাসে ৫টি পৃথক আবেদনে ৫ জনের বিষয়ে তথ্য চেয়ে অনুরোধ জানায় সরকার। কিন্তু ফেসবুক এতোদিন কোনও তথ্য পাঠায়নি।

প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে ঢাকায় বৈঠক করে যাওয়ার পরে (ডিসেম্বর মাসে) আমরা  ২ জনের বিষয়ে তথ্য চেয়ে আবেদন করেছিলাম। ফেসবুক সেই তথ্যই দেয়নি। কিন্তু অতি সম্প্রতি তারা দিতে শুরু করেছে।

ফেসবুকের সঙ্গে সফল বৈঠক সম্পর্কে তারানা হালিম বলেন, স্পেশাল পয়েন্ট অব কন্ট্যাক্ট (এসপিওসি) মডেলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী  এবং সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানে ফেসবুক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে  জানিয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, নিরাপদ ফেসবুক ও ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য তরুণদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট বিষয়ক কোনও কর্মশালা আয়োজন করলে ফেসবুক সেখানে প্রতিনিধি পাঠাবে বলে জানিয়েছে।এ ছাড়াও পর্ণ পেজের তালিকা পাঠালে সে বিষয়ে ফেসবুকের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসী কার্যক্রম সংক্রান্ত যেকোনও বিষয়ে ফেসবুক অত্যন্ত কঠোর এবং এ সংক্রান্ত কনটেন্ট নজরে আসা মাত্র ফেসবুক কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

/এইচএএইচ/