তরঙ্গ ব্যবহারে বেসরকারি রেডিওগুলোর অনিয়ম

এফএম রেডিও স্টেশনতরঙ্গ ব্যবহারে মোবাইলফোন অপারেটরগুলোর বদনামের কাতারে নাম লিখিয়েছে বেসরকারি (এফএম) রেডিওগুলো। সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের একটি প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বেসরকারি রেডিওগুলো তরঙ্গসংক্রান্ত অনিয়ম করে বেশি। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেতারের অবস্থান নবম।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে প্রাইভেট রেডিও ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (প্রাওব) সঙ্গে বিভাগের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ ছিল এফএম রেডিগুলো তরঙ্গ (স্পেক্ট্রাম) ব্যবহারে অনিয়ম করছে। এছাড়া আরও কিছু সমস্যা ছিল। ওইসব সমস্যা এবং প্রাওবের দাবি-দাওয়া নিয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির তরঙ্গ বিভাগের পরিচালক বলেন, ‘বাণিজ্যিক রেডিও সম্প্রচারে যে ফ্রিকোয়েন্সি (কম্পাঙ্ক) বরাদ্দ দেওয়া হয়, তা হরাইজেন্টালি (অনুভূমিক) ব্যবহার হয় এবং তা ডেডিকেটেড (পৃথকভাবে বরাদ্দ করা)। স্যাটেলাইট টেলিভিশনের ক্ষেত্রে তা ভার্টিক্যালি (উলম্ব) ব্যবহৃত হয় এবং তা শেয়ারড (ভাগাভাগি করা)। টেলিভিশনের ক্ষেত্রে মূল খরচ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচারে। তারপরও রেডিও এবং টেলিভিশনের ক্ষেত্রে স্পেক্ট্রামের চার্জ তুলনা করা হয়।’

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এই তুলনা সমীচীন নয়।’

তিনি জানান, বিটিআরসি নিয়মিতভাবে স্পেক্ট্রাম মনিটর করে। একই বছরের ২৬ অক্টোবরের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘বেসরকারি রেডিওগুলোই তরঙ্গ নিয়ে অনিয়ম বেশি করে থাকে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেতারের অবস্থান নবম।’

প্রসঙ্গত, বর্তমানে তথ্য মন্ত্রণালয় ২৮টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে রেডিও (এফএম) সম্প্রচারের লাইসেন্স দিয়েছে।

জানা যায়, বৈঠকে এফএম রেডিওর স্টেশন চার্জ, বরাদ্দকৃত ফ্রিকোয়েন্সি সীমানা, ব্যক্তিগত গাড়িতে এফএম রেডিওর দুর্বল সিগন্যাল, অ্যান্টেনা সংক্রান্ত সমস্যা, স্টেশন/রিলে কেন্দ্র স্থাপনে ঢাকা এবং ঢাকার বাইরের ‘বাধ্যবাধকতা’, নীতিমালা তৈরি, বিভিন্ন ফ্যাক্টরের কারণে সৃষ্ট সমস্যার সমাধানসহ বিভিন্ন বিষয় আলোচিত হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, তরঙ্গ ব্যবহারের অনিয়ম ঠেকাতে এবং এর সুষম ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। এতে করে তরঙ্গ ব্যবহারে সমতা বিধান হবে।

ওই সূত্র আরও জানায়, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় তরঙ্গ ফির বিষয়ে প্রাওব নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিকে একটি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠাবে। বিটিআরসি ওই প্রস্তাব বিশ্লেষণ করে সুপারিশ সহকারে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠানোর কথা। এছাড়া একই অ্যান্টেনায় একাধিক ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহারের বিষয়ে ইন্টারফ্রেন্সসহ অন্যান্য কারিগরি বিষয়ে যথাযথ পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করে বিটিআরসি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে বৈঠকে জানানো হয়।

/এইচএএইচ/এজে/