দেশে চলতি বছরই মোবাইল ফোনের কারখানা চালু করবে মটোরোলা

এ বছরই দেশে মোবাইল তৈরির কারখানা নির্মাণ করতে চায় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান মটোরোলা। আগামী জুন মাসের মধ্যে কারখানা স্থাপনের জন্য ভিজিট পর্ব শেষ হবে। এরপরই মোবাইল উৎপাদনের চূড়ান্ত ঘোষণা আসবে।  তার আগে ভারত ও চীন থেকে মটোরোলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সফরে এসে বাস্তবতা যাচাইসহ সরকারের সঙ্গে বৈঠক করবেন।  তবে সবকিছুই নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার ওপরে।  করোনা পরিস্থিতি খুব অল্প সময়ের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে এলে আরও আগেই বাংলাদেশে মোবাইল উৎপাদনে যেতে চায় মটোরোলা। 

দেশে মটোরোলা মোবাইলের ন্যাশনাল পার্টনার সেলেক্সট্রা লিমিটেডের সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।  

সেলেক্সট্রা’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাকিব আরাফাত বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এ বছরই আমরা কারখানা চালু করবো। তবে সবকিছু নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে আসার ওপর।’ তিনি জানান, উৎপাদনের শুরুতে স্মার্টফোনকে বিশেষ প্রাধান্য দেওয়া হবে। তার আগেই তারা স্মার্টফোনের বাজারে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে চান। স্মার্টফোনের পর তারা ফিচার ফোন উৎপাদনে যাবেন।  ফিচার ফোনের চাহিদা কখনও শেষ হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ফিচার ফোনের বাজার এখনও মোট মোবাইলফোন বাজারের ৭০ শতাংশ।  এই বিশাল বাজারকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাই।’ 

সাকিব আরাফাত জানান, দেশে কারখানা চালু হলে তারা ১০ হাজার টাকার নিচের স্মার্টফোনও তৈরি করতে চান।  যদিও এর আগেই তারা ১০ হাজার টাকার সেগমেন্টের স্মার্টফোন দেশের বাজারে ছাড়তে চান। মটোরোলা এ দেশের কারখানায় উৎপাদিত ফোন দিয়ে দেশীয় ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে চায়।  

মটোরোলা

জানা গেছে, কারখানার জন্য মটোরোলা সরাসরি এবং বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানটির অংশীজন— দুই পক্ষই যৌথভাবে বিনিয়োগ করবে।  কারখানার জন্য গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে জায়গা বরাদ্দের জন্য আবেদন করবে সেলেক্সট্রা লিমিটেড। বিষয়টি নিয়ে পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।  এছাড়া টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিতেও কারখানা গড়ে তোলার জন্য আবেদন করা হবে।

গত ৯ ডিসেম্বর মটোরোলা আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মটোরোলা মোবিলিটির সার্কভুক্ত দেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত মানি এক ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশে মটোরোলার কারখানা স্থাপনের বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সে সময় তিনি তার পরিকল্পনার কথাও শোনান। বিষয়টি পরিষ্কার করেন সেলেক্সট্রা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।  তিনি জানান, দেশের কারখানায় মটোরোলার ফ্ল্যাগশিপ ফোন তৈরিরও পরিকল্পনা রয়েছে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে মোবাইল একসেসরিজ, মটোরোলা টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদির কারখানা গড়ে তোলারও পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।  ১০ বছর বিরতি দিয়ে মটোরোলা আবারও এসেছে বাংলাদেশে। এরই মধ্যে কয়েকটি মডেলের স্মার্টফোন বাজারে ছেড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া লাইফস্টাইল পণ্যও বাজারজাত করছে প্রতিষ্ঠানটি। এরমধ্যে রয়েছে ব্লুটুথ হেডফোন, ব্লুটুথ স্পিকার, শিশুদের উপযোগী তারযুক্ত হেডফোন ইত্যাদি।

বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) বিটিআরসির চেয়ারম্যান টেলিকম খাতে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে জানান, বর্তমানে দেশে ১২টি মোবাইল কারখানা রয়েছে। প্রায় সবকটিতেই মোবাইল তৈরি হচ্ছে। সেই হিসেবে ১৩তম মোবাইল ফোন তৈরির কারখানা হতে পারে মটোরোলা। 

প্রসঙ্গত, বিখ্যাত মোবাইল ব্র্যান্ডের মধ্যে দেশে হুয়াওয়ে,শাওমি ও নকিয়ার কোনও মোবাইল কারখানা নেই।