রবির গ্রাহকরা মাসে ৪ জিবি ডাটা ব্যবহার করে

মোবাইলফোন অপারেটর রবি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গ্রাহকরা মাসে প্রায় ৪ জিবি (৩ দশমিক ৯ জিবি) ডাটা (ইন্টারনেট) ব্যবহার করে। বুধবার (২৮ জুলাই) ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অপারেটরটির দ্বিতীয় প্রান্তিকের ব্যবসায়িক তথ্য প্রকাশকালে এ তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের উত্তরে জানানো হয়, রবি তার গ্রাহকদের ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের জন্য সর্বনিম্ন ৩ থেকে ৫ এমবিপিএস (মেগাবিটস পার সেকেন্ড) গতি দিয়ে থাকে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, রবির বছরে ডাটার রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ২১ দশমিক ৯ শতাংশ আর ফোর-জি ব্যবহারকারীর প্রবৃদ্ধি ৬৫ শতাংশ।

সংবাদ সম্মেলনে রবির কাছে মোবাইল ইন্টারনেটের গতির ক্ষেত্রে ১৩৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৩৫তম হওয়ার কারণ এবং রবির অবস্থান জানতে চাইলে বলা হয়, অপারেটরটি ওকলার প্রতিবেদন আমলে নেয় না। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, ওকলাসহ এ ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িতরা সাধারণত পেইড। তাদের সদস্য না হলে তারা ডাটা (তথ্য) পাওয়ার কথা নয়। রবি তাদের সদস্য নয়। ফলে ওকলা কোন পদ্ধতিতে এই তথ্য প্রকাশ করেছে তা তাদের জানা নেই।  রবি আইটিইউ ও জিএসএমএ’র তথ্যকে সঠিক বলে মনে করে।  

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত তথ্যে জানানো হয়, ৪৭ কোটি টাকা কর পরবর্তী মুনাফা নিয়ে এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষ করলো রবি। এ বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় রবির ফোরজি গ্রাহক সংখ্যা দ্বিতীয় প্রান্তিকে বৃদ্ধি পেয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। ৫ কোটি ১৮ লাখ গ্রাহকের মধ্যে প্রায় ২ কোটি গ্রাহক ফোরজি ব্যবহার করেন। এছাড়া অপারেটরটির ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, যা এ খাতে সর্বোচ্চ।

আর চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রবি’র রাজস্ব আয় ২ হাজার ৩১ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। ভয়েস সেবা থেকে রবি’র রাজস্বের হার ২০২১ সালের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে ডাটা রাজস্ব আয় দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ আয় গত প্রান্তিকের তুলনায় ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।

অপারেটরটির আর্থিক ফলাফল সম্পর্কে রবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা খুবই আনন্দিত যে আমাদের ডিজিটাল লক্ষ্যমাত্রা ইতোমধ্যে আমাদের আর্থিক অগ্রগতিতে অবদান রাখতে শুরু করেছে।’ তবে নিয়ন্ত্রক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। এসএমপি (সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার) নিয়ন্ত্রণে ফলপ্রসূ বাস্তবায়নের অভাবের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সামগ্রিক প্রতিযোগিতামূলক ত্রুটিগুলো বাজারকে ব্যর্থতার দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিচ্ছে। প্রতিযোগিতার এমন ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়েছে অপেক্ষাকৃত ছোট অপারেটরদের জন্য।’ তিনি জানান, স্পেক্ট্রামের (তরঙ্গ) পরেই মূল্যবান হলো ফাইবার (ক্যাবল)। মানসম্পন্ন ফাইবারের জন্য বিটিআরসির সঙ্গে সংলাপ অব্যাহত আছে বলে তিনি জানান।  তিনি বলেন, ‘ভালো ফাইবার না হলে মানসম্মত সেবাদান সহজ নয়।’ দেশে ফোর-জি ডিভাইসের স্বল্পতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ফোর-জি সম্প্রসারণে এটি একটি বড় বাধা। এ বাধা দূর করতে কমদামে ফোর-জি ডিভাইস বাজারে ছাড়তে হবে।’ এখানে স্থানীয় উৎপাদকদের বড় ভূমিকা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

সংবাদ সম্মেলনে রবির চিফ করপোরেট ও রেগুলারিটি অফিসার সাহেদ আলমসহ আরও অনেকই সংযুক্ত ছিলেন।