যেসব জায়গায় পাওয়া যাবে ফাইভ-জি

দেশে আগামী ১২ ডিসেম্বর পরীক্ষামূলক চালু হচ্ছে ফাইভ-জি। রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে এই নেটওয়ার্ক চালু করবে। আগামী বছর দেশের ২০০টি গুরুত্বপূর্ণ সাইটে (টাওয়ারে) এই নেটওয়ার্ক চালু করবে অপারেটরটি। যদিও ২০২২ সালে অন্যান্য মোবাইল ফোন অপারেটরও ফাইভ-জি চালু করবে।

১২ ডিসেম্বর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসে’ ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক চালু হলেও সবাই এই সেবা ব্যবহার করতে পারবেন না। কয়েকটি বিশেষ স্থাপনায় এই নেটওয়ার্ক চালু করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে কয়েকটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ফাইভ-জি চালুর পরিকল্পনা করেছি। এরমধ্যে রয়েছে—বঙ্গভবন, গণভবন, সংসদ ভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সচিবালয় ও ধানমন্ডি ৩২ নম্বর। এছাড়া আমাদের আরও  দুটি স্থাপনায় ফাইভ-জি চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি, এগুলো হলো—টুঙ্গিপাড়া ও রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা।’

মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে ১৪টি মোবাইল তৈরির কারখানা রয়েছে। এর উদ্যোক্তারা আমাদের জানিয়েছেন, সবারই ফাইভ-জি ফোন তৈরির সক্ষমতা রয়েছে। সময় হলেই তারা ফাইভ-জি ফোন তৈরি করবেন।’ ফাইভ-জি ফোন তৈরির বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘স্যামসাং আমাকে জানিয়েছে, তারা এরইমধ্যে ফাইভ-জি ফোন তৈরি করেছে।’  অন্যরাও এগিয়ে আসবে বলে তিনি আশাবাদী।

ফাইভ-জি ফোনের বিষয়ে জানতে চাইলে দেশের মোবাইল ফোন উৎপাদকদের সংগঠন বিএমপিআইএ-এর সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া শহীদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ফাইভ-জি চালু হলে মোবাইল ফোন নির্মাতারা ঠিকই ফাইভ-জি ফোনসেট উৎপাদনে যাবেন।’ আগামী বছর কয়েকটি কারখানায় ফাইভ-জি ফোনের উৎপাদন শুরু হবে বলে তিনি জানান। তার নিজের প্রতিষ্ঠান সিম্ফনির কারখানায়ও ফাইভ-জি ফোন তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি মনে করেন, এরইমধ্যে দেশে অনেক ফাইভ-জি ফোন রয়েছে। আইফোনসহ অন্যান্য দামি ফোনগুলো ফাইভ-জি সাপোর্টেড। এ সংখ্যা একেবারে কম নয় বলে তিনি জানান।

দামের পার্থক্য একটা বড় ব্যাপার হবে বলে বিএমপিআইএ-এর সাধারণ সম্পাদক মনে করেন। ফোর-জি ফোনের তুলনায় ফাইভ-জি ফোন বেশ দামি হবে। সেটা সাধারণ গ্রাহকের কতটা সাধ্যের মধ্যে থাকবে, তার ওপর নির্ভর করবে ফাইভ-জি ফোনের সার্থকতা বলে মনে করেন জাকারিয়া শহীদ।

টেকনো, আইটেল ও ইনফিনিক্স মোবাইলের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ট্রানশান বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী রেজওয়ানুল হক জানান, তাদেরও ফাইভ-জি ফোন তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী বছরই তারা ফাইভ-জি ফোন উৎপাদনে যাবেন বলে তিনি জানান।

এদিকে মটোরোলাও দেশে ফাইভ-জি ফোন আনছে। আগামী মাসে মটোরোলার এজ সিরিজের ফাইভ-জি ফোন বাজারে আসছে। অপোও ফাইভ-জি ফোন তৈরি করছে বলে জানা গেছে। 

মার্চে ফাইভ-জির তরঙ্গ নিলাম

আগামী বছরের মার্চ মাসে ফাইভ-জির জন্য তরঙ্গ (স্পেক্ট্রাম) নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছরের ডিসেম্বরে তরঙ্গ নিলাম হওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। সেই নিলামে দেশের অন্যান্য মোবাইল অপারেটর অংশ নিয়ে পর্যায়ক্রমে ফাইভ-জি চালু করবে বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, ফাইভ-জি সেবা চালু করতে তরঙ্গ বরাদ্দ পেয়েছে টেলিটক। প্রতিষ্ঠানটি তরঙ্গ বরাদ্দ পেতে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিতে আবেদন করলে ২৫৪তম কমিশন বৈঠকে টেলিটকের অনুকূলে ৩ দশমিক ৫ গিগাহার্জ ব্যান্ডে (৩৩৪০-৩৪০০ মেগাহার্জ) ৬০ মেগাহার্জ তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়া হয়।