নিবন্ধিত নিউজ পোর্টালেই ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের ভবিষ্যৎ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইদানিং অর্গানিক ও পেইড রিচ কমছে। দিন দিন আরও কমবে। প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসায়িক কৌশল হিসেবেই এমনটা হচ্ছে। অন্যদিকে বিদেশি টিভি চ্যানেলগুলোতে ক্লিনফিড সম্প্রচার হচ্ছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, ডিজিটাল প্লাটফর্মের বিজ্ঞাপনগুলো কোথায় তাদের কাঙ্ক্ষিত ‘অডিয়েন্স’ পাবে? প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরা উত্তরে জানালেন, দেশের নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোই হতে চলেছে ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের বড় মিডিয়া।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের অনেক বড় বড় গণমাধ্যম রয়েছে যেগুলো ডিজিটাল দুনিয়ায় লিড দিচ্ছে। সেসবে বিজ্ঞাপন প্রচার করলে কাঙ্ক্ষিত শ্রেণির কাছেই যাবে বিজ্ঞাপন, এতে সাড়াও মিলবে বেশি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বেসিসের সাবেক সভাপতি ও বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী ফাহিম মাশরুর বলেন, ‘ডিজিটাল মাধ্যমে বিজ্ঞাপন বাবদ দেশ থেকে প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার কোটি টাকা বাইরে চলে যায়। এর বেশিরভাগই যায় হুন্ডির মাধ্যমে। এ ছাড়া বড় বড় প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে মাল্টিন্যাশনালগুলো তাদের বাইরের প্রতিষ্ঠানগুলোর বিজ্ঞাপনের টাকাও বাইরের দেশ থেকে পরিশোধ করে। এভাবেও টাকা চলে যায়।’

তিনি মনে করেন, বিজ্ঞাপনদাতারা এখনও বুস্টের পরিমাণ বাড়িয়ে আগের ‘রিচ’ ধরার চেষ্টা করছেন। এতে খরচটা ঠিকই বাড়ছে। তবে কিছু বিজ্ঞাপন দেশেও থাকা উচিত। বিশেষ করে পত্রিকায় যেসব বিজ্ঞাপন প্রকাশ হতো তার বড় একটা অংশ চলে যাচ্ছে অনলাইন নিউজ পোর্টালে। এ ক্ষেত্রে দেশের ক্রেতাদের নজর কাড়তে দেশীয় নিউজ পোর্টালগুলোকে প্রধান মাধ্যম ভাবার সময় এসেছে।’

এ দেশে একটি বিদেশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে এইচটিটিপুল। দেশ থেকে কোনও বিজ্ঞাপন প্রচার করতে হলে এইচটিটিপুলের সহায়তা নেওয়া যায়। সেখানে প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের অর্থ প্রতিষ্ঠানটিকে দেশীয় মুদ্রায় পরিশোধ করা হয়। তারপরও বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ বিজ্ঞাপন প্রকাশ হয় তার অল্প একটা অংশ এই প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে যায়। ফলে এ টাকার পরিমাণ খুবই কম। বাকিটা যাচ্ছে হুন্ডির মাধ্যমে।

একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ডেভেলপার গ্রুপের সাবেক ব্যবস্থাপক আরিফ নিজামী বলেন, ওই সামাজিক মাধ্যমটি আগের চেয়ে পেইড বা অর্গানিক রিচ কমিয়েছে। কারণ এখন তাদের নজর ব্যবসায়ের দিকে।

তিনি আরও বলেন, সামাজিক মাধ্যমটি যখন তাদের অ্যালগরিদম বদলায়, তখন রিচ কমে যায়। গুগলের বেলায়ও এমনটা হয়। তিনি জানান, ওরা যখন নতুন কোনও সেবা চালু করে তখন সেটার দিকেই ফোকাস থাকে বেশি। তখন স্বভাবতই ব্যবহারকারীর ফিডে অন্য বিজ্ঞাপন কম আসে। তিনি মনে করেন দিনে দিনে এই রিচ আরও কমবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেখা গেলো সামাজিক ওই মাধ্যমে একই সময়ে ৫০০টি বিজ্ঞাপন দেওয়া হলো। এসব বিজ্ঞাপনের ভীড়ে একটি বিজ্ঞাপনকে আলাদা করে চোখে না-ও পড়তে পারে। আবার পড়লেও সেটা চোখের আড়ালে চলে যেতে পারে মুহূর্তেই।

দেশে এখন অনেক নিবন্ধিত ওয়েবসাইট রয়েছে। সেসব সাইটে পাঠকও অনেক। সেখানে বিজ্ঞাপন দিলে তা একসঙ্গে অনেকের নজরে আসবে। হুট করে নজরের বাইরেও যাবে না। এক্ষেত্রে আমাদের বাইরের প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল হলে চলবে না।’