আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস ঢাকা-২০২২

প্রোগ্রামিং বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন এমআইটি

প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এমআইটি (ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি)। বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব (প্রবলেম সলভিং) অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতার মূল্যায়ন শেষে রাতে ফল প্রকাশ করা হয়।

ঢাকার বসুন্ধরার আইসিসিবিতে অনুষ্ঠিত হয় ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কনটেস্ট’র (আইসিপিসি) ৪৫তম আসরের আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস ঢাকা।  এবারের প্রতিযোগিতায় ৭০টি দেশের ১৩৭টি দল অংশ নেয়। বাংলাদেশের ৮টি দল (বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের দল) এতে অংশ নেয়।Photo Group

স্বাগতিক বাংলাদেশের ৮টি বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্ত পর্বে অংশ নিয়েছিল। এরমধ্যে চারটি করে সমস্যার সমাধান করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ৫১তম এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ৫৬তম স্থান অর্জন করে। এছাড়া, বাকি ছয়টি দল বিশেষ সম্মাননা পেয়েছে। দলগুলো হলো ৮২তম স্থান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ৯৮তম স্থান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ১০৭তম নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি, ১১৩তম স্থান আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ১১৯তম স্থান ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি) এবং ১২২তম স্থান অর্জন করেছে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

১১টির সমস্যার সমাধান করে ৪৫তম আইসিপিসির চূড়ান্ত পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এমআইটি। আইসিপিসির নিয়ম অনুযায়ী অনুষ্ঠানে সেরা চারটি দল স্বর্ণপদক পায়।  এরপর পঞ্চম থেকে অষ্টম স্থানকারী রুপা এবং নবম থেকে দ্বাদশ স্থান অর্জনকারী দল ব্রোঞ্জপদক পদক পায়।Photo- Champion- Winning Moment 1

১০টি সমস্যার সমাধান করে চীনের পিকিং ইউনিভার্সিটি দ্বিতীয় স্থান এবং ৯টি সমস্যার সমাধান করে জাপানের দ্য ইউনিভার্সিটি অব টোকিও তৃতীয় স্থান দখল করে স্বর্ণ জয়ী হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ৯টি সমস্যার সমাধান করে সেরা ৩ দলের পর স্বর্ণজয়ী হয়েছে। সুইজারল্যান্ডের ইটিএইচ জুরিখ, ফ্রান্সের ইকোল নরমাল সুপিরিয়র ডি প্যারিস, যুক্তরাষ্ট্রের কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটি ও পোল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারশ দল রৌপ্যপদক বিজয়ী হয়েছে।

ব্রোঞ্জ পেয়েছে রাশিয়ার ন্যাশনাল রিসার্চ ইউনিভার্সিটি হায়ার স্কুল অব ইকোনমিকস, সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেট ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ভিয়েতনামের ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (ভিএনইউ)।

আইসিপিসি ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. উইলিয়াম বি. পাউচার বলেন, আইসিপিসি একটি জনপ্রিয় আয়োজনে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর সারাবিশ্ব থেকে অংশগ্রহণকারী অংশ নেয় যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ঢাকায় চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার সফল ও বর্ণাঢ্য আয়োজনের জন্য বাংলাদেশকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

কম্পিউটার প্রোগ্রামিং সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে মেধার সক্ষমতার প্রমাণ দিতেই সারা বিশ্ব থেকে আগমন ছিল এক ঝাঁক মেধাবীর। সংখ্যাটা শতাধিক নয় বরং হাজারো মেধাবীর উপস্থিতে এক মিলন মেলার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপিত হল বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা "আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস ঢাকা" আয়োজনে।

বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) রাতে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের (ইউএপি) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মাদ আলাউদ্দিন। এর আগে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আইসিপিসির উপনির্বাহী পরিচালক ও আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস্ কনটেস্ট’র পরিচালক ড. মাইকেল জে. ডোনাহু। অনুষ্ঠান শেষে সমাপনী বক্তব্য রাখেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য ও আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস্ ঢাকার পরিচালক অধ্যাপক কামরুল আহসান। এসময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম এবং বিসিসি নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমারসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথি পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমাদের পরিশ্রমী মানুষ আছে।  সার বিশ্বে এখন আমাদের প্রায় ১২ মিলিয়ন লোক কর্মক্ষেত্রে শারীরিকভাবে কাজ করছে। তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করে এবং যেখানে কাজ করে সেই জাতির জন্য সম্পদ তৈরি করে। এর ফলে এটি আমাদের জন্য বিশ্বের সঙ্গে একটি সংযোগ সেতু খুলে দিয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, যে স্টার্টআপ ও নতুন উদ্ভাবনী ধারণার জন্য বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধ দেশ হয়ে উঠছে। ফলে স্টার্টআপ শিল্পে বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে।