সাইবার জগতে বাংলা ভাষার সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে ই-মেইলের ক্ষেত্রেও বাংলা ভাষা ও স্ক্রিপ্ট ব্যবহারের সুযোগ চেয়েছে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে ইন্টারনেট দুনিয়ায় অ্যাপ্লিকেশন, ডিভাইস এবং সিস্টেমগুলো যেনও স্থানীয় ভাষাবন্ধব হয় এবং এর ব্যবহার বাড়ে সে দিকেও আলোকপাত করেছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) ইউনিভার্সেল একসেপ্টেন্স ডে-২০২৩ উপলক্ষে রাজধানীর রমনার বিটিআরসি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত দুই দিনের সম্মেলনে এমন দাবি তোলেন বক্তারা।
ইন্টারনেট করপোরেশন ফর অ্যাসাইনড নেমস অ্যান্ড নাম্বারসের (আইকান) সহযোগিতায় যৌথভাবে দেশে প্রথমবার এই অংশীজন সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরাম (বিআইজিএফ)।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এহসানুল কবির আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ভবিষ্যতে কোনও ডিভাইস চালু করার সময় বাংলাভাষায় স্বাগত জানাবে। এজন্য বিটিআরসি আইকানের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে বলে জানান তিনি।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বিআইজিএফ চেয়ারম্যান এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ না হলে বিশ্বের অগ্রযাত্রা থেকে বাংলাদেশ ছিটকে পড়তো।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার। সরকারের কৃচ্ছ্রতা নীতির কারণে এবার বিসিসি ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামে যোগ দিতে পারেনি বলে জানান রণজিৎ কুমার।
অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তা দেন আইকান গ্লোবাল ডোমেইন অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি বিভাগের এসভিপি তেরেসা স্যুইনহার্ট। এরপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইজিএফ সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মাদ আব্দুল হক অনু।
এর আগে সকালের নেটওয়ার্কিং অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ পেশ করেন বিএনএনআরসি সিইও এএইচএম বজলুর রহমান।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে পিটিনান কুয়ারমর্নপাটানা (আইডিএন প্রোগ্রামের সিনিয়র ম্যানেজার, গ্লোবাল ডোমেইনস অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি, আইকান) প্রযুক্তিগত ওভারভিউয়ে ইমেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং নিয়ে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের (বিআইজিএফ) মহাসচিব মোহাম্মদ আবদুল হক অনু।
অনুষ্ঠানে আলোচক এবং অংশগ্রহণকারীরা কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। সেগুলো হলো—ইন্টারনেট সংযুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে রাষ্ট্র, সমাজ ও ব্যক্তিকে খাপ খাইয়ে নিতে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে হবে। স্মার্ট জনগণই এই শিল্পবিপ্লবকে সফল করবে। এক্ষেত্রে মাতৃভাষায় ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়াতে হবে। ভাষার প্রতিবন্ধকতা দূর করতে মন্ত্রণালয়কে কাজ করতে হবে। ডটবাংলা’র বর্ণসংকট দূর করার জন্য অচিরেই একটি বাংলাভাষার কন্টেন্ট ব্যাংক গঠন করতে হবে। আমাদের শিক্ষার্থীদের আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য আমাদের প্রযুক্তি কারিকুলামগুলোকে আধুনিক ও মানসম্পন্ন করতে হবে।