‘প্রযুক্তি পণ্যের সংকট কাটতে ছয় মাস লাগবে’

দেশে প্রযুক্তি পণ্যের (কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মনিটর ইত্যাদি) সংকট কাটতে শুরু করেছে। সরবরাহ আগের চেয়ে বেড়েছে। যেহেতু সংকটটা বৈশ্বিক, তাই এটি পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে আরও ছয় মাস লাগবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সভাপতি শাহিদ উল মুনীর।

বাংলা ট্রিবিউন: সংকট কেটে যাওয়ার পেছনে মূল ভূমিকা কীসের?

শাহিদ উল মুনীর: দেশে লকডাউন উঠে যাওয়ায় এবং বিভিন্ন দেশ যোগাযোগ অবরোধ তুলে নেওয়ায় পণ্য প্রবেশের গতি বেড়েছে। এজন্য সংকট আগের মতো নেই।

বাংলা ট্রিবিউন: প্রযুক্তি পণ্যের দাম বেড়েছিল কেন?

শাহিদ উল মুনীর: শুধু আমাদের দেশেই যে পণ্যের দাম বেড়েছে তা নয়, উৎপাদকরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছিল। ফলে এর প্রভাব পড়েছে সারা বিশ্বে। প্যানেল ও চিপের সংকট ছিল। তাই স্বাভাবিকভাবেই সব কিছুর দাম বেড়েছে। এ কারণে ল্যাপটপ, র‌্যাম, মনিটরসহ অনেক যন্ত্রাংশেরও দাম বেড়েছে। ল্যাপটপেরও দাম বেড়েছে অনেক। আশার কথা হচ্ছে, সংকট কাটতে শুরু করেছে। পুরোপুরি কাটতে ৫-৬ মাস লেগে যেতে পারে।

বাংলা ট্রিবিউন: করোনাকালে দেশে প্রযুক্তিপণ্যের খাতে ছাঁটাই কেমন হয়েছে?

শাহিদ উল মুনীর: হার্ডওয়্যার খাতের কোনও প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়নি। ছাঁটাইও হয়নি। তবে অনেকে পেশা বদল করেছেন। সংখ্যাটা এক শতাংশেরও কম। আমরা শুরু থেকে সতর্ক দৃষ্টি রেখেছিলাম। প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের বলেছিলাম, বেতন কমিয়ে, ইনক্রিমেন্ট না দিয়ে- যেভাবেই হোক কর্মীদের ধরে রাখুন। অনেকে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ব্যবসা বন্ধ করেনি কেউ।

সংগঠন থেকে সহজ শর্তে হার্ডওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যাংক ঋণ পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। অনেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা গুছিয়ে নিতে পেরেছে। ফলে করোনা এই খাতের খুব একটা ক্ষতি করতে পারেনি।

বাংলা ট্রিবিউন: সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল উজবেকিস্তান সফর করেছে। সেই প্রতিনিধি দলে আপনিও ছিলেন। এই সফর দেশের আইসিটি খাতের জন্য কী সুখবর আনতে যাচ্ছে?

শাহিদ উল মুনীর: উজবেকিস্তান পূর্ব এশিয়ার একটি দেশ। দেশটি দ্রুত উন্নয়ন করছে। ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে মিল রয়েছে দেশটির। ফলে দেশ দুটির একে অপরকে সহযোগিতা করার সুযাগও আছে। উজবেকিস্তান বাংলাদেশের আইসিটি খাতে বিনিয়োগ করতে চায়। এ দেশে থেকে আইসিটিভিত্তিক সেবা কিনতেও আগ্রহী। দেশটিতে কোনও সমুদ্রবন্দর নেই। আর এদের বাজার দখল করে আছে চীন। সেখান থেকে তারা অন্য দেশের দিকেও নজর দিতে চায়। বাংলাদেশ হতে পারে তাদের অন্যতম পছন্দের দেশ। বিভিন্ন মিটিংয়ে সেটা আমরা বুঝতে পেরেছি।

আগামী নভেম্বরে দেশটির একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে সফরে আসতে পারে। দুই দেশের মধ্যে বড় বাধা ছিল যোগাযোগে। সেটাও কাটতে যাচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ চালু হতে পারে শিগগিরই।