নতুন স্টার্টআপ

আসছে অন-ডিমান্ড টিউটরিং প্ল্যাটফর্ম ‘পড়াই’

যারা এতদিন না পারতো রাইডার হতে, না পারতো ফুড ডেলিভারি করতে, তারাই এখন হাতে পেলো ‘পড়াই’য়ের চাবিকাঠি। যাতে যুক্ত হলে দেশের যেকোনও প্রান্ত থেকে যখন খুশি টিউশন করানো যাবে। দরকার হবে শুধু কম্পিউটার আর ইন্টারনেট।

পড়াই ডট নেট হলো অন-ডিমান্ড প্রাইভেট টিউটরিং প্ল্যাটফর্ম। ১ নভেম্বর থেকে স্টার্টআপটি সবার জন্য খুলে দেওয়া হবে। ১৫ অক্টোবর থেকে এই ওয়েব প্ল্যাটফর্মে শিক্ষকদের নিবন্ধন শুরু হয়েছিল, যা এখনও চলছে।  

পড়াই কর্তৃপক্ষ বলছে, যেকোনও জায়গা থেকে যে যখন ফ্রি থাকবে, ক্লাস নিতে পারবেন। দেশের ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থী থাকেন ঢাকার বাইরে। তারা ভালো শিক্ষক পান না। তারাও এখন চাওয়া মাত্র পেয়ে যাবেন বুয়েট, ঢাবি বা অন্য কোনও নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টিউটর।

পড়াই-এর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা (সিটিও) মোহাম্মদ আলী বলেন, পড়াই দেশের প্রথম অন-ডিমান্ড টিউটরিং প্ল্যাটফর্ম। যে শিক্ষার্থীদের এখনই কোনও বিষয় নিয়ে সমস্যা, বা এখনই টিউটর লাগবে তারা তাৎক্ষণিক পড়াই-এর সেবা পাবে। শুধু পড়াশোনা নয়, যারা বিষণ্নতায় ভুগছে, গভীর রাতে যাদের হঠাৎ পরামর্শের প্রয়োজন, তারাও পড়াইতে নক করলে পাবেন কাউন্সেলিং। এমনকি যারা ভিসার ফরম পূরণ করতে গিয়ে মাঝপথে সমস্যায় পড়বেন, তারাও পড়াই থেকে সেবা পাবেন। বিভিন্ন ভিসা সার্ভিস প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা অনেকেই পড়াই’তে যুক্ত হয়েছেন।

মোহাম্মদ আলী আরও জানালেন, এখানে মাল্টি ক্যাটাগরিতে ২৪ ঘণ্টাই সেবা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। ধরা যাক পরীক্ষার আগের রাতে একজন স্কুলশিক্ষার্থী একটি গাণিতিক সমস্যায় পড়েছে। এখন সে শিক্ষক পাবে কোথায়? আধ ঘণ্টার জন্য তাকে কে পড়াবে? পড়াইতে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে উবার বা ফুডপান্ডার মডেলে। সমস্যা ও সময় উল্লেখ করে পড়াইতে পোস্ট দিলে ওই সময় যারা ফ্রি থাকবেন বা পড়াতে পারবেন তারা বিডে অংশ নেবেন। শিক্ষার্থী তার পছন্দমতো শিক্ষক বেছে নিতে পারবে। এমনকি প্রথম তিন মিনিট পরীক্ষামূলক ক্লাসও করতে পারবে। ভালো না লাগলে শিক্ষক বদলের সুযোগও আছে।

আপাতত প্ল্যাটফর্মটি পড়াই ডট নেট ওয়েবসাইট ভিত্তিক। এ সাইটে শিক্ষাদানের ফিচারে রয়েছে ভার্চুয়াল সাদা বোর্ড। রয়েছে টেক্সট এডিটর, অডিও এবং ভিডিও চ্যাটিংয়ের ব্যবস্থা। স্ক্রিন শেয়ার অপশনসহ আরও কিছু টুলসও আছে। পড়াই ডট নেটে শিক্ষার বিষয়বস্তু শুধু স্কুল-কলেজের পাঠ্যক্রমে সীমাবদ্ধ নয়। প্রোগ্রামিং ও ইংরেজির বিভিন্ন কোর্স যেমন- টোফেল, আইইএলটিএস, জিআরই’ও আছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা এবং প্রাতিষ্ঠানিক পরীক্ষার প্রন্তুতির জন্যও রয়েছে টিউশনির ব্যবস্থা। এ ছাড়া মানসিক স্বাস্থ্য, যোগব্যায়াম, রান্নার প্রশিক্ষণ, ভিসা ফরম পূরণসহ আরও কিছু সেবা নেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। সব মিলিয়ে তিন শতাধিক বিষয়বস্তু পাওয়া যাবে সাইটটিতে।

পড়াই-এ আরও আছে জুমের মতো নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম। এরইমধ্যে সাইটটি ২৫ জন ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর নিয়োগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। পড়াইতে নিবন্ধন করতে হবে www.porai.net সাইটে গিয়ে। নিবন্ধন ও পড়াই কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের পর (কাগজপত্র যাচাই-বাছাই) শিক্ষক ও অন্যরা এখানে কাজ করার সুযোগ পাবেন।

দেশের স্টার্টআপ সম্পর্কে জানতে চাইলে সফটওয়্যার ও সেবাপণ্য নির্মাতাদের সংগঠন বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, ‘বাংলাদেশে স্টার্টআপ কালচার শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে একটি ইকোসিস্টেম তৈরি হয়েছে। এখন ফান্ডিং দরকার। স্থানীয় বিনিয়োগকারী দরকার। তিনি জানান, স্টার্টআপে স্থানীয় বিনিয়োগকারী আনতে হলে এ সম্পর্কিত নীতিমালা পরিবর্তন করতে হবে।’