রাজধানীর শাহবাগ বিপনী বিতানের একটি রেস্টুরেন্ট বকেয়া পরিহারের উদ্দেশ্যে নাম পরিবর্তন করেছে। নতুন নামেও ব্যাপক ভ্যাট ফাঁকি দেয় প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু ভ্যাট গোয়েন্দাদের অভিযানে শেষ রক্ষা হলো না। প্রতিষ্ঠানটির নাম নিউ মৌলি রেস্তোরাঁ, ১১ শাহবাগ বিপনী বিতান, ঢাকা ১০০০।
এই রেস্তোরাাঁর আগের নাম ছিল মৌলি স্ন্যাক্স। তাদের কাছে অডিট কর্তৃপক্ষের পুরনো একটি অডিট আপত্তি ছিল ২ লাখ ৯৫ হাজার টাকার। এই বকেয়া ফাঁকির উদ্দেশ্যে তারা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে সম্প্রতি নিউ মৌলি রেস্তোরাঁ নামে আত্মপ্রকাশ করে।
ভ্যাট ফাঁকির গোপন তথ্য থাকায় ভ্যাট গোয়েন্দারা ১৯ অক্টোবর নিউ মৌলি রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে অপরিশোধিত এই পুরনো বকেয়া অনাদায়ের প্রমাণ পান।
অভিযানে গোয়েন্দা দল রেস্তোরাাঁয় উপস্থিত ভোক্তাদের সংখ্যা ও পরিশোধিত ভ্যাটের সঙ্গে বিস্তর গরমিল পান। কাউন্টার যাচাই করে দেখা যায়, তারা ভ্যাট আইন অনুসারে কোনও মূসক-৬.৩ রেজিস্টার ও অন্যান্য হিসাবপত্র সংরক্ষণ করেন না। কোনও ভোক্তাকে প্রকৃত ভ্যাট চালান দেওয়া হয় না।
প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থান থেকে ৫৪ দিনের একটি কাঁচা চালানের বিক্রয় হিসাব পাওয়া যায়।এতে দেখা যায়, তারা ২৬ লাখ টাকা বিক্রয় করেছে এবং এর ওপর ২ লাখ ১৭ হাজার টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ধানমন্ডি ভ্যাট সার্কেলে তারা প্রতি মাসে ভ্যাট জমা দিয়ে আসছে মাত্র ৫-১০ হাজার টাকা। বাড়ি ভাড়া ও সুদসহ এই সময়ে নিউ মৌলি রেস্তোরাঁ ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে ২ লাখ ৯২ লাখ হাজার।
এই হিসাব আমলে নিয়ে এই রেস্তোরাঁটি ২০১৫-১৬ থেকে ২০১৮-২০ পর্যন্ত মোট ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে প্রায় ৮৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।
অন্যদিকে, পান্থপথ সংলগ্ন গ্রিন রোডে গ্রিন চিলি ফাস্ট ফুড অ্যান্ড মিনি চায়নিজ রেস্টুরেন্টে একইদিনে (১৯ অক্টোবর) ভ্যাট গোয়েন্দা দল অভিযান চালিয়ে দেখতে পায় যে, কোনও ভ্যাট চালান ছাড়াই তারা খাবার পণ্য বিক্রয় করছে। তাৎক্ষণিকভাবে গোয়েন্দা দল রেস্টুরেন্টের ৫ মাসের কাঁচা রেজিস্টারে গোপন বিক্রয় তথ্য উদ্ধার করে।এতে ভ্যাট ফাঁকি নির্ণয় করা হয় ৭ লাখ ২৬ হাজার টাকা।
ভ্যাট গোয়েন্দা দলের অনুসন্ধানে এই হিসাবে ফাস্ট ফুড রেস্টুরেন্টটি গত ৫ বছরে ৩৮ লাখ ১৬ হাজার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।
অভিযান দুটোর নেতৃত্ব দেন সংস্থার সহকারী পরিচালক জুলফিকার আলী।
দুটো রেস্টুরেন্টের এই ভ্যাট ফাঁকি ও পূর্বের বকেয়া আদায়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেটকে অনুরোধ করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর। এ সম্পর্কে ভ্যাট আইনে দুটো পৃথক মামলা হয়েছে।
