X
রবিবার, ১১ মে ২০২৫
২৮ বৈশাখ ১৪৩২

কথা রাখেননি গার্মেন্টস মালিকরা

শফিকুল ইসলাম
০৩ আগস্ট ২০২১, ০৯:০০আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০২১, ০৯:০০

কারখানা খোলার জন্য সরকারকে দেওয়া কথা রাখেননি গার্মেন্টস মালিকরা। সরকারকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করেই কারখানা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়ে করোনা সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য সরকারের সব উদ্যোগকে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে পানিতে। ২৩ জুলাই শুরু হওয়া ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন এখন সাধারণ মানুষের কাছে হাসি তামাশায় পরিণত হয়েছে। আর এর জন্য প্রতিনিয়তই সরকারকে নানামুখী সমালোচনা শুনতে হচ্ছে। প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, সরকারের দূরদর্শিতা ও দক্ষতা নিয়েও।

চলতি বছরের শুরুর দিকে দ্বিতীয় দফায় করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করার পর যখনই সরকার এটি নিয়ন্ত্রণে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে তখনই বাগড়া দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা, বিশেষ করে গার্মেন্টস মালিকরা। বারবারই তারা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে পিছিয়ে পড়ার কথা বলছেন। তাদের দাবি, অর্ডার অনুযায়ী পণ্য শিপমেন্ট করতে না পারলে অর্থনীতি হারিয়ে যাবে।

সেই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার রবিবার (৩০ জুলাই) ১৪ দিনের লকডাউনের ৯ম দিনে এসে ১ আগস্ট থেকে গার্মেন্টসসহ শিল্প কারখানা খুলে দিতে বাধ্য করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কারখানা খুলে দেওয়ার আবেদন নিয়ে বারবার সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন তারা। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর আবেদন নিয়ে গেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে। দু-দফা আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। সঙ্গে তৈরি পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট আরও চারটি সংগঠন ছিল। তারা বারবারই সরকারকে বোঝাতে চেয়েছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা চালানো হবে।

শ্রমিকরা বলছে, কারখানার আশেপাশের শ্রমিকদের দিয়েই কারখানা চালানোর কথা বলে অনুমোদন নিয়ে নিলেও ১ আগস্ট সকালে কাজে যোগ দিতে ফোন করা হয় তাদের। রবিবার সকালে কাজে যোগ দিতে না পারলে তাদের আর কারখানায় আসতে হবে না বলেও জানানো হয়েছে। দায়িত্বশীলরাই এ ফোনগুলো করেছেন বলে একাধিক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন গার্মেন্টস কর্মীরা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক বেলায়েত হোসেন জানান, শ্রমিকরা চাকরি বাঁচাতে মাইলের পর মাইল হেঁটে কর্মস্থলের দিকে যাচ্ছেন অথচ কেউ এদের পরিশ্রান্ত মুখটা দেখছেন না। ঈদের একদিন আগ পর্যন্ত লেগেছিল ২৩ জুলাই শুরু হওয়া লকডাউনে কারখানা খোলা থাকবে কী থাকবে না— এই  সিদ্ধান্ত নিতে। সরকার সিদ্ধান্ত নিলো ৫ তারিখ পর্যন্ত কল-কারখানা বন্ধ থাকবে। আমরা শ্রমিকরা বাড়ি গেলাম। হঠাৎ করে আমাদের ফোন করে জানানো হলো ১ তারিখ থেকে কারখানা খুলবে। এর আগেই কারখানার গেটে পৌঁছাতে হবে, না পারলে আর কারখানায় আসা লাগবে না। আমরা বাধ্য হয়ে পেটের তাগিদে কর্মক্ষেত্রে এলাম। কিন্তু পরিবহন বন্ধ রেখে শ্রমিকরা কিভাবে ফিরবে সেটা কেউই ভাবেননি।

যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান। তিনি বলেন, কারখানা মালিকরা কোনও শ্রমিককে কাজে যোগ দিতে ঢাকায় আসতে বলেনি।  শ্রমিকদের আসার জন্য কোনও মালিক বাধ্য করছে না।

এদিকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, ব্যবসায়ীরা সরকারকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কারখানার আশপাশের শ্রমিকদের নিয়েই প্রথমে কারখানা চালু করবেন। ঈদের ছুটিতে গ্রামে যাওয়া শ্রমিকরা ৫ আগস্টের পর কাজে যোগ দেবেন। এতে কেউ চাকরিচ্যুত হবেন না। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। মন্ত্রী বলেন, একদিনের মধ্যে শ্রমিকদের ফিরে আসার নির্দেশনায় ফেরিঘাটগুলোতে রীতিমতো ভয়ঙ্কর অবস্থার সৃষ্টি হয়।

 

/ইউআই/এমআর/আপ-এনএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অ্যাডামসকে বিদায় দিলো বিসিবি
চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অ্যাডামসকে বিদায় দিলো বিসিবি
বনশ্রীতে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে গৃহকর্তা গ্রেফতার
বনশ্রীতে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে গৃহকর্তা গ্রেফতার
ক্রীড়াঙ্গনকে পুনর্জাগরণের উদ্যোগ চলছে: আসিফ মাহমুদ
ক্রীড়াঙ্গনকে পুনর্জাগরণের উদ্যোগ চলছে: আসিফ মাহমুদ
সর্বাধিক পঠিত
আরও কমলো স্বর্ণের দাম
আরও কমলো স্বর্ণের দাম
ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান উপদেষ্টার বার্তা
ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান উপদেষ্টার বার্তা
যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে: উপদেষ্টা মাহফুজ
যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে: উপদেষ্টা মাহফুজ
ব্যাংকে টাকা আসছে নাকি বের হয়ে যাচ্ছে
ব্যাংকে টাকা আসছে নাকি বের হয়ে যাচ্ছে
আওয়ামী লীগ কচু পাতার পানি না: কাদের সিদ্দিকী
আওয়ামী লীগ কচু পাতার পানি না: কাদের সিদ্দিকী