X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতেই স্থায়ী ঠিকানায় বাণিজ্য মেলা

শফিকুল ইসলাম
২২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৮:০০আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৮:০০





ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ফাইল ছবি) কবে নাগাদ স্থায়ী অবকাঠামোতে আয়োজিত হবে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা? কবে বাণিজ্য মেলা ছেড়ে যাবে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর? কবে কমবে রাজধানীর উত্তরাঞ্চলে বসবাসকারীদের মাসব্যাপী ভোগান্তি? এসব প্রশ্ন ছিল সবার মনে। অবশেষে এর উত্তর মিলেছে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সূত্র জানিয়েছে, সবকিছু ঠিক থাকলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীর বছরই বাণিজ্য মেলা শেরেবাংলা নগরের অস্থায়ী মেলার মাঠ ছেড়ে স্থায়ী অবকাঠামোতে আয়োজন করার পরিকল্পনা করছে সরকার।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৬তম আয়োজন হবে স্থায়ী অবকাঠামোতে। সে লক্ষ্যে স্যাটেলাইট শহর হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপশহর এলাকার ৪ নম্বর সেক্টরের ৩১২ নম্বর সড়কে এ মেলার স্থায়ী প্রদর্শনী কেন্দ্রটি তৈরি হচ্ছে।
সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের জুলাই মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়া ‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার’ নামে বাণিজ্য মেলার স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ হবে চলতি ডিসেম্বরেই। যেটুকু বাকি থাকবে তা শেষ হতে লাগবে আরও কয়েক মাস। সবকিছু সম্পন্ন করে ২০২১ সালের বাণিজ্য মেলা সেখানেই হচ্ছে এমনটাই নিশ্চিত করেছে ইপিবি কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, ২০ একর জমির ওপর নির্মিত এই অবকাঠামো নির্মাণ করছে চীনা কোম্পানি চায়নিজ এস্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থায়ী বাণিজ্য মেলা কেন্দ্রটির নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চীন সরকারের অনুদান সহায়তায় ‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার’ নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হবে এক হাজার ৩০৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। শুরুতে এ প্রকল্পের মূল ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৭৫ কোটি টাকা। সেখান থেকে ব্যয় বাড়িয়ে দ্বিতীয় দফায় ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৯৬ কোটি টাকা। পরে আরও ৫০৭ কোটি টাকা ব্যয় যুক্ত করা হয়েছে। তবে এ পর্যায়ে প্রকল্পের ডিজাইনেও নতুন নতুন কাজ যুক্ত করা হয়েছে।
ইপিবি সূত্র জানায়, ‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার’-এর মূল নকশা প্রণয়ন করেছে চীনের সংস্থা বেইজিং ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেকচারাল ডিজাইন (বিআইএডি)। নকশা অনুযায়ী এক্সিবিশন সেন্টারে রাখা হচ্ছে একসঙ্গে এক হাজার ৫০০ কার পার্কিং সিস্টেম। সেন্টারে আরও থাকছে ৮০৬টি বুথ, দুটি বড় হলরুম, আন্তর্জাতিক মানের সম্মেলন কেন্দ্র, অভ্যর্থনা কেন্দ্র, বাণিজ্য তথ্য কেন্দ্র, সভাকক্ষ, প্রেস সেন্টার, সার্ভিস রুম এবং বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৪৭৫ কোটি টাকা পাওয়া যাবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে, প্রকল্প সাহায্য হিসেবে চীন সরকারের অনুদান ৬২৫ কোটি ৭০ লাখ এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে পাওয়া যাবে ২০২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার মেয়াদ নির্ধারিত থাকলেও তা দুই বছর বাড়িয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। তাই আশা করা হচ্ছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শেষে সেখানে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি বাণিজ্য মেলার ২৬তম আসর বসবে।
ইপিবি সূত্র আরও জানায়, ২০০৭ সালে ঢাকার আগারগাঁওয়ে স্থায়ী বাণিজ্য মেলা কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। পরবর্তী সময়ে স্থান পরিবর্তন করে রাজধানীর অদূরে পূর্বাচলে ১০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়। শুরুতে চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ২৭৫ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরে প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর মধ্যে ৬৫ কোটি টাকা সরকারের ব্যয় করার কথা ছিল। মেলার জন্য প্রায় ৫০০ প্রদর্শনী স্টল নির্মাণ করার পরিকল্পনাও ছিল। ইপিবির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ওই প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ছিল ২০০৯ সালের জুলাই থেকে ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত। পরে স্থায়ী বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণের জন্য রাজউক পূর্বাচলের ৪ নম্বর সেক্টরে ২০ একর জমি বরাদ্দ দেয়। এরই মধ্যে জমির মূল্য হিসেবে রাজউককে ১২৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) মহাপরিচালক অভিজিৎ চৌধুরী জানান, স্থায়ী বাণিজ্য মেলার অবকাঠামো নির্মাণকাজ প্রায় শেষ হয়েছে। চলতি মাসেই নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ইপিবিকে সেন্টারটি দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবে। ইপিবির প্রত্যাশা অনুযায়ী ৩৮ একর জমির মধ্যে পাওয়া গেছে ২৬ একর। এর ২০ একর জমিতে মূল এক্সিবিশন সেন্টারটির নির্মাণকাজ শেষ হলেও ওয়্যার হাউজ, পাওয়ার প্লান্ট, স্থায়ী ফুড সেন্টার ও অংশগ্রহণকারীদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থাসহ প্রশাসনিক ভবন নির্মাণকাজ বাকি আছে। এগুলো নির্মাণ করা হবে বাকি ৬ একর জমিতে। এসব স্থাপনা আগামী এক বছরের মধ্যে নির্মাণ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি। আশা করা হচ্ছে, ২০২১ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে ২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা আয়োজন করা হবে স্থায়ী অবকাঠামো বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘আশা করছি, ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি ২৬তম বাণিজ্য মেলা স্থায়ী অবকাঠামোতেই আয়োজন করা সম্ভব হবে। এর মধ্য দিয়ে ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের একটি দাবি পূরণ হবে।’
উল্লেখ্য, রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের মেলার অস্থায়ী মাঠে ১৯৯৫ সাল থেকে শুরু হয় ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা আয়োজন। স্থায়ী অবকাঠামো না হওয়ায় প্রতিবছর এ মেলায় সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ অপচয় হচ্ছে। এ কারণে শুরু থেকেই ব্যবসায়ীরা বাণিজ্য মেলার জন্য স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণের দাবি জানান।

/এমএএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!