X
বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫
১৯ আষাঢ় ১৪৩২

ফেব্রুয়ারিতে বাড়তে পারে বিদ্যুতের মূল্য

সঞ্চিতা সীতু
১৬ জানুয়ারি ২০২০, ২২:৪৯আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২০, ১২:২৮

ফেব্রুয়ারিতে বাড়তে পারে বিদ্যুতের মূল্য বিদ্যুতের মূল্য বাড়তে পারে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে। এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বলছে, বছরের প্রথম দিন থেকেই মূল্য বাড়ানোর ঘোষণার কথা ছিল। কিন্তু  প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে পারায় মূল্য বাড়ানোর সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়। 
বিইআরসি সূত্র জানায়, লাইফ লাইন গ্রাহক (০ থেকে ৫০ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী) উৎপাদন খরচের ৫০ ভাগ ভর্তুকি দামে বিদ্যুৎ পেতে পারেন। তবে বড় গ্রাহকের ক্ষেত্রে মূল্য বাড়বে উৎপাদন খরচ থেকে সর্বোচ্চ ২০ থেকে ৩০ ভাগ।
কমিশন-সূত্র জানায়, কোনও রকম ভর্তুকি ছাড়াই বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ পড়ছে ৭ টাকা ৩১ পয়সা। যদিও এরমধ্যে উৎপাদন অদক্ষতা ও ক্যাপাসিটি পেমেন্টের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের গ্রাহকদের ক্ষেত্রে মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রান্তিক গ্রাহকদের মোট উৎপাদন খরচের অর্ধেক ভর্তুকি দেওয়ার পক্ষে বিইআরসি। অর্থাৎ সাত টাকা ৩১ পয়সার অর্ধেক অর্থাৎ তিন টাকা ৬৫ পয়সা ইউনিট প্রতি মূল্য রাখার পক্ষে কমিশন।

বিইআরসি-সূত্র জানায়, এবারও ০ থেকে ৫০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী লাইফলাইন গ্রাহক হিসেবে থাকছেন। সারাদেশের ৩ কোটি ৬০ লাখ গ্রাহকের মধ্যে দেড় কোটি গ্রাহকই লাইফ লাইন ট্যারিফে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে। অর্থাৎ মূল্য বাড়লেও দেড় কোটি গ্রাহকের জন্য তা মাথাব্যথার কারণ হবে না। বড় গ্রাহকদের জন্যও উৎপাদন খরচের চেয়ে ২০ থেকে ৩০ ভাগের মধ্যেই মূল্য বাড়ানোর হার রাখতে চান তারা। অর্থাৎ বড় গ্রাহকরা আর কোনও ভর্তুকি পাবেন না। তাদের বর্তমানের উৎপাদন খরচের চেয়ে ২০ থেকে ৩০ ভাগ বেশি মূল্য দিতে হবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে। অন্যদিকে, সেবা-প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, মসজিদ ও মন্দিরের ক্ষেত্রে প্রতিবারের মতোই থাকবে ভর্তুকি। তবে, পরিমাণ ভর্তুকি দেওয়া হবে তার ওপর নির্ভর করছে বিদ্যুতের মূল্য। তবে, এবার আরও কিছু ধাপ যোগ হতে পারে বলে জানা গেছে।

এর আগে, ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর থেকে মোট চারদিন বিতরণ কোম্পানিগুলোর বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি করে বিইআরসি। শুনানিতে বিতরণ কোম্পানিগুলো বিল মাস হিসাব করে জানুয়ারি মাস থেকে বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব করে।

প্রতিবারই বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতি নিতে যায় কমিশন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনাতেই ভর্তুকির অঙ্ক ঠিক হয় বলে জানা গেছে। ওই আলোচনায় বিতরণকারী কোম্পানির প্রধানরাও অংশ নেন সাধারণত। কমিশনের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এবার এখনও সেই আলোচনা হয়নি। ফলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি এখন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, ‘ভারতে বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে সরকার কোথায় কী পরিমাণ ভর্তুকি দেবে, তার ঘোষণা দেয়। এক্ষেত্রে সরকার ভর্তুকি দিলে ঘোষিত দর থেকে তা বাদ দিয়ে পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে মূল্য কার্যকর করা হয়। আর ভর্তুকি না দিলে সরাসরি ভারতের এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের মূল্য বহাল রাখা হয়।’

গত অক্টোবর মাসে বিদ্যুতের পাইকারি মূল্য পরিবর্তনের আবেদন করে পিডিবি। গত ২৩ অক্টোবর তারা এই আবেদন কমিশনের কাছে জমা দেয়। আবেদনে পিডিবি জানায়, আগামী ২০২০ সালে বিদ্যুৎ বিক্রি করে আয় হতে পারে ৩৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। কিন্তু ওই সময় প্রয়োজন হবে ৪৫ হাজার ২০৮ কোটি টাকা। ফলে বাকি আট হাজার ৬০৮ কোটি টাকা পূরণে মূল্য সমন্বয় করতে কমিশনের কাছে অনুরোধ জানায়।

একইভাবে তারা জানায়, প্রস্তাবিত পাইকারি বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয় করা হলে খুচরা মূল্যের ওপর কমিশনের আইন অনুযায়ী সমন্বয়ের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। প্রায় একইসঙ্গে গ্রাহক-পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয়ের প্রস্তাব দেয় ডেসকো, ডিপিডিসি, নেসকো, আরইবি ও ওজোপাডিকো। সঞ্চালন চার্জ সমন্বয়ের প্রস্তাব দেয় পিজিসিবিও। বিতরণ কোম্পানিগুলো তাদের আবেদনে কত মূল্য বাড়ানো হবে, এমন কিছু উল্লেখ না করে বিভিন্ন পরিচালন ব্যয়বৃদ্ধি বিবেচনা করে। পাশাপাশি ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে বিদ্যুতের পাইকারি মূল্যহার বাড়ালে যে হারে পাইকারি মূল্যহার বাড়বে, সে হারে  কোম্পানিগুলোর বিদ্যুতের খুচরা মূল্যহার বাড়ানোর বিষয়টি অনুরোধ জানায় কমিশনকে।

শুনানির পর কমিশনের মূল্যায়ন কমিটি সবার প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে মূল্য বাড়ানোর প্রস্তুতিও নিতে শুরু করে। কিন্তু কাজ শেষ পর্যন্ত শেষ করতে না পারায় জানুয়ারিতে মূল্য বাড়ানোর ঘোষণা দিতে পারেনি।

কমিশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা কাজ করছি। বিল মাস হিসাব করে বিতরণ কোম্পানিগুলো বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। যেন নতুন মূল্য বিলের সঙ্গে সহজেই সমন্বয় করা যায়। এই কারণে জানুয়ারিতে দিতে না পারলেও ফেব্রুয়ারিতে বিদ্যুতের নতুন মূল্য ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন।’ কাজ শেষ করতে পারলে ফেব্রুয়ারিতে বিদ্যুতের মূল্য বাড়তে যাচ্ছে বলেও তিনি জানান।

/এমএনএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
দুর্গম পাহাড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অভিযান চলছে
দুর্গম পাহাড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অভিযান চলছে
বান্দরবানে সেনা অভিযানে কেএনএ কমান্ডারসহ নিহত ২
বান্দরবানে সেনা অভিযানে কেএনএ কমান্ডারসহ নিহত ২
১১ মাসেও ট্রমামুক্ত হতে পারেনি পুলিশ
১১ মাসেও ট্রমামুক্ত হতে পারেনি পুলিশ
অনলাইনে ভাতা কার্ড করা নিয়ে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত 
অনলাইনে ভাতা কার্ড করা নিয়ে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত 
সর্বাধিক পঠিত
নবম পে-কমিশন গঠনের কার্যক্রম শুরুর আশ্বাস অর্থ উপদেষ্টার
সংযুক্ত কর্মচারী প‌রিষ‌দের জরু‌রি সভানবম পে-কমিশন গঠনের কার্যক্রম শুরুর আশ্বাস অর্থ উপদেষ্টার
বরখাস্ত হলেন সেই ম্যাজিস্ট্রেট তাবাসসুম ঊর্মি
বরখাস্ত হলেন সেই ম্যাজিস্ট্রেট তাবাসসুম ঊর্মি
পরীক্ষার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, তদন্তে কমিটি
পরীক্ষার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, তদন্তে কমিটি
কার দোষে শ্রমবাজার বন্ধ হয় জানালেন আসিফ নজরুল
কার দোষে শ্রমবাজার বন্ধ হয় জানালেন আসিফ নজরুল
অনুদান কমিটি থেকে অভিনেত্রীর অব্যাহতি!
অনুদান কমিটি থেকে অভিনেত্রীর অব্যাহতি!