X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় শিল্প-কারখানা বন্ধ থাকলেও বিদ্যুৎ উৎপাদন একই!

সঞ্চিতা সীতু
১৫ এপ্রিল ২০২০, ১১:৪০আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২০, ১২:১২

বিদ্যুৎ মিল-কলকারখানা বন্ধ থাকলেও দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে খুব একটা হেরফের হয়নি। আগের মতো একই পরিমাণে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। দিনের বেলা সরকারি অফিস-আদালত বন্ধ থাকায় বিদ্যুতের ব্যবহার কিছুটা কমেছে। কিন্তু সন্ধ্যার পরের চিত্র একই। সেক্ষেত্রে গত ২২ মার্চ এবং ১০ এপ্রিলের বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ বিশ্লেষণ করে এই অভিন্ন চিত্র দেখা গেছে।

এ অবস্থায় সরকার শিল্পে গ্রিডের বিদ্যুৎ ব্যবহার বাড়াতে গত এক বছর যে প্রচেষ্টা চালিয়ে এসেছে, তার পুরোটাই জলে গেছে। কোনও সাফল্যই মেলেনি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘সাধারণ অবস্থায় কতটা বিদ্যুৎ শিল্পে ব্যবহার হচ্ছে, আর কতটা মানুষের গৃহস্থালিতে ব্যবহার হচ্ছে, তা বের করা কঠিন। কিন্তু এখন সারাদেশে করোনার কারণে ছুটি চলছে। গুটি কয়েক তৈরি পোশাক কারখানা ছাড়া অন্যসব শিল্প কারখানাই বন্ধ রয়েছে। ফলে এখন খুব সহজেই বোঝা যায় যে বিদ্যুতের পুরোটেই বাসাবাড়ি আর রাস্তার আলো জ্বালাতে ব্যবহার হচ্ছে।

গত ২২ মার্চ পিডিবির বিদ্যুৎ উৎপাদন তালিকায় দেখা যায়, ওই দিন ডে-পিক আওয়ারে (দিনের সর্বোচ্চ চাহিদার সময়) দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ৮ হাজার ২ মেগাওয়াট। আর ইভিনিং পিক আওয়ারে (সান্ধ্যকালীন সর্বোচ্চ চাহিদার সময়) উৎপাদন ছিল ৯ হাজার ৫৩৫ মেগাওয়াট।
আর গত ১০ এপ্রিল দিনের বেলা সর্বোচ্চ চাহিদার সময় উৎপাদন ছিল ৭ হাজার ১৮১ মেগাওয়াট, ওইদিন সন্ধ্যায় যা ছিল ৯ হাজার ৪৯৮ মেগাওয়াট।

এই দুই দিনের উৎপাদন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২২ মার্চ দিনের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ৮ হাজার ৫৪৪ মেগাওয়াট, যা ১০ এপ্রিল ছিল ৭ হাজার ৬৩২ মেগাওয়াট। সন্ধ্যায় সর্বোচ্চ চাহিদা ২২ মার্চ ছিল ১০ হাজার ১৮৬ মেগাওয়াট, আর ১০ এপ্রিল ছিল ১০ হাজার ৯৫ মেগাওয়াট। সাবস্টেশন পর্যায়ে ২২ মার্চ গড় চাহিদা ছিল ৯ হাজার ৫৩৯ মেগাওয়াট, আর ১০ এপ্রিল যা ছিল ৯ হাজার ৪৯৮ মেগাওয়াট।

এদিকে বিদ্যুতের চাহিদার সঙ্গে তাপমাত্রার বিষয়টিও জড়িত। গত ২২ মার্চ দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলিসিয়াস, অন্যদিকে ১০ এপ্রিল তাপমাত্রা ছিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রার শীত এবং গ্রীষ্মের পার্থক্যের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনে হেরফের হয়ে থাকে। কিন্তু মার্চের শেষে এবং এপ্রিলের প্রথমে তাপমাত্রার খুব একটা পার্থক্য লক্ষ করা যায় না। সঙ্গত কারণে সবকিছু বন্ধ থাকার পরও কেবল তাপমাত্রার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ঠিক রয়েছে এ কথা বলারও অবকাশ নেই।
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের কারণে ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার, আগামী ২৫ এপ্রিল যা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ধরনের চিত্র বিদ্যুৎ বিভাগকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে যে শিল্পে চাহিদা সৃষ্টি না করতে পারলে উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে না। যেখানে ১৯ হাজার ৫৮০ মেগাওয়াট গ্রিড-সংযুক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে, সেখানে গড়ে অর্ধেক কেন্দ্রও চালানো যাচ্ছে না। এতে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ লোকসান গুনতে হচ্ছে। যার মাশুল হিসেবে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘মার্চে বিদ্যুতের চাহিদা এপ্রিলের তুলনায় কম থাকে। আমরা এবার সর্বোচ্চ ১৪ হাজার মেগাওয়াট চাহিদা হবে বলে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিলাম। করোনার কারণে শিল্পকারখানা বন্ধ থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন আগের মতোই আছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের শিল্পের চাহিদা আছে।। আর দিন দিন সেটা বাড়ছে। আমরা চাহিদা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছি।’

/এসএনএস/এপিএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
গানের মানুষদের ‘অংশীজন সভা’
গানের মানুষদের ‘অংশীজন সভা’
দায়িত্ব নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে যা বললেন র‍্যাবের নতুন মুখপাত্র
দায়িত্ব নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে যা বললেন র‍্যাবের নতুন মুখপাত্র
স্কুলে আসার পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
এই গরমে তরমুজ খাবেন যে ৭ কারণে
এই গরমে তরমুজ খাবেন যে ৭ কারণে
সর্বাধিক পঠিত
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
তাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু