X
বুধবার, ০৮ মে ২০২৪
২৫ বৈশাখ ১৪৩১

করোনাপীড়িত ২০২০ সালেও দেশের প্রবৃদ্ধি বিশ্বসেরাদের অন্যতম: তথ্যমন্ত্রী

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
৩১ ডিসেম্বর ২০২০, ১৯:১১আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২০, ২১:০৮

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ (ছবি: ফোকাস বাংলা) তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, করোনাপীড়িত ২০২০ সালেও শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, তা বিশ্বে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশগুলোর অন্যতম।

বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ থেকে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট (এনআইএমসি) আয়োজিত ‘মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও গণমাধ্যম’ শীর্ষক অনলাইন সেমিনার শেষে বছরের শেষদিন উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। এনআইএমসি’র মহাপরিচালক শাহিন ইসলামের সভাপতিত্বে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান, তথ্য সচিব খাজা মিয়া এবং মন্ত্রণালয়ের সংস্থা প্রধানরা সেমিনারে সংযুক্ত ছিলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই করোনা মহামারির বছরে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করে বিশ্বের ধনাত্মক প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী মাত্র ২২টি দেশের মধ্যে অন্যতম স্থান অধিকার করেছে। এই ২২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ওপরের দিকেই।’ একইসঙ্গে করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রেও ব্লুমবার্গ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ উপমহাদেশের মধ্যে প্রথম ও সমগ্র বিশ্বের মধ্যে ২০তম বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ প্রকাশিত প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে ড. হাছান বলেন, ‘তারা বলছে, বাংলাদেশ ২০৩০ সাল নাগাদ ২৮তম অর্থনীতির দেশ হবে, ২০৩৫ সাল নাগাদ হবে পৃথিবীর ২৫তম অর্থনীতির দেশ। অর্থাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থান দাঁড়াবে পৃথিবীতে বহু উন্নত দেশেরও ওপরে।’

এ সময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০২০ সালে আমাদের অন্যতম বড় অর্জন হচ্ছে—কোনও বৈদেশিক সাহায্য ছাড়া সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। করোনাকালেও বাংলাদেশে মানুষের মাথাপিছু আয় ১৯০০ ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০৬৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে। সম্প্রতি আইএমএফ রিপোর্ট বলছে, আগামী বছর বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ভারতকে ছাড়িয়ে যাবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়ার কারণে এই করোনা মহামারির প্রতিবন্ধকতা জয় করে দেশে শারীরিক-সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেও সরকারযন্ত্র, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখা সম্ভব হয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞের আশঙ্কা ভুল প্রমাণ করে মহামারিতে একজন মানুষও না খেয়ে মৃত্যুবরণ করেনি।’

আওয়ামী লীগের এই অন্যতম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘করোনাকালে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তারা ১ কোটি ২৫ লাখ মানুষের কাছে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। সে কারণে বহু নেতা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, মৃত্যুবরণ করেছেন। কেন্দ্রীয় কমিটির ৮১ জনের মধ্যে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। উপদেষ্টামণ্ডলী এবং সংসদ সদস্যদেরও বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। মন্ত্রিসভার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, একজন মৃত্যুবরণ করেছেন। এছাড়া দলের প্রায় ৬ শতাধিক নেতাকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।’

মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও গণমাধ্যম প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রের চারটি স্তম্ভের মধ্যে গণমাধ্যম স্তম্ভ সুদৃঢ় থাকলে রাষ্ট্রও সুদৃঢ় থাকে। সে কারণে বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্নের ঠিকানায় বাংলাদেশকে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন, সে লক্ষ্যে স্বাধীনতার পরপরই তার নেতৃত্বে গঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল, প্রেস ইনস্টিটিউট ও ওয়েজবোর্ড। সেই ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীন ও সুষ্ঠু বিকাশে বহু পদক্ষেপ নিয়েছে এবং তার হাত ধরে দেশের গণমাধ্যম যেভাবে বিকশিত হয়েছে, সেটি অতুলনীয়। আমরা বিশ্বাস করি, গঠনমূলক সমালোচনা সমাজকে বহুমাত্রিক ও গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে।’

২০২১ সালে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে তথ্যমন্ত্রী

আগামী বছর বিএনপি’র চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তরে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি নিজেরা চোখ বন্ধ করে অন্ধকারের মধ্যে আছে, সেজন্য চারদিকে অন্ধকার দেখছে। আমি আশা করবো, তারা আগামী বছর চোখটা খুলে আলো দেখবেন। আর বিএনপি’র যে নেতৃত্ব, সেই নেতৃত্বে তারা জনগণ থেকে ক্রমাগতভাবে দূরে সরে গেছে। আশা করি, আগামী বছর বিএনপি নেতিবাচক রাজনীতির ধারা থেকে বেরিয়ে ইতিবাচক রাজনীতিতে ফিরে আসবে। দুঃখজনক হলেও সত্য, এই করোনাকালে যেভাবে জনগণের পাশে থাকার দরকার ছিল, বিএনপিসহ তাদের মিত্ররা তা থাকেনি। সরকারের প্রতি বিষোদগার ও সংবাদ সম্মেলনের মধ্যেই তাদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন। জনগণকে প্রাধান্য না দিয়ে তারা তাদের হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও দলীয় স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’

আওয়ামী লীগের চ্যালেঞ্জ নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে সমস্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এগিয়ে গেছে ও যাচ্ছে। ১২ বছর ধরে আমরা চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আগামী বছরও তার ব্যতিক্রম নয়। আমরা দলকে আরও সুসংগঠিত করতে চাই। আমরা মনে করি দলের কারণেই আজকে দল রাষ্ট্র ক্ষমতায়। সুযোগসন্ধানীদের স্বার্থ হাসিলের কারণে যাতে দল ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে দলীয় পদ থেকে বাদ দেওয়ার কাজ আমরা শুরু করেছি। আগামী বছরও সেটি অব্যাহত থাকবে।’

আগামী বছর স্রষ্টার কৃপায় পৃথিবী থেকে করোনা দূর হবে। আমরা আবারও মুক্ত পৃথিবীতে, মুক্তভাবে শ্বাস নিতে পারবো। পৃথিবীর মানুষ আবারও আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

/এমএইচবি/এপিএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
এএফসি নারী চ্যাম্পিয়নস লিগে ভারত আছে, নেই বাংলাদেশ
এএফসি নারী চ্যাম্পিয়নস লিগে ভারত আছে, নেই বাংলাদেশ
‘প্রেমটা থাকুক, বিয়ে কোনও এক সময় হয়ে যাবে’
‘প্রেমটা থাকুক, বিয়ে কোনও এক সময় হয়ে যাবে’
শ্রম অধিকার ও বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কের গতিশীলতা
শ্রম অধিকার ও বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কের গতিশীলতা
হ্যান্ডব্রেক ছাড়াই চলে রাজধানীর বাস, পায়ের ব্রেকেও নেই জোর
হ্যান্ডব্রেক ছাড়াই চলে রাজধানীর বাস, পায়ের ব্রেকেও নেই জোর
সর্বাধিক পঠিত
শনিবারে স্কুল খোলা: আন্দোলন করলে বাতিল হতে পারে এমপিও
শনিবারে স্কুল খোলা: আন্দোলন করলে বাতিল হতে পারে এমপিও
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন আজ
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন আজ
কেমন আছেন মিল্টনের আশ্রমে আশ্রিতরা
কেমন আছেন মিল্টনের আশ্রমে আশ্রিতরা
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা