X
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

দিনাজপুরে পাটচাষ প্রকল্পের অর্থ হরিলুটের অভিযোগ

দিনাজপুর প্রতিনিধি
২০ জুন ২০১৭, ০৯:২২আপডেট : ২০ জুন ২০১৭, ০৯:২৭

পাট

পাটের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সরকারের নেওয়া কর্মসূচি ও প্রকল্পের অর্থ হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে। দিনাজপুরে পাটচাষিদের সমাবেশের অর্থ ও বরাদ্দকৃত বীজ বিক্রি করে তা দিয়ে নিজেদের পকেট ভারি করছেন কর্মকর্তারা। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীনে পাট অধিদফতর কর্তৃক বাস্তবায়িত ‘উচ্চ ফলনশীল’ (উফশী) পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং উন্নত পাট পচন শীর্ষক প্রকল্পটি বাংলাদেশের ২০০টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। পাটের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকারের নেওয়া কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় চলতি মৌসুমে দেশের ১২টি অঞ্চলে পাটচাষি সমাবেশের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চাষি সমাবেশে প্রত্যেক অঞ্চলে ২ ব্যাচে ২০০ করে ৪০০ জন চাষির উপস্থিতিতে সমাবেশ করার কথা এবং প্রত্যেক চাষিকে সম্মানী হিসেবে ৩০০ টাকাসহ যাবতীয় উপকরণ দেওয়ার কথা। তবে মানা হচ্ছে না সরকারি এই নির্দেশনা।

দেশের ১২টি নির্ধারিত অঞ্চলের মধ্যে একটি দিনাজপুর। সোমবারও (১৯ জুন) দিনাজপুর অঞ্চলের পাট চাষিদের নিয়ে সমাবেশ হয় সদর উপজেলা হলরুমে। সেখানে ৪০০ চাষি উপস্থিত থাকার কথা থাকলে ছিলেন মাত্র ৭৪ জন। একইসঙ্গে প্রত্যেক চাষিকে ৩০০ টাকা সম্মানী দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয় ২০০ টাকা করে।

শুধু তাই নয়, পাটচাষ বৃদ্ধি করতে সরকারিভাবে বিনামূল্যে প্রতি উপজেলায় এক হাজার চাষিকে ২ কেজি ৬৫০ গ্রাম করে পাটবীজ দেওয়ার কথা থাকলেও তা পাচ্ছেন না কৃষকরা।

অভিযোগ উঠেছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ওই পাটবীজ বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করছেন। প্রতি অঞ্চলে বরাদ্দকৃত ৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকার মধ্যে ১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা প্রকল্প পরিচালক ড. শেখ মুহা: রেজাউল ইসলাম নিজে গ্রহণ করেন। বাকি টাকার মধ্যে অর্ধেক টাকা গ্রহণ করছেন সংশ্লিষ্ট পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা ও পাট অধিদফতরের পরিদর্শক।

ওই সমাবেশে অংশগ্রহণ করতে আসা উত্তর মহেষপুর গ্রামের পাটচাষি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে ২০০ টাকা দিয়েছে। কিন্তু কোনও বীজ দেওয়া হয়নি। এর আগেও তাকে কোনও বীজ দেওয়া হয়নি।’

সমাবেশে আসা আরেক পাটচাষী অবিনাশ চন্দ্র রায় ও পরিতোষ জানান, তাদেরকে একমাত্র দেওয়া হয়েছিল এক কেজি করে পাটবীজ। কিন্তু এরপরে আর দেওয়া হয়নি।

দিনাজপুর পাট অধিদফতরের মুখ্য পরিদর্শক দীপ শংকর বসাক জানান, এখানে প্রায় ১০০ জন পাটচাষী অংশগ্রহণ করেছেন। যাদের প্রতিজনকে ২০০ করে টাকা দেওয়া হয়েছে। কী পরিমাণ বরাদ্দ ছিল এবং কতজন চাষি থাকার কথা তা তিনি জানেন না।

দিনাজপুর পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা অসীম কুমার মালাকার জানান, এখানে বরাদ্দ ৩০০ টাকা করে আর উপস্থিত থাকার কথা ২০০ কৃষক। তবে অনেক কৃষকই আসেনি।

তিনি জানান, পাটের ব্যাপারে কোনও অনিয়ম হচ্ছে না। কোনও কৃষক পাটবীজ না পেলে সেটি দেখার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার।

পাট অধিদফতর দিনাজপুর ও রংপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক সাইদুর রহমান জানান, পাটচাষিদের উদ্বুদ্ধ করতে সরকারের এত বড় একটি প্রকল্পে আমাদেরকে সংশ্লিষ্টতা রাখা হয়নি। যার কারণে বিষয়গুলো জানা নেই। যারা এই সমাবেশের সঙ্গে জড়িত তারাই বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রহমান জানান, পাটবীজ বিতরণে কোনও অনিয়মের অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

/এসটি/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মেনোত্তির মৃত্যুতে পাশে না থাকার আফসোস ক্রুসিয়ানির
মেনোত্তির মৃত্যুতে পাশে না থাকার আফসোস ক্রুসিয়ানির
টাঙ্গাইল শাড়ির স্বত্ব রক্ষায় ভারতে আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে সরকার
টাঙ্গাইল শাড়ির স্বত্ব রক্ষায় ভারতে আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে সরকার
পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ভারতেরই অংশ: এস জয়শঙ্কর
পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ভারতেরই অংশ: এস জয়শঙ্কর
প্রথম ধাপে ৭ শতাংশ কোটিপতি প্রার্থী
উপজেলা নির্বাচনপ্রথম ধাপে ৭ শতাংশ কোটিপতি প্রার্থী
সর্বাধিক পঠিত
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?