X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

পলাতক খুনিদের দেশে এনে রায় কার্যকরের দাবি বঙ্গবন্ধুর দাফনকারীর

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
১৫ আগস্ট ২০১৭, ০৭:৪৭আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০১৭, ০৭:৪৭

কাজী ইদ্রিস আলী গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধির পাশের একটি বাড়িতে থাকেন কাজী ইদ্রিস আলী। বয়স প্রায় ৭৬। সংসারে স্ত্রী, তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। বড় ছেলে ও দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। সাত বছর আগে টুঙ্গিপাড়া শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকারি হাসপাতালের চাকরির মেয়াদ শেষ হলেও এক্সটেনশনে এখনও চাকরি করছেন। বেতন পাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু ট্রাস্ট থেকে। নিজের ও বড় ছেলের সামান্য বেতন দিয়ে কোনও রকমে চালিয়ে নিচ্ছেন সংসার।

১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বীর বাঙালি। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে পাক হানাদারের কাছ থেকে লাল-সবুজের পতাকা ছিনিয়ে আনে। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে যখন পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেন ঠিক সে সময়ে ৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে বিপথগামী একদল সেনাসদস্য। এরপর তার লাশ নিয়ে আসা হয় গোপলগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়। দাফন করা হয় মা-বাবার কবরের পাশে।

যে ১৮ জন বঙ্গবন্ধুকে দাফন করছেন তাদের মধ্যে কাজী ইদ্রিস আলী একজন। দিনটি ছিল শুক্রবার। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকালে ওয়্যারলেসের মাধ্যমে প্রথমে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার খবর শোনেন তিনি। বারবার ওয়্যারলেসে বলা হয়, স্বৈরচারী সরকারের পতন হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে হতভম্ব হয়ে পড়েন টুঙ্গিপাড়াবাসী। কেউ যেন বিশ্বাসই করছিলেন না। এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন কাজী ইদ্রিস আলী।

বঙ্গবন্ধুর সমাধি

তিনি জানান, একটি হেলিকাপ্টারে করে বঙ্গবন্ধুর লাশ নিয়ে আসে সেনাবাহিনী। এরপর থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা দাফনের জন্য তাকেসহ ১৮ জনকে নিয়ে যান। পরে হেলিকপ্টার থেকে খোলা মাঠে (বর্তমানে সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স) বঙ্গবন্ধুর লাশবাহী কফিন নামানো হয়। এ সময় তারা তখনই লাশ দাফনের কথা বলে। তখন কফিন খোলার জন্য মিস্ত্রি আব্দুল হামিদ পাকা হলেও তিনি বাড়িতে না থাকায় দায়িত্ব পড়ে তার ছেলে শেখ আইয়ুব আলীর ওপর। আইয়ুব আলীর এসে কফিন খোলেন। কফিনে বঙ্গবন্ধুর লাশ ছিল সাদা কপড় দিয়ে ঢাকা। কাপড় সড়িয়ে দেখা যায় চশমাটি ছিল ডান পাশে ভাঙ্গা অবস্থায়। গুলিতে বুক ঝাঁঝড়া হয়ে গিয়েছিল। পাশের একটি পুকুর থেকে পানি এনে রক্ত ধোয়া হয়।

কাজী ইদ্রিস আলী বলেন, দ্রুত দাফন করা কথা বললেও গোসল না করিয়ে ও জানাজা না পড়িয়ে দাফন করতে অস্বীকার করেন মৌলভী সাহেব। তখন তারা দ্রুত করার কথা বলে। পরে পাশের একটি দোকান থেকে সাবান এনে গোসল করানো হয়। এরপর রিলিফের একটি সাদা কাপড় দিয়ে পরানো হয় কাফন। বঙ্গবন্ধুর জানাজাতে অংশ নেন মাত্র ৩০ জন। তাকে যখন হত্যা করা হয় এবং দাফন সম্পন্ন হয় তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিলেন বিদেশে। এখন মনে পড়লে এখন কষ্ট পাই।

যখন বঙ্গবন্ধুর লাশ টুঙ্গিপাড়ায় আনা হয়, তখন পরিস্থিতি কেমন ছিল? এমন প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, অনেক প্রভাবশালী লোকজন ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। পুরো এলাকায় আতঙ্ক ও ভীতি ছড়িয়ে পড়ে।

বঙ্গবন্ধুর বিচারের রায় পুরোপুরি কার্যকর না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, একজন দেশপ্রেমিক মানুষকে, দেশের স্থাপতিকে হত্যা করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তার পলাতক খুনিদের দেশে এনে বিচারের রায় কার্যকর করা হয়নি। দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

/এমপি/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সিলেটে ট্রাকের ধাক্কায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
সিলেটে ট্রাকের ধাক্কায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
আবারও জীবিত দুই জিম্মির ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস
আবারও জীবিত দুই জিম্মির ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
টিভিতে আজকের খেলা (২৮ এপ্রিল, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (২৮ এপ্রিল, ২০২৪)
সর্বাধিক পঠিত
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
তাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই