X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ভাসমান ক্ষেতে সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী কৃষক

বরিশাল প্রতিনিধি
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ০৯:৪৪আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ০৯:৪৯

ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ চলছে ভাসমান ক্ষেতে (ধাপ) সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকরা। জমির বিকল্প হিসেবে জলাশয়ে ভাসমান অবস্থায় ফসল চাষের এ পদ্ধতি এ অঞ্চলের কৃষকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। বছরের যে সময় এসব অঞ্চলের জমি পানিতে তলিয়ে থাকে তখন কৃষকরা এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করেন। 

ভাসমান সবজি চাষে বর্ষাকালীন ও শীতকালীন শাকসবজি উৎপাদনেও কৃষকরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ভাসমান সবজি চাষে বানারীপাড়া, আগৈলঝাড়া, উজিরপুর, গৌরনদী ও পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার কৃষকদের ভাগ্যের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। এ পদ্ধতিতে তারা বাণিজ্যিকভাবে লাউ, শিম, বেগুন, ফুলকপি, ওলকপি, বরবটি, করলা, পুঁইশাক, মিষ্টিকুমড়া, ধনেপাতা, ডাটা, টমেটো, আদা, হলুদ, পেঁপে ও মরিচের চারা উৎপাদন করে বিক্রি করে বেশ অর্থ উপার্জন করছেন।

ধাপে সবজি চাষ করেন মিনারা বেগম নামের এক গৃহবধূ। তিনি বলেন,‘ভাসমান ক্ষেতটির একটি বেড বা ধাপকে ট্যাপা, ফ্যানা ও কচুরিপানার মিশ্রণ দিয়ে তৈরি করা হয়। ছয় হাতে একনল বলা হয়। একটি বেড লম্বায় ১০-১৫ নলের মতো হয়। এসব ধাপ ইচ্ছে মতো নাড়াচাড়া করা যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটি ধাপে দীর্ঘদিন ফসল ফলানো যায়। আর পানি শুকিয়ে যাওয়ার পর সেই পচা কচুরিপানা জমিতে কম্পোস্ট সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। প্রথমে এ বেডে গাছের চারা উৎপাদন করা হয়। ২০ দিন পরেই এসব চারা বিক্রির উপযোগী হয়ে যায়। পরে ভাসমান খেতে সেই চারা রোপণ করা হয়।’

বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক রমেন্দ্র নাথ বাড়ৈ বলেন, কচুরিপানা কাজে লাগিয়ে সবজি উৎপাদন প্রযুক্তি কৃষকরাই প্রথম উদ্ভাবন করেছেন। এ পদ্ধতি দেশের জলাভূমিবেষ্টিত সব এলাকায় সম্প্রসারিত হলে বর্ষা মৌসুমে শাক-সবজির সংকট ঘুঁচবে। জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন কৌশল হিসেবে এ পদ্ধতির চাষাবাদে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার হয় না। ফলে চারা ও সবজি উভয়ই পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যসম্মত।

বরিশাল বিভাগে আগে চার হেক্টর জমিতে চারা/সবজি উৎপাদন হলেও কৃষি বিভাগের তৎপরতায় এখন তা প্রায় ৩০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। ফলে কৃষকরা এখন মুনাফা অর্জনের মাধ্যমে জীবন-জীবিকার মান পরিবর্তন করে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।

বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলা সদরের ভাসমান ক্ষেতের কৃষক শফিউল ইসলাম বলেন, ‘জলজ জঞ্জাল শ্যাওলা, ফ্যানা ও কচুরিপানা আমাদের কাছে আশীর্বাদ। এসব জলজ উদ্ভিদকে কাজে লাগিয়ে আমরা ফসল ও চারা উৎপাদনে বিপ্লব ঘটিয়েছি।’

আগৈলঝাড়ার রাজিহার এলাকার কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, ‘ভাসমান ক্ষেতের পরিচর্যা ও বাণিজ্যের কাজটি পুরুষরা করলেও চারা উৎপাদন ও রোপণের কাজটি নারীরা করে থাকেন।’

আরেক চাষি মনির উদ্দিন বলেন, ‘এভাবে চারা বা ফসল উৎপাদনে কোনও সারের প্রয়োজন হয় না। ১০ নলের একটি বেডের ভাসমান কান্দিতে ১২‘শ লাউ, চার হাজার পেঁপে কিংবা চার হাজার মরিচের চারা লাগানো যায়।

একটি ধাপের জন্য এখন খরচ হয় প্রায় পাঁচ হাজার টাকা। আর প্রতিবার ওই ধাপের চারা বিক্রি করা হয় প্রায় ১৫ হাজার টাকা।

তবে ফণী বিশ্বাস নামের এক চাষি বলেন, যতই চাষাবাদের এ পদ্ধতি জনপ্রিয় হচ্ছে ততই উপকরণের দাম বাড়ছে। আগে যে ফসলের বীজ/আটি ২০০ টাকায় কেনা যেত। তা এখন ৬০০-৭০০ টাকা লাগে।

 

 

/এসটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
তীব্র তাপদাহে মেয়েদের স্বস্তির সংবাদ দিলেন সালাউদ্দিন
তীব্র তাপদাহে মেয়েদের স্বস্তির সংবাদ দিলেন সালাউদ্দিন
বেসিস নির্বাচন: দেশের সফটওয়্যার খাতকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে চান ইকবাল আহমেদ
বেসিস নির্বাচন: দেশের সফটওয়্যার খাতকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে চান ইকবাল আহমেদ
টি স্পোর্টসে বাংলাদেশ-ভারত টি-টোয়েন্টি সিরিজ
টি স্পোর্টসে বাংলাদেশ-ভারত টি-টোয়েন্টি সিরিজ
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ব্যবসায়িক সম্মেলন
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ব্যবসায়িক সম্মেলন
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
তাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই