X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

বুড়ির বাঁধে মাছ ধরার উৎসব মানুষের ঢল

জাকির মোস্তাফিজ মিলু, ঠাকুরগাঁও
১৬ অক্টোবর ২০১৭, ১৮:৫৮আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০১৭, ১৯:২৪

ঠাকুরগাঁওয়ের শুক নদীর তীরে বুড়ির বাঁধ এলাকায় মাছ ধরার উৎসব শুরু হয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের শুক নদীর তীরে বুড়ির বাঁধ এলাকায় মাছ ধরার ধুম পড়েছে। খেওয়া জাল, পলো আর মাছ রাখার পাত্র খলই নিয়ে ভোর থেকেই এই এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন হাজার হাজার মানুষ। বাঁধের গেট খুলে দেওয়ার পরই মাছ ধরতে নেমে যান আশপাশের কয়েক গ্রামের শত শত বাসিন্দা। আর বাঁধে দাঁড়িয়ে তাদের উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন বন্ধু-বান্ধব ও স্বজনরা। আজ সোমবার (১৬ অক্টোবর) ভোর থেকে শুরু হওয়া মাছ ধরার এই উৎসব চলবে আরও কয়েকদিন।
সোমবার সকালে বুড়ির বাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, সারাদিন ধরে মাছ ধরার জন্য আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ যেন ভেঙে পড়েছে নদীর তীরে। কেবল পুরুষরাই নয়, নারী-শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও নেমে পড়েছেন মাছ ধরতে। কারও হাতে খেওয়া জাল, কারও হাতে লাফি জাল, কারও হাতে পলো। অনেকেই কোনও সরঞ্জাম ছাড়া খালি হাতেই নেমে পড়েছেন মাছ ধরতে। সব মিলিয়ে উৎসবমুখর একটি পরিবেশ বিরাজ করছে শুক নদীর তীরে।
এই উৎসবে আবার কেবল মাছ ধরতেই সবাই ব্যস্ত নেই, কেউ কেউ ব্যস্ত হয়েছেন অন্য কাজেও। বাঁধের বিভিন্ন জায়গায় বসেছে খাবারের হোটেল, ফলের দোকান, খেলনা ও প্রসাধনীর দোকান। বাইরে থেকে আসা মানুষের মোটরসাইকেল ও সাইকেল রাখার জন্য তৈরি হয়েছে অস্থায়ী গ্যারেজও।
স্থানীয়রা বলছেন, ১৯৮২ সালের দিকে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষি জমির সেচ সুবিধার জন্য সদর উপজেলার আকচা ও চিলারং ইউনিয়নের সীমানায় শুক নদীতে বুড়ির বাঁধ নামের একটি জলকপাট নির্মাণ করা হয়। জলকপাটে আটকে থাকা পানিতে প্রতিবছর মৎস্য অধিদফতর বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা ছাড়ে। এ পোনাগুলো যেন কেউ ধরতে না পারে, তা দেখভাল করে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ। পরে শীতের শুরুতে এখানকার মাছ ধরার জন্য জলকপাট উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এভাবেই ওই সময় থেকে প্রতিবছর এলাকাবাসী পালন করে আসছে মাছ ধরার উৎসব।
মাছ ধরার উৎসবে যোগ দিয়েছেন আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ মাছ ধরতে আসা জেলেরা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, জলকপাট আগামী কয়েকদিন খোলা থাকবে। মাছ ধরাও চলবে এই কয়েকদিন। তবে প্রথম দিনেই মাছ ধরার জন্য মানুষের ভিড় সবচেয়ে বেশি হয়।
আকচা গ্রাম থেকে মাছ ধরতে আসা আব্দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের গ্রামে এ দিনটিতে মেয়েরা বাপের বাড়িতে নাইওর আসে। আর মাছ ধরার পর চলে খাওয়ার উৎসব।’
স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরাও বছরের এই সময়টির জন্য উন্মুখ হয়ে থাকেন। মাছ কিনতে শুরুর দিন সকাল থেকেই ভিড় করেছেন তারাও। অনেকেই স্থানীয়দের কাছ থেকে মাছ কিনে বাঁধেই বিক্রি করছেন, কেউ কেউ মাছ নিয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছেন শহরের বাজারে।
মাছ কিনতে আসা পাইকারী ব্যবসায়ী পরিমল রায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভোর থেকে মাছ কিনতে শুরু করেছি। এ পর্যন্ত (সকাল ১১টা) ৩০ হাজার টাকার মাছ কিনতে পেরেছি। ওইসব মাছ বাজারে পাঠিয়ে দিয়েছি। আশা করছি, ভালো লাভ হবে এবার।’
সদর উপজেলার চেয়ারম্যান তৈমুর রহমান বলেন, ‘এ জায়গাটি আমার গ্রামের অনেক কাছাকাছি। এরকম মাছ ধরা উৎসব নিয়ে আমাদের অনেক স্মৃতি। প্রতিবছর এখানে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে মেলা বসে। শুধু গ্রাম নয়, শহরের মানুষও এখানে মাছ ধরার জন্য ভিড় করেন।’
আরও পড়ুন-
টিফিনের সময় পেট ভইরা কলের পানি খাই

কালীগঞ্জে চুরি-ডাকাতি প্রতিরোধে জঙ্গল পরিষ্কার করলেন ইউএনও

 

আমন ক্ষেতে পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ, ফসলহানির শঙ্কায় চাষিরা

/টিআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বার্সেলোনার ‘প্রতিশোধ’ মাদ্রিদ ওপেনে নিলেন নাদাল
বার্সেলোনার ‘প্রতিশোধ’ মাদ্রিদ ওপেনে নিলেন নাদাল
অস্ত্র ও গুলিসহ ৫ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী আটক
অস্ত্র ও গুলিসহ ৫ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী আটক
পরীমণির মাদক মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ পেছালো
পরীমণির মাদক মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ পেছালো
রুমায় জঙ্গলে পড়ে ছিল গুলিবিদ্ধ দুই মরদেহ
রুমায় জঙ্গলে পড়ে ছিল গুলিবিদ্ধ দুই মরদেহ
সর্বাধিক পঠিত
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
তাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে