মৌলভীবাজার শহরে ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
নিহত দুই জন হলেন, মোহাম্মদ আলী সাহবাব (২২) ও নাহিদ আহমদ মাহি (১৬)। নিহত দুই জনই জেলা ছাত্রলীগের কর্মী। নিহত দুই জনের মধ্যে মোহাম্মদ আলী সাহবাব শহরের পুরাতন হাসপাতাল এলাকার আবু বকর সিদ্দিকীর ছেলে। সে মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। আর নাহিদ আহমদ মাহি কনকপুর ইউনিয়নের দূর্লভপুর গ্রামের বিল্লাল মিয়ার ছেলে। সে এসএসসি পরীক্ষার্থী।
পুলিশ জানায়, সন্ধ্যার দিকে একদল দুর্বৃত্ত সাহবাব ও মাহিকে সরকারি স্কুল মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
মাহির বাবা বিল্লাল মিয়া বলেন, ‘আমার ছেলে এসএসসি পরীক্ষা দেবে। সে প্রাইভেট পড়ার কথা বলে সকাল ৮টার দিকে বাসা থেকে বের হয়। এরপর আর বাসায় ফেরেনি। আমার সব শেষ হয়ে গেছে।’
নিহত শাবাবের মামা রাফাত চৌধুরী বলেন, ‘সাহবাব ছাত্রলীগের একজন কর্মী। কিন্তু কি কারণে এ ঘটনা ঘটল, জানি না।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিহত দুই জনই জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রনির পক্ষের কর্মী। তবে সাইফুর রহমান রনি বলেন, ‘আমি ঢাকা থেকে মৌলভীবাজারে ফিরছি। যতটুকু জেনেছি, ক্রিকেট খেলা নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।’ তিনি আরও দাবি করেন, সাহবাব ছাত্রলীগ সমর্থক হলেও মাহি সংগঠনের কেউ না।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান রনি বলেন, ‘এরা ছাত্রলীগের কর্মী নন। তারা মেয়র ফজলুর রহমান গ্রুপের লোক। তবে কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, কিছুই জানি না।’
মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র মো. ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমি তো অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে শ্রীমঙ্গলে আছি। নিহতরা আমার পক্ষের লোক নয়।’
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মো. শাহজালাল বলেন, ‘ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় এখনও কাউকে আটক করতে পারিনি। অভিযান অব্যাহত আছে। পুরো শহরজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।’