X
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১

সিজারের সময় নবজাতককে দুই খণ্ড!

কুমিল্লা প্রতিনিধি
২৪ মার্চ ২০১৮, ২১:২১আপডেট : ২৫ মার্চ ২০১৮, ১০:৪৯

কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (ফাইল ছবি)

কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে প্রসূতির অপারেশনের সময় এক নবজাতকের মাথা কেটে দ্বিখণ্ডিত করেছেন চিকিৎসকরা। একইসঙ্গে প্রসূতি মা জুলেখা বেগমের (৩০) জরায়ুও কেটে ফেলেছেন তারা। প্রসূতির জীবন রক্ষার জন্যই এমন কাজ করেছেন বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা। ঘটনাটি এক সপ্তাহ আগে ঘটলেও শনিবার (২৪ মার্চ) বিষয়টি  জানানো হয়।

ভুক্তভোগী জুলেখা বেগম কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের সফিক কাজীর স্ত্রী। এখনও তিনি কুমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৭ মার্চ রাতে প্রসববেদনা নিয়ে কুমেক হাসপাতালে ভর্তি হন জুলেখা বেগম। পরদিন ১৮ মার্চ দুপুরে গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. করুণা রানী কর্মকারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের চিকিৎসক দল জুলেখা বেগমের অপারেশন করেন। এ সময় ডা. করুণা রানী কর্মকার ছাড়াও ডা. নাসরিন আক্তার পপি, ডা. জানিবুল হক, ডা. দিলরুবা শারমিন ও ডা. আয়েশা আফরোজ অংশ নেন।

প্রসূতির স্বামী সফিক কাজী অভিযোগ করেন, প্রসব বেদনায় ছটফট করলেও ১৭ মার্চ তার স্ত্রীকে অপারেশনের কোনও উদ্যোগ নেননি ডাক্তাররা। পরদিন দুপুরে জুলেখার অপারেশন করা হয়। এ সময় তাদের নবজাতক ছেলের মাথা বিচ্ছিন্ন এবং জুলেখা বেগমের জরায়ু কেটে ফেলা হয়।

সফিক কাজী বলেন, ‘ওইদিন হাসপাতালের এক দারোয়ান এসে আমার কাছে মৃত নবজাতককে মাটিচাপা দেওয়ার জন্য ৫শ’ টাকা চান। আমি ৩শ’ টাকা দেই। পরে ওই দারোয়ান হাসপাতালের বারান্দা দিয়ে নবজাতকের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার সময় দেখতে পাই আমার সন্তানের মাথা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন। এ সময় আমি মোবাইল ফোনে দ্বিখণ্ডিত নবজাতকের ছবি তুলে রাখি। এরপর দারোয়ান হাসপাতালের অদূরে নিয়ে নবজাতককে মাটিচাপা দেয়।’

শনিবার কুমেক হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের অতিরিক্ত বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন জুলেখা বেগম। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘ডাক্তাররা আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। হাসপাতালে আসার পরও আমার পেটে সন্তান নড়াচড়া করছিল। আমি সিজারের কথা বললেও তারা (ডাক্তার) রাতে সিজার করেনি। ডাক্তার আমার জরায়ুপথে পেটের ভেতর হাত দিয়ে টানাটানি করে আমার সন্তান নষ্ট করে ফেলেছে।’

অপারেশনে অংশ নেওয়া ডা. নাসরিন আক্তার পপি, ডা. আয়েশা আফরোজ, ডা. জানিবুল হক, ডা. দিলরুবা শারমিন দাবি করেন, ‘প্রসূতির গর্ভের সন্তান মৃত ও অস্বাভাবিক পজিশনে ছিল। তাই দেহ ও মাথা বিচ্ছিন্ন করে আলাদাভাবে শিশুটিকে বের করা হয়েছে। এ সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে রোগীর জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমরা জরায়ু কেটে ফেলি। অপারেশনের আগে এসব বিষয়ে প্রসূতির স্বামীর অনুমতি নেওয়া হয়েছে। এতে ডাক্তারদের কোনও অবহেলা ছিল না।’

হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মতিউর রহমান বলেন, ‘প্রসূতির জীবন রক্ষার্থে ডাক্তাররা অপারেশন করে গর্ভের সন্তান দুই খণ্ডে বের করে আনেন। এক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ সঠিক কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

/এমএ/চেক-এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
শনিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান চলবে
শনিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান চলবে
ডিবি পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ গেলো ব্যবসায়ীর
ডিবি পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ গেলো ব্যবসায়ীর
ভুয়া মৃত সনদ নিজেই তৈরি করতো মিল্টন: হারুন অর রশীদ
ভুয়া মৃত সনদ নিজেই তৈরি করতো মিল্টন: হারুন অর রশীদ
রাফাহতে ইসরায়েলি হামলা ঠেকাতে ডেমোক্র্যাটদের চাপের মুখে বাইডেন
রাফাহতে ইসরায়েলি হামলা ঠেকাতে ডেমোক্র্যাটদের চাপের মুখে বাইডেন
সর্বাধিক পঠিত
শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখ মুছলেন র‌্যাব কর্মকর্তা
শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখ মুছলেন র‌্যাব কর্মকর্তা
মিল্টন সমাদ্দার আটক
মিল্টন সমাদ্দার আটক
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
একজন অপরাধীর গল্প বলতে চেয়েছিলেন তিশা
একজন অপরাধীর গল্প বলতে চেয়েছিলেন তিশা
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি