কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১০টি ঘরে ডাকাতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। একদল সশস্ত্র ও মুখোশধারী ডাকাত এ ঘটনা ঘটায় বলে জানা গেছে। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাত আড়াইটার দিকে হ্নীলা ইউনিয়নের লেদার আলীখালি ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতরা ১০টি ঘর থেকে ১০ ভরি স্বর্ণ ও প্রায় ২ লাখ টাকা লুট নিয়ে যায় বলে দাবি করেছে রোহিঙ্গারা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফের নয়াপাড়া শরণার্থী ক্যাম্প পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ মনির।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, ডাকাতরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বি-নাইন এলাকার ১০টি ঘরে হামলা চালায়। প্রতি ঘরে চারজন করে ডাকাত ঢোকে। তারা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্বর্ণ ও টাকা লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতরা যাওয়ার সময় ফাঁকা গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে পাহাড়ের দিকে ঢুকে পড়ে। তাদের অধিকাংশের পরনে লুঙ্গি ও গেঞ্জি ছিল। তবে কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ডাকাতির শিকার পরিবারের সদস্যরা হলো– টেকনাফের লেদার আলীখালির রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বি-নাইনের বাসিন্দা নুর হোসেন, আবদুর রহমান, জাকির হোসেন, সায়রা খাতুন, মো. কাসিম, মো. সিরাজুল, রফিক, মো. ইসমাইল, ইমান ও গুড়া মিয়া।
এসআই মোহাম্মদ মনির বলেন, ‘ডাকাতির খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পায়নি। এ ঘটনা কারা ঘটিয়েছে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, রোহিঙ্গা ডাকাতরা এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। পুলিশ গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি তদন্ত করছে।’
ডাকাতির শিকার নুর হোসেন বলেন, ‘হঠাৎ ঘরে অস্ত্রসহ মুখোশধারী চারজন লোক ঢুকে পড়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে ঘরে কী আছে বের করতে বলে। ছোট মেয়ের একটি কানের দুল ছিল। সেটি দিয়ে দিই প্রাণভয়ে। পরে শুনেছি আরও বেশ কয়েকটি ঘরে ঢুকে ডাকাতি করে তারা।’
আলীখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল জানান, ‘ডাকাতির বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে। অস্ত্রধারীরা ঘরে ঢোকায় ক্যাম্পের বাসিন্দারা ভয়ের মধ্যে রয়েছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন রোহিঙ্গা জানান, ক্যাম্পের পেছনের পাহাড়ে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের দুটি গ্রুপ আস্তানা গেড়েছে। এছাড়া গ্রামের সশস্ত্র একটি বাহিনী রয়েছে। দিনে পাহাড়ে আর রাতে ক্যাম্পে থাকে তারা। এসব গ্রুপের আবদুল হাকিম, মোহাম্মদ সেলিম, কামাল, মো. আমিন, জুহুর আলম, শাহ নেওয়াজ, জমির আহমদ, জহির আলম ও মো. হাসানসহ দুই শতাধিক সদস্য রয়েছে। তারাই এ ধরনের ঘটনার ঘটায়। এছাড়া খুন, ধর্ষণ, ইয়াবা কারবার, মানব পাচার, অপহরণ প্রভৃতি অপরাধে তারা জড়িত।