যশোরে ইবনে সিনা হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ফার্মেসিতে বেশি দামে ওষুধ বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাতে এক রোগীর স্বজনদের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ার পর উল্টো তাদের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেয় ফার্মেসির কর্মচারীরা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিলেও ইবনে সিনার ওই শাখার ব্যবস্থাপককে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বাড়তি দাম নেওয়ার পক্ষে সাফাই গাইতে দেখা গেছে।
যশোর শহরের লোন অফিসপাড়ার বাসিন্দা মুকুল হোসেন অভিযোগ করেন, শুক্রবার বিকেলে তার এক স্বজনের মেরুদণ্ডে অপারেশন করা হয়েছে। অপারেশনের পর রোগীর ডায়াবেটিসসহ অন্য সমস্যা দেখা দিলে ওই রাতেই ইবনে সিনা হাসপাতালে এনে তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। ওই সময় ডাক্তার ওষুধসহ বিভিন্ন দরকারি জিনিস কেনার জন্য প্রেশক্রিপশনে লিখে দেন। তার স্ত্রী মাজেদা রহমান হাসপাতালের নিজস্ব ফার্মেসি থেকে সেগুলো সংগ্রহ করেন। দাম নেওয়া হয় ২৫শ’ টাকা।
মুকুলের অভিযোগ, ওই বিল দিয়ে বাইরের দোকানে যাচাই করতে গিয়ে জানতে পারি, হাসপাতালটির ফার্মেসিতে প্রতিটি ওষুধের অতিরিক্ত দাম নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রেসক্রিপশনে লেখা ওষুধের মধ্যে সাডিব বি কার্ব নামে একটি ইনজেকশনের দাম মাত্র ২৫ টাকা। কিন্তু ফার্মেসিতে নেওয়া হয়েছে ৪৫ টাকা করে। এক্সটেনশন টিউব যার দাম ২২ থেকে ২৫ টাকা, সেগুলো নেওয়া হয়েছে ৬০ টাকা করে। মুকুল হোসেনের দাবি, এভাবে প্রতিটি ওষুধের দাম বাড়িয়ে নেওয়ায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি বাড়তি দাম নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে অভিযোগ করলে ফার্মেসির কর্মচারীরা উল্টে তাদের শাসাতে থাকে। বাধ্য হয়ে তারা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে ফার্মেসির লোকজনের সুর পাল্টাতে থাকে। তারা তখন ভুল স্বীকার করে টাকা ফেরত দিতে চায়। কিন্তু তারা টাকা নেননি।
মুকুল হোসেন বলেন, আমি জাতীয় ভোক্তাধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের যশোর অফিসে লিখিত অভিযোগ করবো যাতে তারা অন্য কারও কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতে না পারে।
মাজেদা রহমান বলেন, ফার্মেসির লোকজন আমার সঙ্গে মারাত্মক দুর্ব্যবহার করেছে। পুলিশের সামনে টাকা ফেরত দিতে চাইলেও আগে অনেক কটু কথা বলেছে। এদের বিচার হওয়া উচিত।
জানতে চাইলে ইবনে সিনা হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপক মফিজুর রহমান তারেক বলেন, সাডিব বি কার্ব ওষুধের বাজার দর ২৫ টাকা- এটা ঠিক আছে। তবে, আমরা বেশি দামে কিনি, তাই বেশি দামে বিক্রি করছি।
কোতোয়ালি থানার ইনসপেক্টর (তদন্ত) সমীর সরকার বলেন, রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়েছে।