সৌদি আরবের জেদ্দায় বুধবার সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত তিন প্রবাসী বাংলাদেশির একজন হলেন নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার উত্তর কাচিকাটা গ্রামের মৃত কাজল মিয়ার ছেলে কাউছার মিয়া (২২)।
এই মৃত্যুর খবরে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। আহাজারি করে সন্তানের মুখ দেখতে চাইছেন মা রাবেয়া বেগম।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, ১৫ বছর আগে সৌদি আরবেই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান কাউছারের পিতা কাজল মিয়া। স্বামী কাজল মিয়ার মৃত্যুর পর থেকে শিশু সন্তান কাউছারকে সঙ্গে নিয়ে পাশ্ববর্তী কৃষ্ণপুর গ্রামে বাবার বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন মা রাবেয়া বেগম। মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে দেড় বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমান কাউছার। প্রথম কিছুদিন কাজ না পেলেও পরবর্তীতে কাজও পেয়ে যান। সৌদি আরবে পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন তিনি। সেখানে এক মামার সঙ্গে পাশাপাশি বাসায় থাকতেন কাউছার।
সর্বশেষ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ছেলে কাউছারের সঙ্গে ফোনে কথা হয় মা রাবেয়া বেগমের। এসময় মায়ের খোঁজখবর নেওয়াসহ নিজের জন্য দোয়া চান কাউছার।
স্বামী-সন্তান হারানো রাবেয়াকে সান্ত্বনা দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন প্রতিবেশী ও স্বজনরাও। বুধবার বিকেলে ফোনের মাধ্যমে কাউছারের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে বিলাপ করছেন তিনি।
শোকাহত মা রাবেয়া বেগম বলেন, ‘স্বামী সন্তান হারানোর পর এখন আমার আর কেউ রইলো না। আমি কী নিয়ে বাঁচবো? শেষবারের মত সন্তান কাউছারের মুখ দেখতে চাই।’
কাউছারের মামা মো. আজহারুল বলেন, ‘ভাগ্নে কাউছারই ছিল আমার বোনের একমাত্র ভরসা। কাউছারকে নিয়ে সুখে শান্তিতে বেঁচে থাকতে চেয়েছিলেন। অভাব অনটন দূর করতে বিদেশে গিয়ে সে নিজেই যে এভাবে পরপারে চলে যাবে, ভাবেনি কেউ। দ্রুত কাউছারের লাশ দেশের মাটিতে ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাতে জেদ্দা শহরের বাইরে এই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে নিহতরা সবাই সৌদির ইয়ামামা কোম্পানিতে পরিছন্নতা কর্মী হিসেবে কাজ করতে।