X
বুধবার, ০১ মে ২০২৪
১৮ বৈশাখ ১৪৩১

ক্লিনিক-হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ, বিপদে রোগীরা

মাসুদ আলম, কুমিল্লা
০৯ এপ্রিল ২০২০, ১৩:৪৭আপডেট : ০৯ এপ্রিল ২০২০, ১৪:৩১

কুমিল্লা

করোনা আতঙ্কের কারণে চিকিৎসকশূন্য হয়ে পড়েছে কুমিল্লা। প্রায় পাঁচ শতাধিক ছোট-মাঝারি-বড় আকারের হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ হয়ে পড়েছে। ফলে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে রোগীদের। সাধারণ থেকে জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীরা একাধিক হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসকদের দেখা পাচ্ছেন না।

জানা যায়, ২৮ মার্চ কুমিল্লার বুড়িচং থেকে এক প্রসূতি অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনরা তাকে কুমিল্লায় নিয়ে আসে চিকিৎসার জন্য। প্রথমে কুমিল্লা মেডিকেল সেন্টার (টাওয়ার) হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক স্বজনদের জানান, আলট্রাসনোগ্রাফি করানো ছাড়া তিনি কিছুই করতে পারবেন না। ডাক্তার না থাকায় আলট্রাসনোগ্রাফির কোনও ব্যবস্থা করা যায়নি। পরে গুরুতর অবস্থায় কুমিল্লা মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আলট্রাসনোগ্রাফি এবং ডাক্তার কোনোটাই পায়নি। নিয়ে যাওয়া হয় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে, সেখানেও আল্ট্রাসনোগ্রাফির জন্য কোনও চিকিৎসাসেবা দিতে পারেনি চিকিৎসক। শেষ পর্যন্ত ওই প্রসূতি মৃত্যুবরণ করে।

তার শ্বশুর মেজর আবদুর রউফের দাবি, ওইদিন হাসপাতালে নেওয়ার পর ভালো ডাক্তার এবং চিকিৎসাসেবা পেলে তার ছেলের বউকে এভাবে চোখের সামনে হারাতে হতো না।

মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা যায়, আগের মতো বিভিন্ন রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের রুমের সামনে রোগী ও তার স্বজনদের ভিড় নেই। দরজায় দরজায় তালা ঝুলছে।

এদিকে টমছম ব্রিজে ইউনাইটেড হাসপাতাল এবং এশিয়া ক্লিনিক নামে দুটি প্রতিষ্ঠান চিকিৎসকের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।

কুমিল্লা মেডিক্যাল সেন্টার (টাওয়ার) বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়- ডাক্তার এবং রোগীশূন্য। চার ভাগের তিন ভাগ চিকিৎসকের দরজা তালাবদ্ধ। অনেক চিকিৎসব ঘোষণা দিয়ে দরজায় বিজ্ঞপ্তি সাঁটিয়েছেন- অনির্দিষ্টকালের জন্য তারা রোগী দেখবেন না। বাকিরা ঘোষণা না দিয়েই রোগী দেখছেন না।

বেসরকারি চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান কুমিল্লার মুন হাসপাতালে গিয়েও একই দৃশ্য দেখা যায়। হাতেগোনা দুই-তিন জন চিকিৎসক ছাড়া অধিকাংশের দরজা তালাবদ্ধ। চিকিৎসকদের না পেয়ে হতাশা নিয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে রোগী ও তার স্বজনদের।

একই অবস্থা কুমিল্লার ট্রমা সেন্টারেও। সেখানেও অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দরজায় বিজ্ঞপ্তি ঝুলছে।

সরেজমিনে গিয়ে আরও জানা যায়- টাওয়ার, মুন ও ট্রমা হাসপাতালের মতো সিডিপ্যাথ, মডার্ন, মিডল্যান্ড, মুক্তি ও পপুলার হাসপাতালেও একই দৃশ্য।

চিকিৎসকদের নোটিশ দিয়ে রোগী না দেখার প্রসঙ্গে কুমিল্লা মেডিক্যাল সেন্টার (টাওয়ার) হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ওমর ফারুক সুজন জানান, করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে চিকিৎসকরা স্বেচ্ছায় হাসপাতালে আসা কমিয়ে দিয়েছেন। রোগী না দেখার যে নোটিশ সাাঁটানো হয়েছে সেটার কারণ বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখার জন্য।

তিনি আরও জানান, প্রথম দিকে রোগী দেখায় চিকিৎসকরা পিপিই সংকট থাকার অজুহাত দেখলেও বর্তমানে হাসপাতাল থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণের পিপিই দেওয়া হয়েছে। আমরা জোর করতে পারছি না। তাদের দায়িত্ব ও ইচ্ছার উপর নির্ভর করছে।

কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মো. নিয়াতুজ্জামান জানান- কুমিল্লার ডিসি, এসপি, বিএমএ, স্বাচিপ এবং চিকিৎসক নেতাদের মাধ্যমে ডাক্তারদের একাধিকবার অনুরোধ করা হয়েছে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। যেন সাধারণ মানুষ ও রোগীরা দুর্ভোগে না পড়েন সেজন্য তাদের আহ্বান করা হয়েছে চেম্বারে ফিরে আসার জন্য।

 

 

 

/এএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
হংকংয়ে টানা ১০ হাজার বজ্রাঘাত
হংকংয়ে টানা ১০ হাজার বজ্রাঘাত
বিরোধ উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষকদের: আমরা কেন হল ছাড়বো, প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধের প্রতিবাদবিরোধ উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষকদের: আমরা কেন হল ছাড়বো, প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের
প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের সময় পেছালো
প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের সময় পেছালো
শ্রমিক লীগের জনসভা শুরু
শ্রমিক লীগের জনসভা শুরু
সর্বাধিক পঠিত
চকরিয়ার সেই সমাজসেবা কর্মকর্তা ও অফিস সহকারী বরখাস্ত
চকরিয়ার সেই সমাজসেবা কর্মকর্তা ও অফিস সহকারী বরখাস্ত
সাতক্ষীরার ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড 
সাতক্ষীরার ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড 
কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টিতে ভেঙেছে ঘরবাড়ি, ধানের ক্ষতি
কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টিতে ভেঙেছে ঘরবাড়ি, ধানের ক্ষতি
‘মানুষের কত ফ্রেন্ড, কাউকে পাশে পাইলে আমার এমন মৃত্যু হইতো না’
‘মানুষের কত ফ্রেন্ড, কাউকে পাশে পাইলে আমার এমন মৃত্যু হইতো না’
শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখ মুছলেন র‌্যাব কর্মকর্তা
শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখ মুছলেন র‌্যাব কর্মকর্তা