X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১

চতুর্থবারের মতো ডুবলো ফসলের ক্ষেত

হিমাদ্রি শেখর ভদ্র, সুনামগঞ্জ
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২০:৫১আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২১:৪৩

ফসলের মাঠে পানি ছাড়া কিছুই দেখায় যায় না গত কয়েক দিনের বর্ষণ ও সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের সুরমা, যাদুকাটা, রক্তি, খাসিয়ামারা, চলতি নদীসহ সবক’টি নদীর পানি বাড়ছে। আজ শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরের পর থেকে সুরমা নদীর পানি বেড়ে প্লাবিত হয়েছে নদী তীরবর্তী এলাকার গ্রামগুলো। এদিকে সদর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার উপজেলার আমন চাষিরা জানান, আজ সকালে থেকে তাদের রোপা আমনের ক্ষেত পাহাড়ি ঢলের পানিতে ডুবে গেছে। দ্রুত পানি সরে না গেলে রোপা আমন ক্ষেত পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে।

তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর এবং সুনামগঞ্জ-সাচনা সড়কের নিচু ও ভাঙা অংশ দিয়ে ঢলের পানি উপচে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এর আগে পর পর তিন দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এসব সড়কের বিভিন্ন অংশ ভেঙে যাওয়ায় সহজেই ঢলের পানি সড়ক উপচে হাওরে প্রবেশ করছে। ফলে তলিয়ে যাচ্ছে ফসলের ক্ষেত। সুনামগঞ্জে সব নদীর পানি বাড়ছে

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৪২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তাই নদীগুলো দিয়ে ঢলের পানি প্রবেশ করছে। সুরমা নদীর পানি আজ সন্ধ্যা ৬টায় বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ৩ ঘণ্টায় ৪ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। এছাড়া সুনামগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

তিনি আরও জানান, আগামীকাল শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) থেকে সুরমা নদীর পানি হ্রাস পেতে পারে। তবে উজানের ঢল নামা অব্যাহত থাকলে পানি সরে যেতে কিছুটা সময় লাগবে। অতিরিক্ত বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে

সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামের আমন চাষি আব্দুল ওয়াহিদ বলেন, ‘আজ সকাল থেকে আমাদের এলাকার জমিতে নদীর পানি প্রবেশ করছে। দুপুরের মধ্যেই পুরো জমি পানিতে ডুবে যায়। এখন জমিতে পানি আর পানি, এছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না।’

রাধানগর গ্রামের জসীম উদ্দিন বলেন, ‘এর আগে পর পর তিনবার বন্যার কারণে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এরপরও চাষিরা ধার-দেনা করে জমিতে রোপা আমন বুনেছিলেন। এখন চতুর্থবারের মতো আমাদের জমি পানিতে ডুবে গেছে।’ অতিরিক্ত বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে

লালপুর গ্রামের জামাল উদ্দিন বলেন, ‘বন্যার ক্ষয়ক্ষতি এখনও কোনও কৃষক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। চতুর্থবারের মতো আমন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন জমি নষ্ট হয়ে গেলে আর চাষাবাদ করার সময় বা সামর্থ্য কোনও কিছুই আমাদের নাই।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. সফর উদ্দিন বলেন, ‘এ পর্যন্ত সদর, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার আড়াই হাজার হেক্টর আমন জমি ঢলের পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। দুই একদিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে তেমন কোনও ক্ষতি হবে না। তবে পানিতে দেরিতে নামলে ক্ষয়ক্ষতি বাড়বে।’ অতিরিক্ত বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে

জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আহাদ শুক্রবার বিকালে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে জানান, ‘পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে প্রশাসন। ইতোমধ্যে উপজেলা পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়ে। যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের প্রস্তুতি রয়েছে।’

আরও পড়ুন- উজানের ঢল আর নদীভাঙনে নাকাল কুড়িগ্রামের বিস্তীর্ণ জনপদ

/এফএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ