যশোর শহরের ধর্মতলা ও পালবাড়ি খয়েরতলা মহাসড়কের বিটুমিন গলে যাচ্ছে। গত তিন দিন ধরে যশোরে ৩৯ দশমিক দুই থেকে ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এ কারণে গোটা জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জানা গেছে, অতিরিক্ত তাপমাত্রায় মহাসড়কের বিটুমিন গলে যাচ্ছে।
জানতে চাইলে যশোর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘শুনেছি রাস্তার বিটুমিন গলে যাচ্ছে। অফিস থেকে লোক পাঠিয়েছি সংশ্লিষ্ট এলাকায়। তিনি ফিরে আসার পর বিস্তারিত বলতে পারবো।’
এক প্রশ্নের জবাবে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘পালবাড়ি খয়েরতলা এলাকার রাস্তা পাঁচ-সাত বছর আগের তৈরি। সড়কে সাধারণত দুটি গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার করা হয়। আগে ৩০ থেকে ৩২ ডিগ্রি তাপমাত্রার জন্য সড়কে ৮০/১০০ গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার করা হতো। পরে গবেষণা করে বেশি তাপমাত্রা সহনশীল ৬০/৭০ গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার করা হচ্ছে। এই গ্রেডের বিটুমিনের দামও বেশি।’
যশোর বিমানবন্দর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ঘাঁটি সংশ্লিষ্ট আবহাওয়া দফতর থেকে জানা যায়, শুক্রবার যশোরে সর্বোচ্চ ৪০. ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ২৪ শতাংশ। এর আগের দিন যশোরে তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৪০. ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ১২ এপ্রিল তাপমাত্রা ছিল ৩৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শহরের রিকশাচালক আবুল কাশেম বলেন, ‘গত দুই দিন ধরে বেলা ১২টার পর ৪টা পর্যন্ত শহরে লোকসমাগম খুবই কম। সামান্য খাটুনিতেই প্রাণ বেরিয়ে যাওয়ার জো। ঘন ঘন পানি খেতে হচ্ছে, পেটের জ্বালায় বের হতে হয়।’
যশোর সদরের কৃষ্ণবাটি এলাকার ওসমান আলী শহরে এসেছিলেন সন্তানদের কাপড়চোপড় কিনতে। তিনি বলেন, ‘এই সময়ে তাপমাত্রা বেশি থাকে। কিন্তু আজ তিন-চার দিন এত বেশি যে রাস্তায় বের হওয়া দায়। গা দিয়ে দড়দড় করে ঘাম বের হচ্ছে। গলা শুকিয়ে কাঠ, রোজা আছি, খুব কষ্ট হচ্ছে।’
যশোর কলেজের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক মহসিন আলী বলেন, ‘সাড়ে ৪টার দিকে শানতলা থেকে পালবাড়ি হয়ে শহরে ঢুকেছি। সূর্যের তেজ যেমন, রাস্তা থেকেও একই রকম ঝাঁজালো তেজ চোখেমুখে লাগছে। মনে হচ্ছে গরম হাড়ি থেকে বাষ্প বের হয়ে চোখ-মুখ পুড়িয়ে দিচ্ছে।’