চট্টগ্রাম মহানগরীতে কী কারণে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে তা জানে না চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। জলাবদ্ধতার চার দিন পর কারণ খোঁজা শুরু করেছেন চসিক কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিকালে এ নিয়ে সভা করেছে চসিক।
টাইগারপাসে চসিক কার্যালয়ে আয়োজিত কারণ অনুসন্ধানের এই সভায় একাধিক কাউন্সিলর চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (সিডিএ) দ্রুত জলাবদ্ধতা প্রকল্প শেষ করার তাগিদ দেওয়ার জন্য মেয়রের কাছে আবেদন জানান। কাউন্সিলররা বলেন, ‘জনপ্রতিনিধিদের নিজ নিজ এলাকা সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকায় সিডিএ'র জলাবদ্ধতা নিরসণ প্রকল্পে তাদের সম্পৃক্ত করা এবং পরামর্শ নেওয়া উচিত ছিল। এটি করা হয়নি বলেই জলাবদ্ধতা নিরসণ প্রকল্প জনস্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থ হচ্ছে।’
চট্টগ্রাম সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি, ঢলের পানি, জোয়ার আর অসমাপ্ত প্রকল্প– সব মিলিয়ে চট্টগ্রাম তো বটেই, বান্দরবান আর সাতকানিয়ার মতো এলাকায়ও পানি উঠেছে। আমরা পানিবন্দি মানুষদের বাসায় খাবার পৌঁছে দিচ্ছি। মানুষ কষ্টে আছে। আমরা দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য কাজ করছি।’
মেয়র চসিক প্রকৌশল বিভাগকে ড্রেনেজ ব্যবস্থার আরও উন্নয়নে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা তৈরির নির্দেশনা প্রদান করেন।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সংস্কারকাজের ক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং জনগণের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে। এবারের জলাবদ্ধতা মোকাবিলার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এমনভাবে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে নগরীতে এ ধরনের পরিস্থিতি না হয়।’
প্রবল বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের বিবরণ এবং তা সংস্কারের কৌশল তুলে ধরে চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক বলেন, ‘বৃষ্টির পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কারে আমরা কাজ করছি। যেসব পয়েন্টে বিভিন্ন বাধার কারণে পানি জমে আছে, সেসব বাধা সরানোর জন্য কাজ চলছে। কয়েকটি সরকারি সংস্থা ইউটিলিটি সার্ভিস লাইন বসানোয় নগরীতে জলপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’
সভায় বলা হয়, দীর্ঘমেয়াদি সমাধান চাইলে ড্রেনেজ সার্কেল গড়ে তুলতে হবে। অর্থাৎ সিভিল ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের সমন্বয়ে একটি বিশেষায়িত টিম গড়ে তুলতে হবে। যারা সারাবছর নগরীর জলপ্রবাহ, খাল-নালার পানি তোলার কাজ তদারক করবেন এবং মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করবেন।
সভায় একাধিক কাউন্সিলরসহ চসিকের বিভিন্ন বিভাগীয় ও শাখা প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।