খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছেন, ‘জলবায়ু প্রতিকূলতার প্রভাবে দেশে প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ফলে উপকূলীয় এলাকার হাজার হাজার মানুষ মহানগরী এলাকার সরকারি জায়গা বা ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় উদ্বাস্তু হিসেবে বসবাস করছেন। এই সব ছিন্নমূল মানুষের বসবাসের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত বাসস্থান নির্মাণ করা দরকার।’
সিটি মেয়র মঙ্গলবার দুপুরে নগর ভবনের জিআইজেড মিলনায়তনে এডিবি মিশন ভিজিট আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। কেসিসি’র তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন’ প্রকল্পের চলমান কাজ পরিদর্শনের লক্ষ্যে এবিডির একটি প্রতিনিধি দল বর্তমানে খুলনা সফর করছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প এবং খুলনা সিটি করপোরেশনের মধ্যে যৌথ পার্টনারশিপের মাধ্যমে প্রকল্পটির মাধ্যমে নগরে বসবাসরত দরিদ্র মানুষের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তারা সংগঠিতভাবে তাদের সমস্যা সমাধানের সুযোগ পেয়েছে বলে সিটি মেয়র আগত প্রতিনিধি দলকে অবহিত করেন।
সভায় সিটি মেয়র আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা জলবায়ু সংকটের বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। উন্নত দেশগুলো সহযোগিতার পরিমাণ বৃদ্ধি করলে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জীবনমান উন্নয়নে নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা সম্ভব হবে। ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের গৃহহীন প্রায় ৮ লাখ মানুষকে বিনামূল্যে ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন।’
খুলনাকে দেশের অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ও দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে উল্লেখ করে সভায় জানানো হয়, প্রায় প্রতিবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের জীবন ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ফলে নগরের বাইরের মানুষ জীবন ও জীবিকার তাগিদে নগরীতে আশ্রয় নিচ্ছে এবং জলবায়ু উদ্বাস্তুর চাপ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নগরে বসবাসরত দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নয়নে খুলনা সিটি করপোরেশন কাজ করে যাচ্ছে। তবে করপোরেশনের একার পক্ষে ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। সে কারণে জলবায়ু সহনশীল অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন অনুদান প্রদানে আরও বাজেট বরাদ্দ প্রয়োজন। সিটি মেয়র টেকসই নগর উন্নয়নে প্রকল্পটির মেয়াদ আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে মতামত ব্যক্ত করেন।
কেসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) লস্কার তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান, চিফ প্ল্যানিং অফিসার আবির উল জব্বার, সিনিয়র ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট এবং টিম লিডার স্টিভেন গোল্ডফিঞ্চ, ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট সিফায়েত উল্লাহ, টি এ কোঅর্ডিনেটর আলী ফয়সাল আব্দুল, ইন্টারনাল ডিসপ্লেসমেন্ট মনিটরিং সেন্টারের কনসালট্যান্ট ক্রিস্টেল কাজাবাত, প্রোজেক্ট ম্যানেজার যোগেশ প্রধানাং, প্রকল্পের টাউন ম্যানেজার মোহাম্মদ মোস্তফা প্রমুখ সভায় উপস্থিত ছিলেন।