বগুড়ার ধুনটে তরুণীকে ক্লিনিকে নিয়ে সিজারিয়ানের পর তার নবজাতককে লাখ টাকায় বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ওই তরুণী মঙ্গলবার রাতে ধুনট থানায় উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শাহীনসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। বুধবার সন্ধ্যায় ওই থানার ওসি সৈকত হাসান জানান, এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভুক্তভোগী ধুনট সদর ইউনিয়নের মাটিকোড়া গ্রামের মৃত আশাদুল ইসলামের মেয়ে আয়শা আকতার (১৮) মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, তিনি একই ইউনিয়নে বেলকুচি গ্রামে নানি আছিয়া বেওয়ার সঙ্গে বসবাস করছেন। এক বছর আগে ঢাকায় গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকরির সূত্রে নওগাঁর নজিপুরের সোহেলকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা বেলকুচি গ্রামে সংসার করছিলেন। কিছুদিন পর সোহেল কাজের জন্য অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তাকে রেখে ঢাকায় চলে যান। আয়শা বেলকুচি গ্রামের রমজান আলীর ছেলে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শাহীনের সম্পর্কে নাতনি। গত ২৮ নভেম্বর তাকে সন্তান প্রসবের জন্য শেরপুরের মাহবুব ক্লিনিকে নিয়ে যান শাহীন। সেখানে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ছেলেসন্তান প্রসব করেন আয়শা।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, আয়শার জ্ঞান ফেরার আগেই শাহীন এবং তার তিন সহযোগী এক লাখ টাকায় শিশুটিকে এক নিঃসন্তান পুলিশের কাছে বিক্রি করে দেন। জ্ঞান ফেরার পর তার কাছ থেকে কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে ঘটনাটি গোপন করতে হুমকি দেওয়া হয়। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে তিনি তার নবজাতককে বিক্রির কথা ফাঁস করে দেন। এ খবরে গ্রামবাসীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এতে বিএনপি নেতা শাহীন এবং তার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে বাড়িতে গিয়ে আয়শা এবং তার বৃদ্ধা নানি আছিয়াকে হুমকি দেন। অব্যাহত হুমকি-ধামকিতে তারা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে সাবেক বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম শাহীন জানান, নবজাতকের মা আয়শা আকতার তার চাচাতো বোনের নাতি হন। ক্লিনিকে অপারেশনের আগে কাগজে তিনি শুধু অভিভাবক হিসেবে স্বাক্ষর (বন্ডসই) দিয়েছেন। বাচ্চাটি বিক্রি বা টাকা লেনদেনের সঙ্গে তিনি জড়িত নন।