চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন চরাঞ্চলের ভাঙনকবলিত লোকজন। বালুখেকোদের হাত থেকে নিজেদের ভিটেমাটি রক্ষায় মেঘনা নদীর পাড়ে স্মরণকালের বিশাল এ মানববন্ধনে স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বার, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী এবং চরাঞ্চলের নারী-পুরুষসহ সর্বস্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। মঙ্গলবার (৪ জুন) সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় নিজেদের ভিটে-মাটি রক্ষার জন্য বালু উত্তোলন বন্ধ এবং বালু উত্তোলনকারী ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
ভাঙনকবলিতরা জানান, চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউপি চেয়ারম্যান দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন। প্রশাসন ও আদালত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় গত প্রায় দু বছর ধরে বালু উত্তোলন বন্ধ রাখেন। কিন্তু কিছুদিন ধরে আবারও তিনি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন শুরু করেছেন। এতে নদীভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা।
স্থানীয় নাগরিক সমাজের কয়েকজন ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বলেন, ‘আমরা চাই নদীতে তাদের বালু-সন্ত্রাস বন্ধ করে আমাদের ঘরবাড়ি রক্ষা করতে। নদীভাঙনের কবলে যারা পড়েছেন শুধু তারাই বুঝবেন এ কষ্ট কেমন। তাই বালুখেকোদের অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ করে তাদের হাত থেকে রাজরাজেশ্বরসহ চাঁদপুরকে রক্ষা করতে স্থানীয় সংসদ সদস্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, জেলা প্রশাসন, জেলা আওয়ামী লীগসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা চাই।’
এদিকে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী বলেন, ‘কারা অবৈধভাবে বালু কেটে নিচ্ছে, তা অনেকেই জানেন। এতে আমাদের ইউনিয়নের বাড়িঘর ভাঙনের কবলে পড়ে নদীck বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গতকালও তাদের বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে গেলে তারা আমাদের কয়েকজনকে বেদম মারধর করেছে। বিষয়টি আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘তারা বিভিন্ন ব্যক্তি ও গ্রুপের নাম ভাঙিয়ে দিন-রাতে বালু কাটে। কখনও আবার বলে সরকার তাদের বালু উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস আমাদের জানিয়েছে, বালু উত্তোলনে কোনও বৈধতা নেই। তাই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করে আমাদের মাতৃভূমিকে রক্ষা করার জন্য যা যা করণীয় আমরা তা ঐক্যবদ্ধভাবে করবো।’
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান রাজ্জাক চোকদার, চাঁদপুর জেলা যুবলীগের সদস্য ঢালী মো. শুক্কুর, ইউপি মেম্বার শফিক কুড়ালী, রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শরবত আলী গাজী, ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুকুম আলী সরদার ও লিটন দেওয়ান, স্থানীয় মুরুব্বি সুফিয়ান পাটোয়ারী, হাফেজ দেওয়ান, হারুন ঢালী, এরশাদ ঢালী, হানিফা ঢালী, উপজেলা যুবলীগের সদস্য শাহজালাল বন্দুকশী প্রমুখ।