মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে নেত্রকোনার প্রধান নদ-নদীগুলোর সব পয়েন্টেই ধীরগতিতে পানি বাড়ছে। এর মধ্যে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে সোমেশ্বরী, কংস ও উব্ধাখালী পানি। এ অবস্থা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকলে বন্যার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলাবাসী।
জেলার প্রধান নদ-নদীগুলোর মধ্যে সোমেশ্বরী, কংস, উব্ধাখালী ও ধনুর পাঁচটি পয়েন্টের মধ্যে চারটিতেই পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিছুটা কমছে একটি পয়েন্টে। তবে কোনও পয়েন্টেই এখনও বিপদসীমা অতিক্রম করেনি।
শনিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নেত্রকোনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী সারওয়ার জাহান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নেত্রকোনার সোমেশ্বরী নদীর পানি দুর্গাপুর পয়েন্টে, কংস নদের পানি জারিয়া পয়েন্টে, উব্ধাখালী নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে এবং ধনু নদের পানি খালিয়াজুরী পয়েন্টে বাড়ছিল। তবে পানি কিছুটা কমছিল সোমেশ্বরীর বিজয়পুর পয়েন্টে।
এর মধ্যে সোমেশ্বরীর পানি বিজয়পুর পয়েন্টে বিপদসীমার ৩.৩৯ সেন্টিমিটার, দুর্গাপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ০.৮০ সেন্টিমিটার, উব্ধাখালী নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপদসীমার ০.৩২ সেন্টিমিটার, কংস নদের পানি জারিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ০.৫৬ সেন্টিমিটার এবং ধনু নদের পানি বিপদসীমার ২.০২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কোনও পয়েন্টেই বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও সোমেশ্বরীর দুর্গাপুর পয়েন্টে, কংস নদের জারিয়া পয়েন্টে এবং উব্ধাখালী নদীর কলমাকান্দা পয়েন্টে পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান আরও বলেন, ‘এখনও বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় এসব নদ-নদীর পানি সবকটি পয়েন্টেই বিপদসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।’
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার জারিয়া জাঞ্জাইল এলাকায় ২৫০ মিলিমিটার ও দুর্গাপুর এলাকায় ১৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিলে তা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি তাদের রয়েছে এবং নদীবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের এ বিষয়ে সতর্কবার্তাসহ যথাযথ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।