চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনায় বিদেশি কোম্পানিকে যুক্ত করার পদক্ষেপ, রাখাইনের জন্য মানবিক করিডোরের উদ্যোগ, স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশকে ‘সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধচক্রে’ জড়ানোর চেষ্টা বন্ধের দাবিতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে শুরু হয়েছে রোডমার্চ। ‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম এ আয়োজন করেছে।
রোডমার্চের প্রথম দিন শেষে শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লায় পৌঁছে। টাউন হল মাঠের বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মঞ্চে করে সমাবেশের পর চট্টগ্রাম অভিমুখে রওনা হয় রোডমার্চ। এর আগে শুক্রবার (২৭ জুন) সকাল ১০টায় ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে রোড মার্চের সূচনা হয়।
শুরুতে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের শিল্পীরা 'দুর্গম গিরি কান্তার মরু', 'জনতার সংগ্রাম চলবেই' গানগুলো গেয়ে শোনান। বিকালে মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা রোডমার্চে যোগ দিতে আসেন। তাদের প্রায় সবার হাতেই দেখা যায় বন্দর ও করিডোর বিষয়ক প্ল্যাকার্ড, ব্যানার।
সমাবেশে বিভিন্ন বাম রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। কুমিল্লা টাউন হল মাঠের বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মঞ্চে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসকে উদ্দ্যেশ্য করে বলেছেন, ‘আমরা রোডমার্চ করছি নিশ্চয়ই আপনি এতক্ষণে শুনেছেন। আগামীকাল চট্টগ্রাম সমাবেশের আগেই ঘোষণা দিন, চট্টগ্রাম বন্দর কাউকে দেওয়া হবে না, করিডোর কাউকে দেওয়া হবে না– এর সুস্পষ্ট ঘোষণা দিন। আজকে বন্দর রক্ষার জন্য যে সংগ্রাম, করিডোর না দেওয়ার বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম আমরা করছি, আমরা বিজয়ী হবো। কারণ এ দেশের সাধারণ মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে।’
রোডমার্চে অন্যদের মধ্যে অংশগ্রহণ করেন কমিউনিস্ট পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি রুহিন হোসেন প্রিন্স, তবে তিনি কোনও বক্তব্য রাখেননি।
এ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন– বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশ বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদ মার্ক্সবাদীর সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশারেফা মিশু, গণমুক্তি ইউনিয়নের আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন নাসু, বাংলাদেশ সাম্যবাদী আন্দোলনের পাঠচক্র ফোরামের সমন্বয়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চ সভাপতি মাসুদ খান, বাংলাদেশ সোশালিস্ট পার্টির সেক্রেটারি শহীদুল ইসলাম, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের সদস্য মহিউদ্দিন চৌধুরী লিটন, জাতীয় গণফ্রন্টের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক রজত হুদা, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী, বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. মুশতাক হোসেন, গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ- বিসিএল, গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য নেতৃবৃন্দ। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন– বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোমেন, সচেতন রাজনৈতিক ফোরামের কুমিল্লার সমন্বয়ক শেখ আবদুল মান্নান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কুমিল্লা জেলার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড সুজাত আলী৷ সঞ্চালনা করেন কুমিল্লার রোডমার্চ অনুষ্ঠানের সদস্য সচিব খায়রুল আনাম রায়হান।